বিচিত্রতা

রহস্যে ঘেরা ভয়ঙ্কর পুতুল দ্বীপ!

রহস্যে ঘেরা ভয়ঙ্কর পুতুল দ্বীপ!

পুতুলের কথা মনে হলেই ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনের আয়নায় উঁকি দেয়। কেননা ছোটবেলায় সবার প্রিয় খেলনার মধ্যে একটি খেলনা ছিল পুতুল! কিন্তু সেই পুতুল শিশুদের মনে আনন্দ দিত এবং খেলাধুলায় সময় কাটানোর একটি পথ দেখিয়ে দিত। এ কারণে ছোটবেলায় পুতুল হয়ে উঠতে শিশুদের চিত্তবিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। যুগের পরিবর্তনের সাথে পুতুলেও পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু যুগ পরিবর্তন হলেও কিন্তু পুতুলের কদর কমেনি একটুও। তাই এ কথা বলতে বাকি থাকে না যে পুতুল শিশুদের মনোরঞ্জনের খুবই উপযোগী। কিন্তু আজকে যেই পুতুলের কথা বলবো সেটি ভয়ঙ্করের পাশাপাশি অনেকটা রহস্যময়ও।

মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটি থেকে ১৭ মাইল দক্ষিণে জোকিমিলকো জেলায় অবস্থিত একটি ভয়ঙ্কর দ্বীপ। নাম ‘পুতুল দ্বীপ’। এ দ্বীপ নিয়ে রয়েছে এক রহস্যময় গল্প। ঠিক ঘটনাটি প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ বছরের আগের হবে।

দ্বীপটি ছিল শীতল ও অন্ধকারাচ্ছন্ন। তিন মেক্সিকান শিশু এই দ্বীপে পুতুল নিয়ে খেলা করছিল। খেলাচ্ছলে তারা পুতুলের বিয়ে দেয়। খেলাকালীন সময়ে হঠাৎ একটি শিশু উধাও হয়ে যায়। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। অনেক খোঁজার পর পাশের একটি খালে সেই শিশুটির মৃহদেহ পাওয়া যায়। সেই থেকে সাধারণ মানুষের কাছে এই দ্বীপটি হয়ে ওঠে ভয়ঙ্কর এক দ্বীপ এবং লোকমুখে কালক্রমে প্রচলিত হয়ে আসছে নানা কাহিনী। মেক্সিকোর অনেক সাহসী বীরেরও বুক কেঁপে ওঠে এই দ্বীপটিতে গেলে।

আশ্চর্য এই দ্বীপে গাছের ডালে ঝুলছে পুতুল, ছোট পরিত্যক্ত ঘরের দেয়ালে ঝুলছে পুতুল। যেদিকে চোখ যায় সেদিকে শুধু পুতুল আর পুতুল। এই নির্জন দ্বীপে এত পুতুল এলো কোত্থেকে, সেটা কেউই পরিষ্কার করে জানে না। স্থানীয়দের ভাষায় দ্বীপটির নাম ইলসা ডে লাস মিউনিকাস বা পুতুলের দ্বীপ। তবে নিজে থেকে এই পুতুলগুলো দ্বীপে আসেনি। ডন জুলিয়ান সানতানা নামের এক যাজক ১৯৫০ সালের দিকে এই দ্বীপটিকে তপস্যা করার জন্য বেছে নেন। তার কাছে নাকি মৃত শিশুটির আত্মা আবদার করেছিলো যে, অনেক পুতুল এনে দ্বীপের চারপাশে টাঙিয়ে দেয়ার জন্য।

তবে যেমন তেমন পুতুল নয়। বীভৎস সব পুতুল চেয়ে বসে শিশুটির আত্মা যেগুলো দেখলে মনে হবে তারা মানুষের নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছে। ওই আত্মার অনুরোধেই জুলিয়ান তার আশ্রমে চাষ করা সবজির বিনিময়ে মানুষের কাছ থেকে নষ্ট পুতুল সংগ্রহ করতে থাকেন। নষ্ট পুতুল এনে দ্বীপের চারপাশে টাঙিয়ে দিলে নাকি শিশুটির আত্মা খুশি হতো। এভাবেই এই দ্বীপটি গড়ে ওঠে পুতুলের দ্বীপ হিসেবে।

মানুষের মধ্যে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা দূর করার জন্য মেক্সিকান সরকার ১৯৯০ সালে এই দ্বীপটিকে ‘ন্যাশনাল হেরিটেজ’ ঘোষণা করে দ্বীপটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে পর্যটন অঞ্চল বানানোর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু পর্যটকরা কদাকার পুতুল দেখে রাতে দুঃস্বপ্ন দেখেন এই অজুহাতে এখানে আসতে ভয় পান। সারা মৌসুমে ২০-৩০ জনের বেশি পর্যটক এই দ্বীপে আসেন না।

আরও পড়ুন ::

Back to top button