অনলাইন শপিং-এ যে ৫টি বিষয়ে নজর না রাখলে আপনি ঠকে যেতে পারেন
বিকিকিনির চিরচেনা জগতটিকে একেবারে নতুন একটি মাত্রা দিয়েছে আধুনিক অনলাইন শপিং। বাড়িতে বসে পছন্দসই জিনিসটি বেছে নেওয়া, এবং বাড়িতে বসেই তা ডেলিভারি পাওয়ার সুবিধা, দোকানে গিয়ে কেনাকাটার ধকল কমিয়ে দিয়েছে অনেকটাই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন না করলে অনলাইন কেটাকাটাতেও ক্রেতার ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যথেষ্ট। তাঁদের মত হল, অনলাইন শপিং-এও অন্তত ৫টি বিষয়ের দিকে নজর রাখা উচিৎ ক্রেতার। কোন ৫টি বিষয়? আসুন, জেনে নেওয়া যাক—
১. ডুপ্লিকেট প্রোডাক্ট:
সমস্ত ই-টেলারের ক্ষেত্রে না হলেও কোনও কোনও অনলাইন শপিং সাইটের বিরুদ্ধে জাল বা ডুপ্লিকেট প্রোডাক্ট বিক্রির অভিযোগ কিন্তু উঠেই থাকে। বলা বাহুল্য, এই সমস্ত ডুপ্লিকেট প্রোডাক্ট গুণমানে কখনওই অরিজিনাল প্রোডাক্টের সমতুল হতে পারে না। কাজেই কোনও একটি নির্দিষ্ট অনলাইন শপিং সাইট থেকে কোনও জিনিস কেনার আগে আরও কয়েকটি সাইটে সেই প্রোডাক্টটির দাম যাচাই করে নিন। যদি দেখেন, আপনার নির্বাচিত সাইটটি অন্যান্য ই-টেলারদের তুলনায় বিপুল পরিমাণে কম দামে জিনিসটি বিক্রি করছে, তাহলে সেই প্রোডাক্ট ভুয়ো বা ডুপ্লিকেট হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
২. ওয়ারান্টির সমস্যা:
অনেক সময়েই এই অনলাইন শপিং সাইটগুলি গ্রে মার্কেট মারফৎ নিজেদের জিনিস বিক্রি করে থাকে। অর্থাৎ কোনও জিনিসের প্রকৃত ম্যানুফ্যাকচারারের অনুমোদিত ট্রেড লাইনের বাইরে গিয়ে কোনও থার্ড পার্টির সাহায্যে জিনিসটি বিক্রি হয়। তেমনটা হলে প্রোডাক্টটি কেনার পরে ওয়ারান্টি বা গ্যারান্টি সংক্রান্ত পরিষেবা পেতে যথেষ্ট অসুবিধা হবে। কাজেই অনলাইন শপিং-এ কোনও জিনিস কেনার আগে তার ওয়ারান্টি ও গ্যারান্টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই কিনুন।
৩. লুকনো দাম বা হিডেন কস্ট:
কোনও একটি ই-টেলারের সাইটে হয়তো দেখলেন, কোনও প্রোডাক্টে ৯০ শতাংশ ছাড় রয়েছে। আপনি লোভে পড়ে অর্ডার দিলেন। কিন্তু যখন প্রোডাক্টটি হাতে এল, তখন দেখা গেল, ডেলিভারি চার্জ বা শিপিং চার্জ বাবদ এত টাকা খসাতে হচ্ছে যে প্রোডাক্টটির মূল দামের তুলনায় বেশি দিতে হচ্ছে আপনাকে। কাজেই অনলাইন শপিং-এ কোনও অর্ডার দেওয়ার আগে একটু ভাল করে দেখে নিন, ছোট হরফে কোনও ডেলিভারি চার্জের উল্লেখ রয়েছে কি না। উল্লিখিত দামের পাশে তারা বা স্টার (*) চিহ্ন দিয়ে তলায় জিনিসটির জন্য আদপে আপনাকে কত দাম দিতে হবে, সেটা লেখা রয়েছে কি না, সেদিকেও নজর দিন।
৪. ভুয়ো ছাড়:
অনেক সময়ে কোনও প্রোডাক্টের বাজারে যা দাম, তার থেকে বেশি দাম দেখানো থাকে অনলাইন শপিং সাইটে। তারপর বিপুল ছাড়ের দাবি করে আদপে আপনার কাছ থেকে প্রকৃত দামটিই কিংবা তার থেকে বেশি দাম আদায় করা হয়। অর্থাৎ ৩ হাজার টাকা দামের কোনও প্রোডাক্টের দাম ৬ হাজার টাকা দেখিয়ে তা যদি ৪০ শতাংশ ছাড় দিয়ে বিক্রি করা হয়, তাহলে আপনাকে ৬০০ টাকা অতিরিক্ত দিয়ে কিনতে হয় সেই জিনিসটি। কাজেই অনলাইন শপিং-এ কোনও প্রোডাক্ট অর্ডার করার আগে অন্যান্য একাধিক সাইটে, কিংবা সম্ভব হলে দোকানে, তার দাম যাচাই করে নিন।
৫. সাইটের সিকিউরিটি:
হোয়াটস অ্যাপ বা মেইল অ্যাকাউন্টে যৎসামান্য মূল্যে মহার্ঘ্য মোবাইল কিংবা রীতিমতো দামি ল্যাপটপ কিনে নেওয়ার প্রলোভন দেখানো মেসেজ বা ইমেল আপনিও হয়তো পেয়েছেন। এই সমস্ত মেসেজ বা মেলে দেওয়া থাকে একটি বিশেষ লিংক, যাতে ক্লিক করলে খুলে যাবে একটি ওয়েব পেজ, যেখানে মোবাইল বা ল্যাপটপটি কেনার জন্য আপনাকে নানাবিধ টাস্ক কমপ্লিট করতে বলা হবে। কিন্তু সেইসব টাস্ক শেষ করার পরেও আপনি আপনার পছন্দের জিনিসটি তো পাবেনই না, বরং আপনার মোবাইল বা ল্যাপটপ হ্যাক হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকবে। কাজেই এই সমস্ত লিংক সমন্বিত মেসেজ বা ইমেল দেখামাত্র ডিলিট করুন। মনে রাখবেন, কোনও ই-টেলারের পক্ষেই ৭০ হাজার টাকা দামের আইফোন ৪৯ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব নয়।