বিচিত্রতা

লকডাউনে ছোট্ট মেয়েকে নিয়েই দোকানে গেলেন মা, পিঠে সাঁটা পোস্টার! কারণ জেনে মনখারাপ সকলের

লকডাউনে ছোট্ট মেয়েকে নিয়েই দোকানে গেলেন মা, পিঠে সাঁটা পোস্টার! কারণ জেনে মনখারাপ সকলের

 

ছোট্ট এক শিশু, তার পিঠে সাঁটা পোস্টার। তাতে লেখা, ‘আমার বয়স মাত্র পাঁচ, আমার পক্ষে একা ঘরে থাকা সম্ভব নয়, তাই প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে আমাকে মায়ের সাথে বেরোতে হয়।’ এই ছবিটি ঘিরেই সম্প্রতি তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। প্রশ্ন উঠেছে, কোন পরিস্থিতিতে এক জন মাকে এমন পোস্টার লিখে সাঁটতে হয়েছে মেয়ের পিঠে! কী এমন ঘটেছে তার সঙ্গে! করোনা সংক্রমণ রোখার সতর্কতায় লকডাউন করা হয়েছে গোটা বিশ্বের অসংখ্য দেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার বলেছে, যতদিন না ভ্যাকসিন বা ওষুধ আবিষ্কার হচ্ছে, ততদিন এই লকডাউনই একমাত্র উপায় সংক্রমণ রোখার। তার পরেও লকডাউনের তোয়াক্কা না করেই বহু জায়গায় মানুষজন পথে নেমে পড়ছেন প্রায়ই।

প্রশাসনের চেষ্টা সত্ত্বেও সুরাহা হচ্ছে না। এই নিয়ে নেটিজেনদের তীব্র সমালোচনাও প্রতিদিনই চোখে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তেমনই সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন টেক্সাসের একজন সিঙ্গেল মাদার ম্যারিঅ্যান ফউসি রেসেন্ডেজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, সত্যি করেই। কয়েক দিন আগেই তিনি তাঁর শিশুকন্যাকে নিয়ে কাছেই একটি দোকানে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে যান। সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় বহু মানুষের সমালোচনার মুখে পড়েন। অনেকেই কুকথা বলেন তাঁকে লক্ষ করে, অনেকে আবার অভিযোগ করেন, শিশুটির প্রতি যথেষ্ট যত্নশীল নন তিনি। ম্যারিঅ্যান জানান, তাঁর কথা কেউ শুনতেই চায়নি! কিছু মানুষ কোনও কিছু না জেনেই যে কাউকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিতে অভ্যস্ত।

এটাও এক ধরনের সামাজিক অত্যাচার বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু সত্যিটা হল, ম্যারিঅ্যান একা মা। বাড়িতে কেউ নেই। ছোট্ট মেয়েটির শরীর ভাল ছিল না, তাকে একা ঘরে রেখে আসা সম্ভব হয়নি ম্যারিঅ্যানের। অথচ খাবার না কিনলেই নয়। তাই বাধ্য হয়েই সবরকম সুরক্ষা নিয়ে মেয়েকে সঙ্গে করে দোকানে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এমনই অপমান ও আক্রমণের মুখে পড়বেন, ভাবতেও পারেননি।

তাই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে, পরের দিন বেরোনোর প্রয়োজন পড়লে ম্যারিঅ্যান নিজের পাঁচ বছরের মেয়ের পিঠে লাগিয়ে দেন পোস্টার এবং তাকে নিয়েই ফের দোকানের পথে পা বাড়ান। ম্যারিঅ্যান সেই ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন, কারণও বলেন। তার পরেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। অজস্র প্রতিক্রিয়ার বন্যা ঝরে পড়ে। বহু মানুষ প্রতিবাদ মুখর হন। জানান, তাঁরাও একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন। ম্যারিঅ্যান দাবি করেন, যথেষ্ট সাবধানতা ও প্রয়োজনীয় সর্তকতা অবলম্বন করেই তিনি সন্তানকে নিয়ে বাইরে গেছেন, কারণ একজন সিঙ্গেল মাদার হিসেবে অসুস্থ ছোট শিশুকে একা ঘরে রাখা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।

এই ছবির পাশাপাশিই বার্তা দিতে তিনি সমস্ত রকম সর্তকতা অবলম্বনের কথাও ছবি-সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছেন। প্রসঙ্গত সানফ্রান্সিসকো, ক্যালিফোর্নিয়ার মত পশ্চিমের বহু শহরেই একাধিক সিঙ্গেল পেরেন্টের খোঁজ পাওয়া যায়, যাদের অনেকের সন্তানই ছোট। তারা অনেকেই ম্যারিঅ্যানের মত একই সমস্যার সম্মুখীন। প্রত্যেকেই এই দুরবস্থা কেটে যাওয়ার অপেক্ষায়।

সুত্র: THE WALL

আরও পড়ুন ::

Back to top button