রাজ্য

সহযোগিতা করছে না রাজ্য, মানা হচ্ছে না লকডাউন, শিলিগুড়িতে ফের অভিযোগ দিল কেন্দ্রীয় দল !

সহযোগিতা করছে না রাজ্য, মানা হচ্ছে না লকডাউন, শিলিগুড়িতে ফের অভিযোগ দিল কেন্দ্রীয় দল !

 

শিলিগুড়ি: ফের রাজ্যের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুললেন উত্তরবঙ্গে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান। রবিবার শিলিগুড়ির কাছে একটি চা বাগানে গিয়ে এই অভিযোগ তোলেন প্রতিনিধি দলের প্রধান।

রবিবার সকালে শিলিগুড়ির বিধান বাজার ও সব্জি বাজার পরিদর্শনে বেরোন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না রাজ্য সরকারের কাছ থেকে। একই সঙ্গে উত্তরে কঠোর ভাবে লকডাউন মানা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের শিলিগুড়ি বিভাগের প্রধান বিনীত যোশী। শিলিগুড়িতে লকডাউন মানা হচ্ছে না বলে শুক্রবার রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। শুক্রবার ও শনিবারের পরে রবিবার ফের রাস্তায় নেমে পরিস্থিতি দেখলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

রবিবার দুপুরে শিলিগুড়ির রাস্তার হাল দেখে আশ্চর্য হয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। দুপুর ১টা বেজে গেলেও শিলিগুড়ি খালপাড় রোড, হোলসেল বাজার, নিয়ন্ত্রিত বাজারের পাশাপাশি শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিধান বাজারে সব্জির বাজারও ঘুরে দেখেন তাঁরা। দুপুরেও বহু সংখ্যক লোক রাস্তায় ও বাজারে দেখে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ছবি তুলে রাখেন। শিলিগুড়ি বিধান বাজারের পরিস্থিতি এদিন ভাল করে দেখেন তাঁরা। কথা বলতে শুরু করেন বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সাথে। কিন্তু বিকেলের পরিস্থিতি আরশনিবারই শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে সারপ্রাইজ ভিজিট করেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

এ দিন কনভয় থেকে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান বিনীত যোশী সোজা চলে যান বিধান বাজারে। নেমে পড়েন একটি দোকানের সামনে। নেমেই সরাসরি সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্ন করেন বাজারের অবস্থা কেমন? দুপুর বেলা এসএসবি জওয়ানদের ঘেরাটোপের মধ্যে থাকা এক ব্যক্তির প্রশ্ন শুনে ঘাবড়ে যান বাজারের লোকজন। বিক্রেতা উত্তর দেন, বাজারের অথনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ। তবে চারদিকে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। নোংরা পরিষ্কার করা হচ্ছে। বাজার কমিটিকে বারবার লোকজনকে সচেতন করছে। বিক্রেতার থেকে উত্তর শুনে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা গোটা বিষয়টির নোট নিয়ে নেন।

বিনীত যোশী পাল্টা ক্রেতাদের থেকে জানতে চান তাঁদের স্যানিটাইজার দেওয়া হয় কিনা। মাস্ক না পরে আসলে কি বাজার থেকে জিনিষ দেওয়া হয়, সেই প্রশ্নও করেন তিনি। এর পর তিনি জানতে চান, জিনিস দেওয়া না হলে ঝগড়াঝাটি হলে তখন পরিস্থিতি কে সামলায়? পুলিশ বা ভলান্টিয়ার বাজারে মোতায়েন থাকেন কিনা সেই সব বিষয়েও প্রশ্ন করেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। তবে কেন বিক্রেতারা গ্লাভস ব্যবহার করছেন না, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।

এ দিন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের শিলিগুড়ির প্রধান বিনীত যোশী জানান, ‘এখানে কঠোরভাবে লকডাউন মানা হচ্ছে না। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হলেও এখানে অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। এমনকী বহু জায়গায় বজায় মানা হচ্ছে না সামাজিক দুরত্ব।’ দুপুর বেলা বাজারের একাধিক জায়গায় কেন লোক জমে আছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। তারই মধ্যে অনেককেই দেখা গিয়েছে মাস্ক না পরে ঘোরাঘুরি করতে। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে রবিবার দুপুরের বাজার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বেশ আশ্চর্য হয়েছেন তাঁরা।

এদিন শিলিগুড়ির কাছে নিউ চামটা চা বাগানে যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ১৮৬৬ সাল থেকে চলছে এই চা বাগান। পুরনো এই চা বাগানে গিয়ে সেখানকার শ্রমিক ও আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। বিশেষ করে সামাজিক দূরত্ব মেনে চা ফ্যাক্টরিতে কাজ হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজ নেন তাঁরা। এমনকী বাগানের রেশন ব্যবস্থা নিয়েও বেশ কিছু প্রশ্ন করেন তাঁরা। তবে এদিনও রাজ্য সরকারের কোনও প্রতিনিধি না থাকার প্রসঙ্গে ক্ষোভ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের শিলিগুড়ির প্রধান বিনীত যোশী।

তিনি বলেন, ‘আমরা রাজ্য সরকারকে বারবার জানিয়েছি। যদিও রাজ্য সরকার কোনও সাহায্য করছে না। এখনও আশা রাখি তারা আমাদের সাহায্য করবেন।’ এদিন শিলিগুড়ির রাস্তার একাধিক জায়গায় ভিড়ের ছবি তুলে রেখেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

সুত্র: News18

আরও পড়ুন ::

Back to top button