জানা-অজানা

করোনা চীনে ঢুকানো হয়েছিল, জিন মানচিত্র এর প্রমাণ?

করোনা চীনে ঢুকানো হয়েছিল, জিন মানচিত্র এর প্রমাণ?

চীনের উহান শহর থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস অন্য কোথাও থেকে দেশটিতে ঢোকানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন রাশিয়ায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ঝাং হানহুই। ভাইরাসটির জিন মানচিত্র বা জিন সিকোয়েন্সের বিশ্লেষণ নাকি তাই দেখায়।

রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা তাসকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি দাবি করেন, করোনার উৎপত্তি চীনে নয় বরং বাইরের কোথাও থেকে ভাইরাসটি চীনে প্রবেশ করানো হয়েছিল। ভাইরাসটির জিনের অনুক্রম বিশ্লেষণ করে অন্য কোথাও এটির উৎপত্তি হয়েছিল বলে জানা গেছে। পরবর্তীতে এটি উহান শহরে ঢুকানো হয়েছিল।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জিশুয়াংবনা ট্রপিকাল বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং সেন্ট্রাল বোটানিকাল গার্ডেনসহ চীনের পাঁচটি স্বনামধন্য বৈজ্ঞানিক সংস্থা চার মহাদেশের ১২টি দেশ থেকে করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করে একটি ডাটাবেজে প্রকাশ করেছে। সেখানে কোভিড-১৯ এর ৯৩টি জিনোম সিকোয়েন্সের তথ্য রয়েছে। তাদের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ভাইরাসটির প্রথম পূর্বপুরুষ এমভি-১, যা হ্যাপ্লোটাইপ এইচ-১৩ এবং এইচ-৩৮ এ বিবর্তিত হয়েছিল এবং এর ফলে তারা দ্বিতীয় প্রজন্মের হ্যাপ্লোটাইপ- এইচ-৩ এর উত্থান ঘটায়। যেটা এইচ-১ থেকে বিবর্তিত হয়েছিল।’

বিষয়টি আরও স্পষ্ট করার জন্য রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘গবেষকরা ভাইরাসটির বিকাশ বিশ্লেষণের জন্য পারিবারিক সম্পর্কগুলো ব্যবহার করেছেন। সুতরাং, এমভি-১ হ্যাপ্লোটাইপটি হলো করোনার “দাদার-দাদা” এবং এইচ-১৩ এবং এইচ-৩৮ হল “দাদী এবং দাদা”, এইচ-৩ “পিতা” এবং এইচ-১ হলো “সন্তান”।

রাশিয়ায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত আরও বলেছেন, ‘উহানের সামুদ্রিক খাবারের বাজারে যে ভাইরাসটি আবিষ্কার হয়েছিল তা এইচ-১ জাতের ছিল। সম্প্রতি উহানে এইচ-৩ হ্যাপ্লোটাইপটি আবিষ্কার হয়েছে, তবে সামুদ্রিক খাবারের বাজারের সঙ্গে এর কোনো যোগসূত্র ছিল না।’

রাষ্ট্রদূত ঝাং হানহুইয়ের দাবি, ‘ভাইরাসটির পূর্ববর্তী জিন সিকোয়েন্সগুলো, এইচ-১৩ এবং এইচ-৩৮ কখনোই উহানে পাওয়া যায়নি। এটি থেকে বোঝা যায় যে এইচ-১ নমুনাটি কোনো সংক্রমিত ব্যক্তি সামুদ্রিক বাজারে নিয়ে এসেছিলেন, যা পরবর্তীতে মহামারি আকারে ছড়িয়েছে। জিনের ক্রমটি মিথ্যা বলতে পারে না।’

রাষ্ট্রদূত ভাইরাসটি ছড়ানোর জন্য চীনকে যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে সেটিকে দুঃখজনক বলে বর্ণনা করে বলেছেন, ‘এই রোগকে পরাস্ত করতে চীনকে প্রচুর চেষ্টা করতে হয়েছিল এবং বিপুল সংখ্যক মানুষকে হতাহতের শিকার হতে হয়েছিল। চীন যখন ভাইরাসটির বিরুদ্ধে একা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল তখন, অন্যন্য দেশগুলো- পুরো দুই মাস নিজেদের প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ পেয়েছিল।’

এর আগে বিশ্বজুড়ে অভিযোগ ওঠে, চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের একটি গবেষণাগারে করোনাভাইরাস তৈরি করা হয়েছে। এরপর সেখান থেকে ভুল করে ভাইরাসটি বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে। অথবা চীন বিশ্ববাণিজ্য দখলে নিতে ও পৃখিবীজুড়ে নিজেদের কর্তৃত্ব বাড়াতে জৈব অস্ত্র তৈরি করতে গিয়েই এই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে চীন বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এ ছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সন্দেহ পোষণ করেছিলেন যে, চীন ভাইরাসটির উত্থান এবং বিস্তার সম্পর্কে সব তথ্য প্রকাশ করছে না। বুধবার ফক্স নিউজ তার সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে উহান একটি পরীক্ষাগার থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে এবং ট্রাম্প বিষয়টি খতিয়ে দেখারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সুত্র : আমাদের সময়

আরও পড়ুন ::

Back to top button