রাজনীতি

বিজ্ঞান মঞ্চের ত্রাণের ছবি চুরি করে পোস্ট, বিপাকে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক !

বিজ্ঞান মঞ্চের ত্রাণের ছবি চুরি করে পোস্ট, বিপাকে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক !

 

ওয়েবডেস্ক : আমফানে রাজ্য সরকারের ত্রাণ বিলি সংক্রান্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। মোট চারটি ছবি পোস্ট করেছিলেন তিনি। এবার সেই ছবিগুলিকে কেন্দ্র করে দেখা দিল বিতর্ক।

ডেরেকের পোষ্ট করা ছবিগুলি আদৌ রাজ্য সরকারের নয়। সেগুলি বিজ্ঞান মঞ্চের বলে দাবি করা হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। সংগঠনের দাবি, ডেরেক ও’ব্রায়েনের দেওয়া ছবিগুলি পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীদের ত্রাণ বিলির। বিজ্ঞান মঞ্চ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এক টাকাও পায়নি ত্রাণ বিলির জন্য।

বিজ্ঞান মঞ্চের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক সৌরভ চক্রবর্তীর ছবি প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ডেরেক ও’ব্রায়েন ফেসবুকে যে চারটি ছবি পোস্ট করেছেন তার দুটোতে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের টাকি হাসনাবাদের ইছামতী বিজ্ঞান কেন্দ্রের সম্পাদক প্রদীপ্ত সরকার ও সংগঠনের দুই তরুণ কর্মীর। ওঁরা কেউ সরকারী লোক নয়।

তিনি জানিয়েছেন, ওঁরা হাসনাবাদ হিঙ্গলগঞ্জে ৬৫০০ মানুষের কাছে খাওয়ার পৌঁছে দিচ্ছেন প্রতিদিন। এক বস্তা সরকারি চাল ও পায়নি বিজ্ঞান মঞ্চ। সৌরভবাবু জানান, ছবিগুলি পোষ্ট করে আদতে ডেরেক ও’ব্রায়েন আমাদের গৌরব গাঁথার ছবি মেলে ধরেছেন। কিন্তু সাংসদ একবারও সংগঠনের নাম করেননি।

সংগঠনের দাবি, বিজ্ঞান মঞ্চ ভারতের সর্ববৃহৎ জনবিজ্ঞান সংগঠন। একটা সময়ে তৃণমূল সাংসদ বিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে কুইজ করতেন। সেই বিষয়গুলিকেই এই সংগঠন সারাবছর মানুষের কাছে নিয়ে যাচ্ছে।এক টাকাও দেয়নি রাজ্য সরকার, দাবি বিজ্ঞান মঞ্চের।

বিজ্ঞান মঞ্চের ত্রাণের ছবি চুরি করে পোস্ট, বিপাকে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক !

 

ডেরেক ও ব্রায়েন মহোদয়, আপনি ফেসবুকে সরকারী সাহায্যের উল্লেখ করেছেন, তা নিয়ে বলার কিছু নেই, সেটা সুন্দরবনের মানুষই বলবেন কিন্তু যে চারটি ছবি আপনি ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করে পোস্ট করেছেন তার দুটোতে দেখতে পাচ্ছি, পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের টাকি, হাসনাবাদের ইছামতী বিজ্ঞান কেন্দ্রের সম্পাদক প্রদীপ্ত সরকার, সংগঠনের তরুণ কর্মী একাধারে নেতৃত্ব সুকান্ত আর শুভকে।

ওরা কেউ সরকারী লোক নয়, ওরা হাসনাবাদ হিঙ্গলগঞ্জে ৬৫০০ মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে বাড়ি ঘর ছেড়েছে, ছেড়েছে নাওয়া খাওয়া, রাতের নিশ্চিন্ত ঘুম। যুক্ত করছে হাজার হাজার মানুষকে, পাশে দাঁড়ানো সংগঠনের ত্রাণ পৌঁছে দিতে।
এক বস্তা সরকারী চালও কেউ ওদের দেয়নি।

আম্ফানের প্রথম রাত থেকেই ওরা নদীবাঁধে, পরদিন জল নিয়ে পার হাসনাবাদের পাটলিখানপুর, তারপর ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, কদিন বাদেই টাকির অবিসংবাদী মাস্টারমশাই,জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের নেতা পার্থ মুখার্জির নেতৃত্বে প্রদীপ্ত সরকার,রফিকুল ইসলাম, সিদ্দিক, পলাশ, সুরজিত হাউলি,সূর্য্যশিখা

বৈদ্য,অর্ণব মন্ডল, শুভ মন্ডল, অমিতাভ বর্মণ, দিব্যেন্দু মন্ডল, বিশ্বজিত বোস,শুভব্রত দাস,সৌমেন মন্ডল, শক্তি দাস,দিবাকর,রসিদ,, সুকান্ত আড়ি, নৌশের সহ এক ঝাঁক উজ্জ্বল তরুণ জনবিজ্ঞান কর্মীকে নিয়ে বেলিয়াডাঙাকে কেন্দ্র করে জনতার রান্নাঘর শুরু, পরপরই ১ টা ১০ টা জনতার রান্নাঘরে

৬৫০০ মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী বিপ্লন নায়ক সহ একঝাঁক উচ্চ শিক্ষিত তরুণের ঝাঁপিয়ে পড়া, সংগঠনের কেন্দ্রগুলির সামর্থ উজার করে পাশে দাঁড়ানো, নানা সংগঠন ব্যক্তির উজার করে দেওয়া দান-জলে ভেসে থাকা সর্বস্ব হারানো

নিরন্ন মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়া, ঘর ছাইবার কিছুটা ব্যবস্থা করা, শুকনো খাবার,ওষুধ, মেডিকেল ক্যাম্প – মানুষকে নিয়ে মানুষের জন্য সে এক বিশাল কর্মযজ্ঞ।এরসাথে মিনাখাঁ আটপুকুরের উচিলদহ, কোকিলপুরের আদিবাসী এলাকায় ৭ টি জনতার রান্নাঘরে ১৫০০ মানুষ খাচ্ছেন, শুকনো খাবার পাচ্ছেন।

এখানেও একঝাঁক তরুণ তরুণী সুনীতি মন্ডল, চন্দনা মল্লিক, অপূর্ব সানা, শিপ্রা মন্ডল, অরূপ সর্দার মাস্টারমশাই, প্রদ্যুত রায়, শ্রীকান্ত,কুতবুদ্দিন, ফারুক আহমেদরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন দরিদ্র আদিবাসী এলাকায় নিরন্ন মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেবার জন্য।

সন্দেশখালি মুজিবর গাজী সুপ্রিয়, অভিজিৎ, অমল, হরিচরণ, সমরেন্দ্র, রাঘবেন্দ্র রা প্রথম দিনথেকে প্রাণপাত করছে নদী বাঁধ রক্ষার জন্য আর দ্বীপ থেকে দ্বীপে নিরন্ন মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেবার জন্য! দূর থেকে পরিচালনা করছেন তপন প্রামানিক।আপনার এই চারটে ছবি আমাদের কাছে এই বড়ো গৌরব গাথার ছবি মেলে ধরে।

আপনি একবারও লোকমুখে ফেরা সংগঠনটার নাম করলেন না! এ সংগঠন তো গোটা ভারতবর্ষের সর্ববৃহৎ জনবিজ্ঞান সংগঠন, পশ্চিমবাংলাবাসীর দলমত নির্বিশেষে আদরের আস্থার ভরসার সংগঠন, এতো আপনারও গর্ব, তাই না? আপনি তো বিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে ক্যুইজ করতেন, সেই বিষয়গুলিকেই তো সারাটা বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ মানুষের কাছে নিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্বাস করুন এই সংগঠন কোনও সরকারের কাছ থেকেই সাহায্য পায়না, এসময়, একটা বস্তা চাল বা অন্যসময় কোনও ধরণের আর্থিক সাহায্যও করেনা, আর এও জেনে রাখুন সুন্দরবনের সন্দেশখালিতে আমাদের অফিস ঘরটাকে আপনারই মানুষজন দখল করে রেখেছে ২০১১ সাল থেকেই, আমরা সেখানে ঢুকতে পারিন।

নিরলস অধ্যবসায় আর মানুষের ভালোবাসা উজার করা সাহায্য নিয়ে এই গৌরবের সংগঠন মানুষের মধ্যে মানুষকে নিয়ে কাজ করে চলেছে। একবারও সেই স্বীকৃতি দেবেন না।অনেকটা যেন চাঁদ সওদাগরের বাঁহাতে মনসা পুজো দেবার মতো ব্যাপার হলো না।আশা করবো এর পরের পোস্টে আপনি পশ্চিবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের এই বিশাল কর্মযজ্ঞের খানিকটা রূপরেখা আঁকবেন।

আরও পড়ুন ::

Back to top button