বিচিত্রতা

ক্ষুধা নিবারণে হুক্কা টানেন তারা!

ক্ষুধা নিবারণে হুক্কা টানেন তারা!

সনেকা ও ননী বালার বয়স প্রায় ৮০। নীলফামারী শহর থেকে উত্তরে আট কিলোমিটার দূরে তাদের বাড়ি। পেটের ক্ষুধা নিবারণের জন্য ভাত-মাছ না খেলেও দিন কাটে তাদের। আশ্চর্যে ব্যাপার হলো, হুক্কা পান করেই দিন-রাত পার করতে পারেন এই দুই বৃদ্ধা।

সনেকা ও ননী বালার বাড়ি গিয়ে কথা হয় তাদের সঙ্গে। ভাত-মাছ না খেয়ে সারাক্ষণ হুক্কা পান করে কীভাবে দিন পার করেন, জানতে চাইলে ননী বালা বলেন, ‘মোর স্বামী মরি গেইছে, দশ বছর আগত। এখন মোর দুই বেটা এক বেটি। ওই গিলাক বিয়া দিয়াছু। মোক ভাত-কাপড় কাহোয় দেয় না। মাইনসের বাড়িত কাম করি খাও। ক্ষিদা নাইগলে হুক্কা খাও, হুক্কা হইলে মোর ভাত নাগে না। ভাত ছারা মুই হুক্কা খাইয়া দুই তিন দিন থাকির পাও।’

ননী বালা আরও বলেন, ‘মোর স্বামী মইরছে ত্রিশ বছর আগত, মোর এক বেটা, তিন বেটি। সবাইক বিয়া দিছু। কেউ মোক খোয়ায় না। মুই নিজে এই বয়সে মাইনসের বাড়িত কামলা দিয়া খাও। সারা দিন হুক্কা খাও, আইত হইলে চাইট্টা ভাত জুটিলে খাও, নাহিলে না খাও। মোর হুক্কা হইলে কিছু নাগে না। হুক্কা টাইনলে মোর পেট ভরি যায়। দশ টাকার তামাকের আলোয়া পাতা ও পাঁচ টাকার গুর কিনলে হামার দুইজনকার তিন দিনের হুক্কা খাওয়া হইয়া যায়।’

সনেকা ও ননী বালা যে হুক্কা পান করেন, তা দেখতেও বেশ। আকারে এক ফুট লম্বা হুক্কাগুলোর নিচের দিকে নারকেল কুরিয়ে লাগানো হয়েছে। উপরের দিকটা আট ইঞ্চি লম্বা কাঠের ডিজাইন করা গোলাকার। তার উপরে মাটির স্লিম। স্লিমে দেওয়া হয় গুড়া করা তামাক পাতা ও মিষ্টি গুড়। সেই তামাক আর গুড় জ্বালিয়ে সারা দিন পান করতে থাকেন সনেকা ও ননী বালা।

এ বিষয়ে লক্ষীচাপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি ওই দুই বৃদ্ধাকে বিধবা ভাতা করে দিয়েছি। তাছাড়া বিভিন্ন ভাবে আমি তাদেরকে সহযোগিতা করে থাকি। তারা এই অঞ্চলের গ্রামের ঐতিহ্য হুক্কা টানা ধরে রেখেছেন। তারা ৬০ বছর থেকে হুক্কা পান করেন।’

আরও পড়ুন ::

Back to top button