জানা-অজানা

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

পৃথিবীতে আজও এমন বেশ কিছু রীতি বিভিন্ন মানবগোষ্ঠীর মধ্যে প্রচলিত রয়েছে, যা সভ্য সমাজে বসে বিশ্বাস করা কঠিন। এইসব রীতি শুধু প্রাচীন নয়, সভ্য সমাজের দৃষ্টিকোণ থেকে বহুলাংশে ভয়াবহ, এবং অমানবিকও।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

কোবরা গোল্ড:
প্রতি বছর থাইল্যান্ড, আমেরিকা, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, সাউথ কোরিয়া, মালেশিয়ার মতো দেশগুলি থেকে সৈন্যরা থাইল্যান্ডে যান একটি ১১ দিন ব্যাপী মিলিটারি এক্সারসাইজে অংশগ্রহণ করতে। এই যৌথ সেনা মহড়ার নাম কোবরা গোল্ড।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

এই মহড়ায় সেনাদের শেখানো হয় কীভাবে চরম প্রতিকূল অবস্থাতেও বেঁচে থাকা যায়। তারই অংশ হিসেবে বিষাক্ত কেউটে সাপ মেরে তার রক্তপান, জ্যান্ত মুরগির মাথা চিবিয়ে খাওয়া কিংবা কাঁকড়া বিছে খাওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

মৃতদেহের সঙ্গে বসবাস:
থাইল্যান্ডের তোরাজা উপজাতির মানুষরা বছরে একবার করে কবরস্থ আত্মীয়দের মৃতদেহ তুলে আনেন কবর থেকে।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

মৃতদেহগুলি পরিস্কার করে নতুন পোশাকে সজ্জিত করা হয়। তারপর সুসজ্জিত মৃতদেহগুলিকে নিয়ে চলে শোভাযাত্রা। তোলা হয় মৃতদেহের সঙ্গে সেলফিও। তারপর পুনরায় তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় কবরে। তোরাজা উপজাতির মানুষদের বিশ্বাস, এমনটা করলে খুশি হয় মৃত প্রিয়জনের আত্মা।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

নরমাংস ভক্ষণ:
পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে নরমাংস ভক্ষণ আইনত নিষিদ্ধ হলেও ইন্দোনেশিয়ান নিউ গিনিতে বসবাসরত কোরোওয়াই উপজাতির মধ্যে এখনও মানুষের মাংস খাওয়ার রীতি রয়ে গিয়েছে। এরা তাদের সমাজভুক্ত ওঝাদের মাংস খেয়ে থাকে। ওঝার মাথার ঘিলুটাই সবার আগে খাওয়ার রীতি রয়েছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

এছাড়াও অ্যামাজনের ইয়োনোমামি উপজাতির মধ্যেও নরমাংস খাওয়ার রীতি প্রচলিত। এরা মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে হাড়গুলি বার করে শুকিয়ে নেয়। মৃত্যুর ৪৫ দিন পরে শুকনো হাড় গুঁড়ো করে কলার স্যুপের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়। মৃত্যুর এক বছর পরে সংরক্ষিত মৃতদেহের মাংস পুড়িয়ে সেই ভস্ম সেবন করে এরা। ইয়োনোমামিদের বিশ্বাস, এমনটা করলে মৃত ব্যক্তির আত্মার স্বর্গলাভের পথ প্রশস্ত হয়।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

ভালুক পুজো:
জাপান ও রাশিয়ায় বসবাসরত আইনু উপজাতির মানুষদের বিশ্বাস, ভালুকরা হল মূর্ত ঈশ্বর এবং ভালুক বলি দিলে সমগ্র মানবজাতির মঙ্গল হয়। সেই কারণে এরা প্রতি বছর সদ্য মা হওয়া কোনও ভালুককে বলি দিয়ে তার ছানাটিকে বন্দি করে ফেলে।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

এক বছর পরে সেই ভালুক ছানা বড় হয়ে উঠলে তাকে খুঁচিয়ে বা গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর আইনুরা সেই ভালুকের রক্তপান করে ও মাংস খায়। সবশেষে মৃত ভালুকটির মাথার খুলি একটি বর্শার উপরে বসিয়ে পুজো করা হয়।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

আঙুল কেটে বাদ দেওয়া:
পাপুয়া, ইন্দোনেশিয়ায় বসবাসরত দানি নামের আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যে মহিলাদের আঙুল কেটে বাদ দেওয়ার একটি রীতি প্রচলিত রয়েছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

স্বামী বা অন্য কোনও নিকট জনের মৃত্যুর শোকের চিহ্ন হিসেবে মহিলাদের আঙুলের ঊর্ধ্বাংশ কেটে বাদ দেওয়া হয়। মনে করা হয়, নিজের প্রিয়জনকে এই অমানুষিক কৃচ্ছ্রসাধন করতে দেখে মৃতজনের আত্মা শান্তি লাভ করবে। আঙুল কাটার সময়ে আঙুলের মাঝ বরাবর একটি সুতো শক্ত করে বেঁধে দেওয়া হয়। তারপর আঙুলের উপরের অংশটি কেটে কাটা আঙুলের মুখটি আগুনে পোড়ানো হয়। এর ফলে কাটা ঘা দ্রুত শুকোয় বলে মনে করা হয়।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

জ্বলন্ত কয়লার উপর দিয়ে হাঁটা:
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতিতে জ্বলন্ত কয়লার উপর দিয়ে খালি পায়ে হেঁটে যাওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

কোনও সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করা হয়, এমনটা করলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে মেলে নিষ্কৃতি। তেমনই কোনও সংস্কৃতিতে আবার নববিবাহিত পত্নীকে তাঁর স্বামী কোলে নিয়ে জ্বলন্ত কয়লার উপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে তোলেন। মনে করা হয়, এমন‌টা করলে বিবাহিত মেয়েটির প্রসবকালীন জটিলতা হ্রাস পায়।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

এক্সোরসিজম:
খ্রিষ্ট ধর্মের বিভিন্ন শাখার অনুসারীদের মধ্যে এই বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে যে, দুষ্ট আত্মা বা প্রেত মানুষের শরীরে প্রবেশ করে তাদের শরীরকে নিজেদের ইচ্ছে মতো চালনা করতে পারে। সেই সময়েই ধর্ম যাজকরা এক্সোরসিজমের মাধ্যমে সেই দুষ্ট আত্মাকে বিতাড়িত করেন।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

ক্যাথোলিক যাজকরা এক্সোরসিজমের সময়ে পবিত্র জল, ক্রসের সাহায্য নেন, এবং পবিত্র গ্রন্থের নির্বাচিত অংশ পাঠ করে থাকেন। এছাড়া খ্রিষ্ট ধর্মের কোনও কোনও শাখায় শুধুমাত্র বিশেষ ধরনের প্রার্থনার মাধ্যমে এক্সোরসিজম ঘটানো হয়ে থাকে।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

বাচ্চাকে ছুঁড়ে ফেলা:
কর্ণাটকে হরঙ্গল নামক অঞ্চলে একেবারে ছোট বাচ্চাদের একটি মসজিদের উপর থেকে নীচে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

মসজিদটির উচ্চতা অন্ততপক্ষে ৩০ ফুট। নীচে কয়েকজন লোক একটি চাদর টানটান করে ধরে রাখেন। সেই চাদরের উপরেই ফেলা হয় বাচ্চাটিকে। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সকলেই এই বীভৎস উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। বিশ্বাস করা হয়, এই রীতির মধ্যে দিয়ে গেলে বাচ্চাটির ভবিষ্যৎ যেমন উজ্জ্বল হয়, তেমনই মঙ্গল হয় তার বাবা-মারও।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

পশুনিধন যজ্ঞ:
দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কিছু দেশে পশু হত্যা উৎসবের আকার করা হয়ে থাকে। সাধারণত ষাঁড়কেই এই নৃশংস উপায়ে হত্যা করা হয়।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

অজস্র মানুষ ঘোড়ায় চড়ে প্রথমে ষাঁড়টিকে তাড়া করেন, তারপরে সেটিকে বর্শা, ছুরি ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তার গায়ে ঢালা হয় গরম মোম। প্রতি বছর শুধু স্পেনেই অন্তত ১০ হাজার এই ধরনের পশুনিধন যজ্ঞের আয়োজন হয়ে থাকে। এছাড়া ব্রাজিল ও পর্তুগালেও এই উৎসব পালিত হয়।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

জিভ কেটে বাদ দেওয়া:
এশিয়ার বিভিন্ন প্রাচীন উপজাতির মধ্যে মহিলাদের জিভের সামনের অংশের কেটে বাদ দেওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে হাড় হিম করা ১০টি রীতি যা আজও পালিত হয়

বিয়ের আগে তরুণীদের সুন্দর পোশাকে সজ্জিত করে শুইয়ে দেওয়া হয় একটি টেবিলে। তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার জিভের সামনের অংশ কেটে বাদ দেওয়া হয়। বিশ্বাস করা হয়, এমনটা করা হলে, মেয়েটির বিবাহিত জীবন সুখের হবে, ও স্বামীর জীবনে সমৃদ্ধি আসবে।

আরও পড়ুন ::

Back to top button