বিনোদন

বাবুর্চির বর্ণনায় যেভাবে আত্মহত্যা করলেন সুশান্ত

বাবুর্চির বর্ণনায় যেভাবে আত্মহত্যা করলেন সুশান্ত

প্রায় তিন মাস হতে চলেছে পৃথিবী ছেড়েছেন বলিউডের রিল লাইফ ধোনি সুশান্ত সিং রাজপুত। তবু তার মৃত্যু রহস্য নিয়ে তোলপাড় চলছে ভারতে। যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ‘আত্মহত্যা’ জানানো হয়েছে।

যদিও এখনও সে রিপোর্ট মানতে নারাজ সুশান্তের পরিবার ও তার ভক্ত-অনুরাগীরা।

ইতিমধ্যে এ বিষয়ে করা মামলায় কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে, পরিচালক সঞ্জয় লিলা বানসালি, আদিত্য চোপড়া ও মহেশ ভাট, অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী, অঙ্কিতা, সুশান্তের বন্ধু সিদ্ধার্থসহ আরও অনেককে।

সুশান্তের মৃত্যুতে প্ররোচণাকারী হিসাবে দোষ দেয়া হচ্ছে তাদের।

এরই মধ্যে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে সাক্ষাত্কার দিয়েছেন সুশান্তের বাবুর্চি নীরজ সিং বেশ।

বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তিনি। মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে সুশান্তের সঙ্গে কী ঘটেছিল তা জানিয়েছেন তিনি।

সুশান্তের মৃত্যু দিনের কথা স্মরণ করে নীরজ সিংহ বলেন, এটা কোনো খুন নয়, সুশান্ত স্যার ঠাণ্ডা মাথায় আত্মহত্যা করেছেন।

তিনি বলেন, ১৪ জুন সকালে ৮টায় ঘুম থেকে উঠেছিলেন সুশান্ত স্যার। আমি গেটের কাছে পরিষ্কার করার সময় তিনি বেরিয়ে আসলেন আর আমার কাছে ঠাণ্ডা পানি চাইলেন। আমি তাত্ক্ষণিকভাবে তাকে পানি দিয়েছিলাম। পানি দিয়ে আসার সময় তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন নীচে সবকিছু ঠিক আছে? আমি বললাম ‘জি স্যার’। তিনি মুচকি একটি হাসি দিয়ে তার ঘরে চলে গেলেন।

[ আরও পড়ুন : সুশান্তের পোস্টমর্টেমে উপস্থিত ছিলেন রিয়া, গোপন ভিডিও ফাঁস! ]

নীরজ সিংহ বলতে থাকেন, ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার দিকে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম তিনি নাস্তায় আজ কি খাবেন? তিনি নারকেলের পানি, কমলার রস এবং কলা চেয়েছিলেন। নাস্তার পর ঘরে ফের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন। এরপর কেশব (অন্য বাবুর্চি) তাকে জিজ্ঞাসা করতে গেল তিনি লাঞ্চে কী খাবেন? কিন্তু ভেতর থেকে কোনো জবাব আসেনি তার। দরজায় বারবার কড়া নাড়লেও তিনি সাড়া দেননি। তখন আমরা ১০-১৫ মিনিট পর আবার নক করলাম। এরপরও সাড়া না পাওয়ায় সুশান্ত স্যারের বন্ধু সিদ্ধার্থ স্যারকে জানালাম। উনিও নাকি স্যারকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু কোনো উত্তর মেলেনি।

নীরজ আরও বলেন, ‘আমরা দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। রুমের চাবির সন্ধান করেও খুঁজে পাইনি না। বিষয়টি সুশান্ত স্যারের বোন মিতুকে জানালাম। তিনি দ্রুত আসছেন জানিয়ে ফোনেই দরজার তালা ভাঙার ব্যবস্থা করতে বললেন। আমরা তালা ভাঙার লোক ডাকলাম। ওই লোক এসেই পাঁচ মিনিটের মধ্যে সুশান্ত স্যারের রুমের তালাটি ভেঙে ফেলল। আমরা ভেতরে গিয়ে যা দেখলাম তার জন্য কখনই প্রস্তুত ছিলাম না। সিদ্ধার্থ স্যার, আমি ও দিপেশ প্রথম ঘরে প্রবেশ করে সুশান্ত স্যারকে ফ্যানে ঝুলতে দেখি। সুশান্ত স্যার তার কুর্তা ব্যবহার করেছিলেন ফ্যানে ঝুলার জন্য। এটা স্পষ্ট যে তিনি নিজেই গলায় কুর্তা বেঁধেছিলেন।’

নীরজ আরও জানান, তাদের সবার সহযোগিতায় অভিনেতার দেহ নামিয়ে আনেন সিদ্ধার্থ। সুশান্তের বোন যখন বাসায় প্রবেশ করে তখন তিনজন মিলে সুশান্তের বুকে চাপ দিচ্ছিল নিঃশ্বাস স্বাভাবিক রাখার জন্য। কিন্তু সেটা অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। ততক্ষণে মৃত্যু হয়ে গেছে সুশান্তের। তার শরীর অনেক ঠাণ্ডা ছিল।

মৃত্যুর আগের দিন রাতে সুশান্ত কি করেছিলেন জানতে চাইলে নীরজ বলেন, আগের রাতে সুশান্ত রাতের খাবার খাননি। কেবল এক গ্লাস আমের মিল্কশেক চেয়েছিলেন। সেটি পান করেই তিনি ঘুমাতে গিয়েছিলেন এবং সকালে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম থেকে জেগেছিলেন।

নীরজের এই বক্তব্যের পর সুশান্ত ঠাণ্ডা মাথায় আত্মহত্যা করেছেন বলেই প্রমানিত হচ্ছে।

 

সুত্র: ইন্ডিয়া টুডে

আরও পড়ুন ::

Back to top button