আমফান দুর্নীতিতে জর্জরিত শাসক, ক্ষোভে ফুঁসছে ক্ষতিগ্রস্তরা !
নিজস্ব প্রতিনিধি,দক্ষিণ ২৪ পরগনা : একে করোনা ভাইরাস এর জেরে গোটা বিশ্ব জুবুথুবু, তার উপরেই ঘটে যায় ভয়ঙ্কর সুপার সাইক্লোন আমফান। গোটা বিশ্ব তথা ভারতবর্ষে করোনা মহামারীর তাণ্ডবে লকডাউন চল ছিল। তার উপর গত ২০-ই মে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় পাঁচটি জেলা বিপুল পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এর মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা। বিধ্বংসী আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিদর্শনে আসেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমফান ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখে প্রশাসনের সমস্ত আধিকারিকরা। সেইমতো পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনিক দপ্তর থেকে নির্দেশ নামা জারি
করা হয় আফফান ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তড়িঘড়ি করে নথিভূক্ত তৈরি করা হয়। বিধ্বংসী আমফান গোটা সুন্দরবনকে তছনছ করে রেখে দেয়। একেতো লকডাউন এ দুস্থ অসহায় সাধারণ মানুষ খুবই কষ্টে দিন কাটাচ্ছিল, তার ওপর বিধ্বংসী আমফান এর ধ্বংসলীলা মানুষকে বিপর্যস্ত করে রেখে দিয়েছে।
আরও পড়ুন : লাদাখ নিয়ে ফের কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা রাহুল গান্ধির !
করোনা মহামারী জেরে দুস্থ অসহায় মানুষদের জন্য কেন্দ্র সরকার রেশন এ বিনামূল্যে ৫ কেজি করে চাল ডাল ও আটা দেওয়ার ঘোষণা করেন। সাথে সাথে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকেও বিনামূল্যে রেশনের চাল এর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী মানুষ রেশন থেকে
খাদ্যসামগ্রী পাইনি এমনই অভিযোগ ওঠে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলাগুলিতে। শাসক-বিরোধী তরজা সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্তের মুখে পড়ে। প্রতিদিন উঠে আসে রেশন কেলেঙ্কারির নিত্যনতুন অভিযোগ। সরকারি তরফে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পরেও রেশন দুর্নীতি থামছেই না। এরমধ্যে আমফান বিধ্বস্ত
এলাকার মানুষ গুলি দিনের পর দিন অভিযোগ করে তারা সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী চাল ডাল আটা পাচ্ছেন না। এরইমধ্যে কেন্দ্র তথা রাজ্য সরকারের আফফানের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তার মধ্যেও দুর্নীতিতে জর্জরিত হয়ে যায় শাসক দল তৃণমূল। একের পর এক অভিযোগ উঠে আসে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোটা জেলা জুড়ে। প্রতিদিনই অসহায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েত প্রধান ও নেতাদের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। অভিযোগ উঠেছে রাজ্য সরকারের ক্ষতিপূরণ অনুযায়ী কুড়ি হাজার টাকা আমফানের অনুদান দেওয়া হয়, দেখা
গেল ঠিক যখনি আমফান ক্ষতিপূরণ এর টাকা ব্যাংক একাউন্টে ঢুকল একের পর এক তৃণমূলের নেতা পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েত প্রধান এর নামে ও তাদের পরিবারের একের পর এক সদস্যদের নামে। অভিযোগ করেন এলাকাবাসী এই তৃণমূল নেতা পঞ্চায়েত সদস্য প্রধান দের পাকার বারি থাকা সত্ত্বেও
তারা নিজ নামে ও পরিবারের সকলের নামে আমফনের ক্ষতিপূরণের টাকা নিজ নিজ একাউন্টে পেয়ে গেছেন। অথচ ক্ষতিপূরণের যখন আবেদন করা হয় সাধারণ ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে তাদের বাড়ির ছবি ও তাদের পরিচয় পত্র ও ব্যাংক একাউন্টের জেরক্স নিয়েছিল শাসক দল তৃণমূল। স্থানীয় গ্রাম
আরও পড়ুন : ‘ইন্দিরা গান্ধী, অটলবিহারী বাজপেয়ীও হেরেছিলেন’, বিজেপিকে তোপ পাওয়ারের
পঞ্চায়েত ও বিডিও অফিস এই সমস্ত আবেদনপত্র জমা পড়েছিল প্রায় মাসখানেক আগে। কিন্তু যখনই ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকলো সাধারণ মানুষ হতভম্ব ও অবাক হয়ে গেলো ।
ঠিক এমনটাই অভিযোগ কে ঘিরে গতকাল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার অন্তর্গত কাকদ্বীপের স্বামী বিবেকানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা শিবপুর গ্রামে সাধারণ মানুষ অর্ধেন্দু ভূঁইয়া নামক তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় ও পার্টি অফিস ভাঙচুর করে। যদিও
এই বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা কে পাওয়া যায়নি তার বাড়িতে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে স্থানীয় হারুড পয়েন্ট কোস্টাল থানার পুলিশ আধিকারিকরা পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে বিক্ষোভকারীদের ন্যায় ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।