ডাইনোসর বিলুপ্ত না হলে কী ঘটতো
ডাইনোসর বলতে জনপ্রিয় ধারণায় একটি অধুনা অবলুপ্ত, সাধারণত বৃহদাকার মেরুদণ্ডী প্রাণীগোষ্ঠীকে বোঝায়। এরা পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের প্রাগৈতিহাসিক অধিবাসী এবং বৈজ্ঞানিকদের ধারণা এই প্রভাবশালী প্রায় ১৬ কোটি বছর ধরে পৃথিবীতে রাজত্ব করেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, আনুমানিক ২৩ কোটি বছর পূর্বে প্রথমে ডায়নোসরের আবির্ভাব হয়েছিল।
ক্রিটেশিয়াস যুগের শেষ দিকে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি বছর আগে এক মহাপ্রলয়ে বিলুপ্ত হয়ে যায় ডায়নোসর। ডায়নোসরদের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার অনেক অনেক বছর পর পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ এখন মানুষের হাতে।
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের একদল বিজ্ঞানী ঐ সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে বিপর্যয় না ঘটলে কী হতে পারতো সেসব বিষয় নিয়ে নতুন এক দিগন্ত খোঁজার চেষ্টা করছেন। তাদের মতে, যদি ঐ বিপর্যয় শুধুমাত্র আটলান্টিক মহাসাগরেই সীমাবদ্ধ থাকতো তাহলে হয়তো সব ডায়নোসর বিলুপ্ত হতো না। আজো পৃথিবীর বুকে টিকে থাকতো ডায়নোসর। কিন্তু ডায়নোসর টিকে থাকলে মানুষ কি আদৌ আজকেই এই অবস্থায় আসতে পারতো কিনা তা নিয়েই তারা গবেষণা করছেন। অনুমান নির্ভর ঐ গবেষণায় তারা অনুমান করার চেষ্টা করছেন এখন ডায়নোসর থাকলে তার বিবর্তন কোন পর্যায়ে থাকতো, মানুষের নিয়ন্ত্রণে ডায়নোসর থাকতো নাকি ডায়নোসরের অধীনে মানুষ।
তবে কোনো কোনো গবেষক ডায়নোসর সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, যদি ঐ সময় ঐ মহাবিপর্যয় নাও ঘটতো তাহলেও আজ পৃথিবীর বুকে ডায়নোসরের কোন অস্তিত্ব থাকতো না। কারণ ডায়নোসর যে তাপমাত্রার মধ্যে পৃথিবীতে টিকে ছিল এখন সেই তুলনায় পৃথিবীর তাপমাত্রা অনেক বেশি। তিনি মনে করেন, স্তন্যপায়ী প্রাণিদের বুদ্ধি এবং দক্ষতার কাছে হার মানতো ডায়নোসররা।
তবে মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটির গবেষক টম হল্টসের মতে, ঐ সময়ে ডায়নোসররা বিলুপ্ত না হলে আজো পৃথিবীর এই তাপমাত্রাতে ঠিকই টিকে থাকার জন্য নিজেদের অভিযোজিত করে নিত তারা। ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গের গবেষক স্টিফেন ব্রুস্যাটেও টমের সাথে একমত পোষণ করেছেন। তার মতে, ডায়নোসরদের অভিযোজন ক্ষমতা খুবই ভালো। একারণেই তারা ১৬ কোটি বছর ধরে পৃথিবীতে রাজত্ব করতে পেরেছিল। তাদের মতে, ঐ বিপর্যয় না হলে এখনো হয়তো এই পৃথিবীর রাজত্ব ডায়নোসরদের হাতেই থাকতো।