ঝাড়গ্রাম

ইন্দ্রনীলের পেন্সিলের ছোঁয়ায় লকডাউনে বিমর্ষ রবীন্দ্রনাথ

ইন্দ্রনীলের পেন্সিলের ছোঁয়ায় লকডাউনে বিমর্ষ রবীন্দ্রনাথ

স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: প্রথাগত আঁকা শেখেননি। তবে অবসরে কাগজে কালো পেন্সিল দিয়ে দিয়ে আঁকিবুকি কেঁটে এঁকে ফেলেন যে কোনও প্রতিকৃতি। তিনি ঝাড়গ্রাম শহরের প্রসিদ্ধ ওষুধ ব্যবসায়ী ইন্দ্রনীল ঘোষ।

ঝাড়গ্রাম শহরের পাঁচ মাথা মোড়ের ‘রয়্যাল দে’জ মেডিক্যাল’-এর অন্যতম কর্ণধার ওই তরুণ ব্যবসায়ী পঁচিশে বৈশাখে আঁকলেন রবীন্দ্রনাথের ছবি। শুক্রবার অলস দুপুরে দোকানে বসেই চলল ইন্দ্রনীলের শিল্পকর্ম। ইন্দ্রনীল জানালেন, শিল্পচর্চাই তাঁর অবসরের সঙ্গী। স্ত্রী স্বাতীলেখা বাচিকশিল্পী হিসেবে ঝাড়গ্রামে যথেষ্টই পরিচিত। এছাড়া রন্ধনশিল্পী হিসেবেও স্বাতীলেখার নামডাক রয়েছে। ইন্দ্রনীলও কিছু কম যান না। তিনি একাধারে শিল্পরসিক, ভোজনপ্রিয় ও ভ্রমণপ্রিয়।

সুযোগ পেলেই লংড্রাইভে নিজেই গাড়ি চালিয়ে চলে যান অমৃতসর কিংবা জয়সলমীর। এছাড়া বছরে বার কয়েক বিদেশ ভ্রমণ তো রয়েছেই। একবার একুশে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় গিয়ে রীতিমতো আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন ইন্দ্রনীল। পূর্ববঙ্গে কোনও শিকড় নেই তাঁর। তবুও সাবেক বাংলার মাটি ছুঁয়ে এক পরম তৃপ্তি অনুভব করেছিলেন তিনি। ইন্দ্রনীল জানান, কয়েক বছর আগে ঢাকায় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে ছবি এঁকে বহুজনকে শ্রদ্ধা জানাতে দেখেছিলেন। পরে ঝাড়গ্রামে ফিরে এসে কাজের অবসরে দোকানের বিলের কাগজে ছবি আঁকা শুরু করেন। সবই কারও না কারও প্রতিকৃতি। বিশেষ দিনে মণীষীদের কিংবা বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের ছবি আঁকেন ইন্দ্রনীল।

ইন্দ্রনীলের পেন্সিলের ছোঁয়ায় লকডাউনে বিমর্ষ রবীন্দ্রনাথ

এই যেমন কয়েকদিন আগে প্রয়াত অভিনেতা ইরফান খান ও ঋষি কাপুরের ছবি এঁকে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন ইন্দ্রনীল। তাঁর আঁকার ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন নেটিজেনরা। এবার পঁচিশে বৈশাখে রবি ঠাকুরের ছবি এঁকে শ্রদ্ধা জানালেন এই তরুণ ব্যবসায়ী। তবে ইন্দ্রনীলের আঁকা ছবিটিতে বিমর্ষ রবীন্দ্রনাথ যেন ধরা পড়েছেন। ইন্দ্রনীল বলেন, ‘‘করোনা আবহে লকডাউনে কারও মন ভাল‌ নেই। তাই হয়তো সেই মন খারাপের কিছুটা রেশ ধরা পড়েছে ছবিতে। তবে আমি আশাবাদী, একদিন পরিস্থিতি পাল্টাবেই।’’ ইন্দ্রনীলকে ছবি আঁকায় সবসময় উৎসাহ দেন যিনি, সেই ঝাড়গ্রাম আর্ট অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ সঞ্জীব মিত্র বলেন, ‘‘ইন্দ্রনীলের ছবি দেখে মনে হয় উনি জাতশিল্পী। উনি প্রতিভা নিয়ে জন্মেছেন।’’

আরও পড়ুন ::

Back to top button