বারাকপুরের ৮৬ জনকে পাঠানো হল হোম কোয়ারেন্টাইনে !
বারাকপুর: নবান্নের নির্দেশে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাকপুর পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধু মুখার্জী রোডে করোনা প্রভাবিত এলাকা পরিদর্শন করলেন জেলাশাসক চৈতালী চক্রবর্তী, পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা, মহকুমা শাসক আবুল কালাম আজাদ ইসলাম সহ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ।
এদিকে বারাকপুরে ওই করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসা ৮৬ জনকে পাঠানো হল হোম কোয়ারেন্টাইনে। গত ৪৮ ঘণ্টা আগে পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মধ্যবয়স্ক এক বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী করোনায় সংক্রমিত হন । যে বেসরকারি হাসপাতালে তিনি কর্মরত ছিলেন সেখানেই তাকে বর্তমানে ভর্তি করা হয়েছে । এই ঘটনার জেরে নড়েচড়ে বসেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।
বারাকপুর মহকুমা এলাকায় বেশ কয়েকজন করোনায় সংক্রমিত হয়ে বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে । সেই কারনে বারাকপুর শহরকে রেড জোন হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে । এবার রেড জোন এলাকা পরিদর্শন করলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তারা।
তারা সোমবার দুপুরে বারাকপুরের সাধু মুখার্জী রোডে আসেন। বারাকপুর পুরসভার পুরপ্রধান উত্তম দাস ওই প্রশাসনিক দলকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছন করোনা আক্রান্ত রোগীর বাড়ির সামনের এলাকায়। ওই এলাকার বাসিন্দাদের সকলকে সম্পূর্ণ গৃহবন্দী থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গোটা এলাকাটি কার্যত প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিল করে দেওয়া হয়েছে।
বেশ কিছুক্ষণ সাধু মুখার্জী রোড ঘুরে দেখে জেলা শাসক প্রশাসনের কর্তাদের জানান, বারাকপুর শহরকে রেড জোন এলাকা থেকে গ্রীন জোন এলাকায় পরিণত করতে হবে। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে এই গ্রীন জোনে পরিণত করতে যা যা করা প্রয়োজন, সরকার সব রকম সহায়তা করবে স্থানীয় প্রশাসনকে ।
এদিকে এদিন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের করোনা প্রভাবিত এলাকা পরিদর্শনের পর বারাকপুর পুরসভার পুরপ্রধান উত্তম দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘বারাকপুর শহরকে রেড জোন থেকে গ্রীন জোনে আনতে যত রকম সহায়তা দরকার সব করতে প্রস্তুত সরকার । এই ঘটনায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসা মোট ৮৬ জন ব্যাক্তিকে রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশে সম্পূর্ণ হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
বারাকপুর বিএনবসু মহকুমা হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিক যাতে ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকে সেই পরিকল্পনা ৩ দিনের মধ্যে কার্যকর করার চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে এই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে যাতে রেশনিং ব্যবস্থা নিয়ে কোন ক্ষোভ না থাকে সেই কারনে রেশনিং দ্রব্য দ্রুত সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ।’
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নজরে হট স্পট হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। এই জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে বারাকপুর মহকুমায় । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী জেলা শাসককে নির্দেশ দিয়েছেন যে কোন মূল্যে উত্তর ২৪ পরগনার করোনা প্রভাবিত এলাকার হাল ফেরাতে হবে । কার্যত নবান্নের নির্দেশেই নড়েচড়ে বসেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন । সেই কারনেই বারাকপুর সোমবার করোনা প্রভাবিত এলাকা পরিদর্শন করলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার শীর্ষ পর্যায়ের প্রশাসনিক প্রতিনিধিদল।
সুত্র:কলকাতা24×7