স্বাস্থ্য

ত্বকের সবচাইতে বাজে সমস্যা ব্রণ কেন হয় ও কী করবেন?

ত্বকের সবচাইতে বাজে সমস্যা ব্রণ কেন হয় ও কী করবেন?

যে রোগগুলো আমাদের সৌন্দর্য একেবারে বিনাশ করে দেয়, সেগুলোর মাঝে এক নম্বর হচ্ছে ব্রণ। অনেকে একে রোগ হিসাবে না ধরলেও ত্বকের এই অসুখটি নিয়ে ভুগছেন পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য মানুষ। সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে এ রোগটা শুরু হয়। ১৮ থেকে ২০ বছরের ছেলেমেয়েদের মধ্যে এ রোগটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। অনেকেই অবশ্য বহু বছর ভোগে। সাধারণত ২০ বছর বয়সের পর রোগটা কমে আসে। তবে কিছু মেয়েদের ক্ষেত্রে ৩০ বছর বয়স পর্যন্তও এ রোগ দেখা যায়।

ব্রণ যে শুধু প্রথমে ভোগায়, তা নয়। সেরে যাবার পরেও মুখে রেখে যায় বিচ্ছিরি দাগ। অনেককেই এই দাগ সারা জীবন বহন করতে হয়। ব্রণ এত কমন একটা রোগ হয়ে গিয়েছে যে অনেকে আলাদা করে এর চিকিৎসা করানোর প্রয়োজনই বোধ করেন না।

কেন হয়?
ব্রণ বা আকনে আমাদের শরীরের ত্বকের ফলিকলের এক প্রকার দীর্ঘমেয়াদী রোগ। মুখমন্ডল, গলা, বুকে ও পিঠের উপরিভাগ আর হাতের উপরিভাগে এই রোগটা হয়।

এসব জায়গায় ছোট ছোট দানা, ছোট ছোট ফোড়া, সিস্ট, এমনকি নোডিউল (Nodule) হতে পারে। এ রোগটা মুখমন্ডলেই সাধারণত বেশি হয়। ব্রণ বেশিরভাগ সময়ে গালে, নাকে কপালে আর থুতনিতে হয়ে থাকে।

পিউবার্টি বা বয়ঃসন্ধিকালে হরমোন টেস্ট্রোরেন আর প্রোজেস্ট্রোরেনের প্রভাবে ত্বকের সিবেসিয়াস গ্রন্থি বেশি করে তেল নিঃসরণ শুরু করে। তবে এই তেল বের হয়ে আসতে পারে না। কারণ তেল বেরিয়ে আসার পথটি ক্রটিযুক্ত থাকে। তাই তেল গ্রন্থির ভিতর জমতে শুরু করে। জমতে জমতে এক সময় গ্রন্থিটা ফেটে যায়। ফলে তেল আশপাশের টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে। তখন ব্যাকটেরিয়া তেলকে ভেঙে টিস্যুতে ফ্যাটি এসিড তৈরী করে। এই ফ্যাটি এসিড ত্বকের ভেতর সৃষ্টি করে প্রদাহ। এর ফলে চামড়ার মধ্যে দানার সৃষ্টি হয়। যা ব্রণ নামে পরিচিত।

কী করবেন ব্রণ প্রতিরোধে?

ব্রণ প্রতিরোধে সর্বপ্রথম করণীয় হচ্ছে মুখের তৈলাক্ততা কমাতে হবে। তৈলাক্ততা কমানোর জন্য ভালো ফেসওয়াশ দিয়ে দিনে কয়েকবার মুখ ধুতে হবে।

শুধু মুখ ঢুলে হবে না, যে তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছবেন সেটাও বারবার ধুয়ে পরিস্কার রাখতে হবে।

বেশি করে অ্যান্টি অক্সিডেনট সমৃদ্ধ শাক-সব্জি ও ফলমূল খেতে হবে। এবং তৈলাক্ত, ঝাল, ভাজাপোড়া খাবারসহ চকলেট, আইসক্রিম ও অন্যান্য ফাস্টফুড খাওয়া কমাতে হবে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ব্রণকে রাখবে অনেকটাই দূরে।

ব্রণ একবার হয়ে গেলে খোঁটা যাবে না। খুঁটলে গর্ত হয়ে যাবে। তাছাড়া হাত আর নখ থেকে জীবাণু গিয়ে ব্রণকে আক্রান্ত করে। ফলে ব্রণটা ফোঁড়ায় রূপান্তরিত হয়। মুখে গর্ত তৈরী করে। তাই হাত দিয়ে বার বার ব্রণ স্পর্শ করা যাবে না বা গালানো যাবে না।

অনেকে ফর্সা হওয়ার জন্য আর ব্রণের প্রতিকার হিসেবে স্টেরয়েড অয়েনমেন্ট ব্যবহার করে। এটা কোনোভাবেই করা যাবে না। এতে চামড়ার প্রচন্ড ক্ষতি হয়। স্টেরয়েড অয়েনমেন্ট ব্যবহার করার জন্য উল্টো ব্রণের সৃষ্টি হতে পারে।

ব্রণের জন্য যে দাগ গর্ত হয়, তা দূর করার ব্যবস্থা এখন দেশেই রয়েছে। তার মধ্যে পাঞ্চ স্কাররিমুভার, স্কার এলিভেশন, ডার্মাব্রেশন পদ্ধতিতে গর্ত আর দাগ দূর করে মুখের ত্বক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া যাচ্ছে।

ব্রন পেকে গেলে বা বেশী হয়ে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। বাসায় কোন হাতুড়ে পদ্ধতি চেষ্টা একদমই করা যাবে না।

আরও পড়ুন ::

Back to top button