জীবন যাত্রা

আজীবন বন্ধুত্বের ৫ সূত্র

আজীবন বন্ধুত্বের ৫ সূত্র

ছেলেবেলা থেকে কতজনের সাথেই না আমাদের বন্ধুত্ব হয়। আমরা যত বড় হতে থাকি তত আমাদের সম্পর্কগুলো একটা মানে পায়। শুধু একসাথে খেলাধূলা করা বা ঘুরে বেড়ানোই নয়, বন্ধুকে আমরা বলি আমাদের ভালো থাকার কথা, মনখারাপের কথা। আস্তে আস্তে গড়ে ওঠে কত না স্মৃতি, কত গল্প। তবু কখনো কখনো এই কাছের বন্ধুরাই দূরের হয়ে যায়। বন্ধুত্বকে চিরন্তন রাখে এই ৫টি নীতি। যা মেনে না চললে বন্ধুত্ব স্থায়ী হয় না।

বিশ্বাস-
শুভ সহজে কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না। তার পরিবার বেশ রক্ষণশীল। সে সহজে মেশেও না কারও সাথে। তার একমাত্র বন্ধু মিনহাজ। মিনহাজ জানে শুভর সব কথা। শুভ তাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে। অনেকেই তাদের বন্ধুত্ব ভাঙ্গার চেষ্টা করেছে। ভার্সিটির বন্ধুরা মেনেই নিতে পারতো না এই দুজনের ঘনিষ্ঠতা। একসাথে পড়াশোনা, ভাল ফলাফল সব কিছুই ছিল হিংসার কারণ।

তাই অনেকেই শুভকে এসে মিনহাজের নামে বানিয়ে বানিয়ে অনেক কিছু বলত। মিনহাজেরও কান ভারি করতে চাইতো অনেকে। কিন্তু নিজেদের মধ্যকার বিশ্বাস কখনো তাদের বন্ধুত্বকে নষ্ট করতে পারে নি। বন্ধুত্বে বিশ্বাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিশ্রুতি-
নিপা আর তানিয়া অনেকদিনের বন্ধু। সেই ছোটবেলা থেকে তাদের গলায় গলায় ভাব। দুজনেই জানে দুজনের সব কথা। যে কোন ঘটনা ঘটলেই নিপা এসে বলে তানিয়াকে। তানিয়ারও শান্তি হয় না নিপাকে না বলে। বড় হতে হতে তারা দুজনে আলাদা হয়ে যায়। নিপারা চলে যায় অন্য এলাকায়। স্কুলও বদলে ফেলে। তবু তাদের দেখা হয় মাঝে মাঝে। দেখা হলেই আড্ডা দিতে দিতে কখন যে পেরিয়ে যায় সময় কারও খেয়াল থাকে না।

কিন্তু তাদের বন্ধুত্বে চিড় ধরে তখন যখন নিপা তার আরেক বন্ধুর কাছে শুনতে পায় নিজের এমন একটি ঘটনার কথা যা সে শুধু তানিয়াকেই বলেছিল। তানিয়া তাদের একান্ত কথাগুলো অন্যের কাছে শেয়ার করছে এটা নিপাকে খুবই আহত করে। নিপা আর কখনোই তার মনের কথা তানিয়াকে খুলে বলতে পারে না। কখনোই প্রতিশ্রুতি ভাঙবেন না।

বিনিময়-
মন খারাপ হলেই বন্ধুকে চাই। বিপদে পড়লেই বন্ধুকে খুঁজি। অথচ বন্ধু যখন খোঁজ করে তখন থাকি মহাব্যস্ত। এই সম্পর্ক কখনোই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। কারণ আপনার স্বার্থপরতা এক সময় তার কাছে ধরা পড়বে এবং সে আপনেকে এড়িয়ে চলতে শুরু করবে। তাই বন্ধুর কাছ থেকে শুধু নেবেন না। তার প্রয়োজনে পাশে দাঁড়ান। নিঃস্বার্থ সম্পর্কের আরেক নাম বন্ধুত্ব, এখানে স্বার্থপরতার কোন স্থান নেই।

ঈর্ষার নীতি-
আপনার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুটি জড়িয়ে পড়েছে প্রেমের সম্পর্কে? আপনাকে আর সময় দিতে পারছে না আগের মত? বন্ধুকে বোঝার চেষ্টা করুন। ঈর্ষান্বিত হয়ে তার সম্পর্কটার সৌন্দর্য্য নষ্ট করে দেবেন না যেন। কারণ, বন্ধুত্ব মানেই একসাথে অনেক সময় কাটানো নয়। আপনার বন্ধুর কাছে সবসময়ই আপনি একই রকম গুরুত্বপূর্ণ। বন্ধুত্বে ঈর্ষা খুবই ক্ষতিকর।

অপব্যবহার-
আপনার বন্ধু খুব ভাল অবস্থায় আছেন? ভাল চাকরি করেন? তার রেফারেন্স তার অনুমতি নিয়েই ব্যবহার করুন। বন্ধুর সাথে ঝগড়া? একেবারে শত্রুতাই হয়ে গেল। বন্ধুত্বের বিশ্বাসের নীতি থেকে বেড়িয়ে আসবেন না। যতই শত্রুতা হোক না কেন, তার যেসব দূর্বলতার কথা আপনি জানেন তার অপব্যবহার করবেন না। সম্পর্কের শ্রদ্ধা বজায় রাখুন যে কোন পরিস্থিতিতে।

আরও পড়ুন ::

Back to top button