জীবন যাত্রা

পূজায় ছেলেদের পোশাক

পূজায় ছেলেদের পোশাক

শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রাণের উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। তাই প্রস্তুতিও এখন থেকে শুরু হয়ে যাওয়ার কথা। সারাবছর নতুন পোশাক কেনার পরিমাণ কম হলেও এই দিনগুলোর জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নিজের ও পরিবারের জন্য নতুন পোশাক কেনেন। কিন্তু এখন আকাশটা ঝলমলে রোদ আবার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝুমবৃষ্টি শুরু হয় এবং কিছুক্ষণ পরই বাড়ছে গরম, এর সঙ্গে মাথার ওপর করা রোদ। দুর্গাপূজার সব কিছুতেই যেহেতু রঙের ছড়াছড়ি, সেহেতু ছেলেদের পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রেও রঙটা বেশি প্রাধান্য পেলেও এ আবহাওয়ায় অবশ্যই কাপড়ের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

রঙ বাংলাদেশের কর্ণধার ও ফ্যাশন ডিজাইনার সৌমিক দাস বলেন, দুর্গাপূজা যেহেতু বাংলার সংস্কৃতির একটি অংশ, সেহেতু সারাবছর পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলেও দুর্গাপূজায় মানুষ ঐতিহ্যবাহী পোশাকগুলো পরতেই বেশি ভালোবাসে। তাই পূজায় ছেলেদের পোশাক আগে থেকেই ঠিক করতে হবে। যেহেতু পূজার সকালটা শুরু হবে পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে এবং সন্ধ্যায় ম-পে ম-পে ঘোরা, সঙ্গে থাকেন বন্ধু ও পরিবারের অন্যান্য সদস্য। তিনি বলেন, সকালে পাঞ্জাবিটাও হওয়া চাই উজ্জ্বল রঙের ও পূজার মোটিফে। পাঞ্জাবির রঙ হতে হবে উজ্জ্বল।

এই যেমন কমলা, লাল, টিয়া রঙের। পাঞ্জাবির কাপড় থাকবে সুতির। কারণ এই গরমে পাতলা সুতিকাপড়ের পাঞ্জাবিই দিতে পারে আরাম। আকাশ ঝলমলে থাকলে রঙিন পাঞ্জাবিতে ছেলেদের বেশি ভালো লাগে। রাতেও তো থাকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা কিংবা বিভিন্ন অনুষ্ঠান। তখন সিল্কের পাঞ্জাবি বেশি ভালো লাগবে। পরিবার, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যখন ছবি কিংবা সেলফি তোলার পর দেখবেন রাতে সিল্ককের পাঞ্জাবি বেশি ভালো লাগছে।

এক রঙের সাদামাটা পাঞ্জাবি পরেও বাজিমাত করতে পারেন ওপরে একটি প্রিন্স কোট পরে। সুতির একরঙা ও প্রিন্ট তো আছেই, মখমলের তৈরি প্রিন্স কোটও এবার চলছে বেশ। এ ছাড়া স্লিম ফিট পাঞ্জাবিই বেশি ট্রেন্ডি এই সময়। ধুতি-পাঞ্জাবি সেকেলে পোশাক হলেও এ পোশাকই এখনকার তরুণদের কাছে বেশি ফ্যাশনেবল। সাদা রঙ সব সময়ই পবিত্রতার প্রতীক। তাই সকালে অঞ্জলি দিতে সাদা রঙের পোশাকের বিকল্প হয় না বলে তিনি জানান। তবে কম বয়সীরা লাল, সবুজ, হালকা নীল, গেরুয়া রঙও বাছাই করতে পারে।

পূজা যেহেতু পাঁচ দিনের, সেহেতু পোশাকেও থাকবে ভিন্নতা। গরম যেহেতু বেশি, সেহেতু শার্ট আর ফতুয়া ছেলেরা বেশি পরে। টাইডাই, ব্লক-বাটিকের নকশা করা ছেলেদের ফতুয়া ও শার্টও মিলবে। রঙ হিসেবে সেখানে ব্যবহার করা হয়েছে নানা উজ্জ্বল রঙ। আবার সাদা, হালকা নীল, হলদে আভার নরম রঙের পোশাকও মিলবে ছেলেদের পূজার সংগ্রহে। সন্ধ্যায় উজ্জ্বল রঙের পরিবর্তে একটু গাঢ়ই বেশি মানাবে।

তবে এ গরমে সবাই একটু ঢিলাঢালা পোশাক চান। তাই আরামদায়ক হবে যেগুলো, ওইসব পোশাকই পরা উচিত। আবার অনেকে শার্ট পরতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তবে পূজার মধ্যে শার্ট পরলেও রঙের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কমলা, আকাশি, হলুদ, লাল রঙের শার্ট পূজার মধ্যে ছেলেদের ফ্যাশনে ঐতিহ্যের ছোঁয়া আনে।

ফ্যাশনে ছেলেদের পোশাক নিয়ে তো কম নিরীক্ষা হচ্ছে না। প্রতিবছর কিছু না কিছু যুক্ত হচ্ছে। এই বছর খুব ভারী কাপড়ের প্যান্ট না পরে, সেমিগ্যাবার্ডিন ফ্যাশন এসেছে। অনেকটা সত্তরের দশকের ছেলেদের ফ্যাশন আর স্টাইল। সত্তরের দশকে বনেদি পরিবারের পুরুষদের প্রধান আকর্ষণ ছিল তৈরি করে নেওয়া প্যান্টে। সাধারণত ফরমাল স্টাইলের এই প্যান্ট গ্যাবার্ডিন কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। যখন শার্ট কিংবা টি-শার্ট পরা হয়, তখন এই প্যান্টগুলো পরা যেতে পারে। তবে ছেলেদের প্যান্টের সাধারণ রঙ থেকে বের হয়ে শেড রঙ বেছে নেওয়া হয়েছে।

লিখেছেন : এএসএম সাদ

আরও পড়ুন ::

Back to top button