চরিত্র হয়ে উঠতে নিজেদের কতটা বদলে ফেলেন তারকারা?
সিনেমার জগতে নায়ক বা নায়িকা হয়ে ওঠার জন্য গ্ল্যামার ধরে রাখতে কতই না কসরত করতে হয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের। রোজ ভোরে উঠেই জিমে বা সমুদ্রসৈকতে দৌড়ানো, ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখতে রূপচর্চা ছাড়াও দেহ সুঠাম রাখার জন্য বাদ দিতে হয় কত না প্রিয় খাবার! প্রত্যেক দিনের অধ্যবসায়ে তৈরি হয় এক এক জন তারকা।
কিন্তু এই রূপ-লাবণ্য, সুঠাম দেহ বাজি রেখে যখন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা চরিত্র হয়ে ওঠেন, কতটা বদলে ফেলতে হয় নিজেদের? কতটা কষ্ট তাদের করতে হয় সাধারণ মানুষের সংগ্রামী জীবনকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে? কখনো হয়ত তাদেরকে মেদ জমাতে হয়, কখনো আবার রোদে পুড়ে নষ্ট করতে হয় ত্বক।
‘সুপার থার্টি’ ছবিতে হৃতিক রোশন এক শিক্ষকের চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে নিজের শারীরিক পেশির গঠন থেকে সরে গিয়ে জোর দিয়েছেন মস্তিস্কে। জিম করা বডি এ চরিত্রের জন্য উপযুক্ত না হওয়ায় জিম ছেড়ে শুধু ডায়েট করেই চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। শিক্ষক আনন্দ কুমারকে পর্দায় যথাযথ ফুটিয়ে তুলতে তার সঙ্গে সময়ও কাটিয়েছেন। অবশেষে পেয়েছেন সাফল্য।
সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘কবীর সিং’ ছবির জন্য কসরত করেছেন শাহিদ কাপুরও। ছবিতে নেশাগ্রস্তর চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে দিনে টানা ২০ বার ধূমপান করেছেন শাহিদ। যেখানে বাস্তব জীবনে তিনি নেশার ধারেপাশেও নেই। তাছাড়া, কবীর চরিত্রের জন্য তৈরি হতে ৮ কিলো ওজনও বাড়াতে হয়েছিল শাহিদকে। ছবির পরে ফের কসরত করে তা ঝরিয়েও ফেলেছেন তিনি।
অন্যদিকে, ‘লাল কাপ্তান’ ছবিতে সাঈফ আলি খানের নাগা সাধুর লুকও সাধারণ নয়। অভিজাত নবাবের পক্ষে এমন লুক নিয়ে আসা কঠিন। আবার ‘বালা’ ছবিতে আয়ুষ্মান খুরানাকে দেখা যাবে অসময়ে টাক পড়ে যাওয়ার সমস্যার মোকাবেলা করতে। তবে মাথা না কামিয়ে আয়ুষ্মান প্রস্থেটিক মেকআপের সাহায্যে তা করতে চান।
এই মেকআপের সাহায্য নিয়েই দীপিকা পাড়ুকোন ‘ছপাক’ ছবিতে অ্যাসিড আক্রান্ত লক্ষ্মী অগরওয়াল হয়েছেন। যে কোনও সাধারণ মানুষই নিজের এমন রূপ কল্পনা করে হয়ত শিউরে উঠবেন। একটা চরিত্রের জন্য নিজের গ্ল্যামার জলাঞ্জলি দিয়ে একেবারে সেই মানুষটি হয়ে ওঠা মোটেও সহজ কাজ নয়। কিন্তু অভিনেতা-অভিনেত্রীর সেই বদলে যাওয়া রূপটিই পর্দায় পাচ্ছে তুমুল জনপ্রিয়তা। জনমনকে ছুঁয়ে যাচ্ছে এই সাধারণ বর্ণহীন জীবনই, গ্ল্যামারের খোলস নয়।