স্বাস্থ্য

সব রোগের সমাধান কালোজিরা

সব রোগের সমাধান কালোজিরা

দারুণ উপকারী মশলা কালোজিরা। তাই একে খাদ্য না বলে পথ্য বলাটাই ঠিক। জ্বর, কফ, গায়ের ব্যথা দূর করতে কালোজিরা একটা দারুণ ঘরোয়া ওষুধ। এতে রয়েছে খিদে বাড়ানোর উপাদান। অন্ত্রের জীবাণুকে নাশ করে শরীরের জমে থাকা গ্যাসকেও দূর করে দিতে কালোজিরার বিকল্প নেই। যারা মোটা হতে চান, তাদের জন্য কালোজিরা একটা ভালো পথ্য।

বয়স হলে হাত-পা ফুলে যাওয়াটা একটা বড় সমস্যা। একদিকে প্রস্টেট জনিত সমস্যা সেই সঙ্গে কিডনি জনিত রোগের কম-বেশি বয়স্কদের পা ফোলা সমস্যায় ভোগেন। কালোজিরা এই সমস্যা রুখতে পারে। কাঁচা কালোজিরা পিষে খেলে মায়ের দুধ বাড়ে।

কালোজিরা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এজেন্ট। এটি সহজেই শরীরের রোগ-জীবাণু ধ্বংস করে দিতে পারে। এই অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদানের জন্য দেহের ঘা, ফোঁড়া কম সময়েই সারে। শাকের সঙ্গে কালোজিরা খাওয়াই রীতি। এতে শিশুদের ক্ষেত্রে মেধার বিকাশ ঘটে। কালজিরা আদপে অ্যান্টিসেপটিক বলেও অনেক ভেষজবিদ মনে করেন। দাঁতে ব্যথা হলে হালকা গরম জলে কালোজিরা দিয়ে কুলকুচু করলে ব্যথা কমে। জিহ্বা, টাকরা বা মাড়িতে থাকা খাদ্যের জীবাণু সহজেই মরে যায়। ফলে মুখে আর দুর্গন্ধ হয় না।

তবে হ্যাঁ, সবটাই করতে পরিমিত পর্যায়ে। কেননা খুব বেশি কালোজিরা খেলে হিতের চেয়ে বিপরীত হতে পারে। প্রথমে দেখে নেবেন আপনি বা আপনার পরিজনের কালোজিরা সহজে হজম হচ্ছে কিনা। অনেকেই পারেন না। যা সহজে কালোজিরা হজম করতে পারেন না তারা খাবেন না।

কালোজিরা ক্রিমি দূর করতেও পারে। তারুণ্য ধরে রাখতে মধ্যপ্রাচ্যে কালোজিরা খাওয়াটা দীর্ঘদিনের রীতি। কাজ করার শক্তিকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে এই কালোজিরা। সরাসরি খাওয়ার থেকে প্রথম প্রথম ভাত বা রুটির সঙ্গে কালোজিরা খাওয়াটা অভ্যাস করুন। যদি আপনার সহ্য হয়, তাহলে অবশ্য আপনাকে স্বাস্থ্যের সহায়ক হবে একই কমদামি মশলা।

কালোজিরা আয়ুর্বেদীয় , ইউনানী, কবিরাজী ও লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহার হয়। মশলা হিসাবে ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে, এটি পাঁচ ফোড়নের একটি উপাদান। রসুল (সাঃ) বলেছেন, “একমাত্র মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের ঔষুধ এই কালোজিরা।’’

প্রায় দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষ খাবারের সঙ্গে ‘কালোজিরা’ গ্রহণ করে আসছে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানতে পেরেছেন যে কালোজিরার সব গুণ লুকিয়ে আছে এর তেলে।

কালোজিরার তেলও আমাদের শরীরের জন্য নানাভাবে উপকারি। কালোজিরার তেলে ১০০টিরও বেশি উপযোগী উপাদান আছে। এতে আছে প্রায় ২১ শতাংশ আমিষ, ৩৮ শতাংশ শর্করা এবং ৩৫ শতাংশ ভেষজ তেল ও চর্বি। কালোজিরার অন্যতম উপাদানের মধ্যে আছে নাইজেলোন, থাইমোকিনোন ও স্থায়ী তেল। এতে আরও আছে আমিষ, শর্করা ও প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিডসহ নানা উপাদান। পাশাপাশি কালোজিরার তেলে আছে লিনোলিক এসিড, অলিক এসিড, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি২, নিয়াসিন ও ভিটামিন-সি। শরীরের রোগ প্রতিরোধে কালোজিরার মতো এত সহজে এত কার্যকর আর কোনো প্রাকৃতিক উপাদান আছে বলে জানা যায়নি। কালোজিরার তেলের উপকার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ইনসুলিন রোধ হ্রাস (এভাবে ডায়াবেটিস কমিয়ে রাখা), কাশি ও হাঁপানির উপশম, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, হৃজ্জনিত সমস্যার আশঙ্কা হ্রাস, চুল পড়া হ্রাস, ত্বকের সুস্বাস্থ্য, মায়ের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি, আর্থাইটিস ও মাংসপেশির ব্যথা কমাতে কালোজিরার তেল উপযোগী। কালোজিরার তেল গর্ভাবস্থায় গ্রহণ করতে হয় না।

আবার যাদের শরীরে জল জমে হাত-পা ফুলে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে, তাদের জল জমতে বাধা দেয়। কালোজিরা শরীরের জন্য খুব জরুরি।

আরও পড়ুন ::

Back to top button