আন্তর্জাতিক

মার্কিন নির্বাচনে ইভাঙ্কাকে নিয়ে আলোচনার কারণ

মার্কিন নির্বাচনে ইভাঙ্কাকে নিয়ে আলোচনার কারণ

ইভাঙ্কা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম স্ত্রী ইভানার সন্তান। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সন্তানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত তিনি। প্রথম দিকে মডেলিং করতেন। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

ট্রাম্পের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘দ্য অ্যাপ্রেনটিস’-এর একজন বিচারক ছিলেন। এখন ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট। ইভানকাকে পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী ভাবা হয়। ট্রাম্পকে বিভিন্ন বিষয়ে উপদেশ ও পরামর্শ দেন তিনি। আড়াল থেকে অনেক বিষয়ে কলকাঠি নাড়েন মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই সিনিয়র উপদেষ্টা। বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে পিতাকে সাহায্য করতে উঠে পড়ে লেগেছেন তিনি। গতবারের মতো এবারও নির্বাচনী প্রচারণায় পিতার রাজনৈতিক মঞ্চে, একেবারে সামনের সারিতে ইভঙ্কা।

চার বছর আগে স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প নন, বরং কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্পই প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম ঘোষণা করেছিলেন। নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন বিশ্বের ক্ষমতাধর ১০০ জন নারীর যে তালিকা তৈরি করেছিলো তাতে ১৭ নম্বরে স্থান করে নিয়েছিলেন ইভাঙ্কা ট্রাম্প। এই ম্যাগাজিনের ইতিহাসে এই প্রথম শত নারীর তালিকায় কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্ত্রীর পরিবর্তে তার কোন কন্যা সেখানে জায়গা করে নিলেন।

সেসময় বিশ্লেষকরা এও মন্তব্য করেছিলেন যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে মি. ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প ফার্স্ট লেডি হবেন ঠিকই, কিন্তু কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্পকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে দেখা যেতে পারে।

পরে সেরকমই হয়েছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনের পর তার দুই ভাই ডোনাল্ড জুনিয়র এবং এরিক ট্রাম্প যখন তাদের পিতার পারিবারিক ব্যবসা সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, ইভাঙ্কা তখন তার পিতার সঙ্গে ওয়াশিংটনে চলে আসেন।

নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, নির্বাচিত হলে তিনি কোন কোন নারীকে তার মন্ত্রিসভায় স্থান দেবেন? ট্রাম্পের উত্তর ছিলো এজন্য আমাদের সঙ্গে অনেকেই আছেন। তবে সবাই বলবে ইভাঙ্কাকে নাও, ইভাঙ্কাকে নাও।

আরও পড়ুন : সৌদি আদালতের রায় নিয়ে যা বললেন খাসোগির তুর্কি বাগদত্তা

মন্ত্রী হননি ইভাঙ্কা ট্রাম্প, কিন্তু হয়েছেন হোয়াইট হাউজের প্রভাবশালী ব্যক্তি- প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একজন শীর্ষস্থানীয় উপদেষ্টা। সরকার পরিচালনা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক নেতাদের সঙ্গে সভাতেও তার বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আনুষ্ঠানিক এসব বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট অনেক সময় তাকে ”বেবি” বলেও সম্বোধন করেন।

ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও তার স্বামী জ্যারেড কুশনার- দুজনেই আবির্ভূত হন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই জামাতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

তিন সন্তানের মা ইভাঙ্কা ট্রাম্পের বয়স এখন ৩৮। ইভাঙ্কা ট্রাম্পের বড় ভাই ডোনাল্ড জুনিয়র একবার বলেছিলেন যে তার বোন তার পিতার খুবই প্রিয় সন্তান। তাকে দেখা হয় ড্যাডিস লিটল গার্ল বা পিতার আদরের ছোট কন্যা হিসেবে।

এমনও বলা হয় যে তারা যখন একজন আরেকজনের কাছ থেকে দূরে থাকেন তখন তারা দিনে পাঁচবারও কথা বলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই কন্যা তার অত্যন্ত বিশ্বস্ত একজন উপদেষ্টা। নিজের পরিবর্তে ইভাঙ্কা ট্রাম্পকে কয়েকজন আন্তর্জাতিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করতেও পাঠিয়েছেন তিনি।

তাদের মধ্যে রয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্ড। শুধু তাই নয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন গুরুত্বপূর্ণ দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সেখানেও অনেক সময় ইভাঙ্কা ট্রাম্প উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রীয় সফরের সময় জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিঞ্জো আবে এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে বৈঠকেও তাকে দেখা গেছে।

ইভাঙ্কা ট্রাম্পের জন্ম নিউ ইয়র্ক শহরে, ১৯৮১ সালে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রথম স্ত্রী চেক মডেল ও ফ্যাশন ডিজাইনার ইভানা ট্রাম্পের ঘরে তার জন্ম। ইভাঙ্কা ট্রাম্পের বয়স যখন ১০ তখন তার পিতা মাতার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এই সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়া নিয়ে সেসময় মিডিয়াতে প্রচুর লেখালেখি হয়। তার বেশিরভাগই ছিলো মুখরোচক গল্প।

বিবাহ বিচ্ছেদের বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিলো এবং তার পর থেকেই ইভাঙ্কা ট্রাম্প লোকজনের আলোচনায় চলে আসেন। অল্প কিছু সময়ের জন্য তিনি মডেলিং জগতে সক্রিয় ছিলেন। সেটা ১৯৯৭ সালের ঘটনা। তার এই পেশা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বহু নামী দামী ব্র্যান্ডের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। অনেক ম্যাগাজিনেই ছাপা হয়েছে তার ছবি।

আরও পড়ুন : মার্কিন সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন আক্রমণ ট্রাম্পের

দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন ইভাঙ্কা ট্রাম্প। প্রথমে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে দুবছর পড়ার পর তিনি পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান, যেখানে তিনি ২০০৪ সালে তার গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।

জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে ২০০৯ সালে বিয়ে হওয়ার পর তিনি ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করেন। ইভাঙ্কা ট্রাম্পের শ্বশুর তার পিতার মতোই নিউ ইয়র্কের একজন প্রখ্যাত রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী।

ট্রাম্প হোটেল ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ইভাঙ্কা ট্রাম্প। ট্রাম্প তার ব্যবসা দেখাশোনা করার ব্যাপারে ইভাঙ্কা ট্রাম্পকে এমন ক্ষমতা দিয়েছিলেন যা তিনি তার কোন স্ত্রীকে কখনো দেননি।

ভাইদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পিতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভাইস-প্রেসিডেন্টও হয়েছিলেন ইভাঙ্কা ট্রাম্প। এও বলা হয় যে ট্রাম্প অর্গাইনেজশনের বড় বড় কিছু চুক্তির বেলায় তিনি পালন করেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ট্রাম্প হোটেলের প্রসারে তিনি সাহায্য করেছেন। ভূমিকা রেখেছেন হোটেলের অভ্যন্তরীণ ডিজাইন তৈরিতে এবং আন্তর্জাতিক রিয়েল এস্টেট ব্যবসাও তিনি দেখাশোনা করেছেন।

পাশাপাশি তিনি তার নিজের নামে একটি ফ্যাশন লাইনও চালু করেন যা পরে জনপ্রিয় হয়েছিলো। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিভিন্ন কোম্পানি যখন ট্রাম্প ব্র্যান্ড বয়কটের আন্দোলনে নামে, তখন কিছু কিছু খুচরো বিক্রেতা তার ফ্যাশন লাইন পরিত্যাগ করে। কিন্তু এই ফ্যাশন ব্র্যান্ডের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, বয়কট আন্দোলন সত্ত্বেও পরের দিকে তাদের কোম্পানির বিক্রি বেড়ে গেছে।

ইভাঙ্কা ট্রাম্প দুটো বই লিখেছেন। একটির নাম দ্য ট্রাম্প কার্ড, যা ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয়। কর্মজীবী নারীদের ওপর তার আরো একটি বই এখন প্রকাশের অপেক্ষায়।

ডোনাল্ড ট্রাম্প টেলিভিশনে এপ্রেন্টিস নামে যে রিয়েলিটি শো পরিচালনা করতেন তাতেও বিচারকের ভূমিকা পালন করেছেন ইভাঙ্কা ট্রাম্প। এর পর তিনি ট্রাম্প অর্গানাইজেশনে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ান। কিন্তু তার পরেও তিনি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি থেকে তাকে নিয়মিত বেতন ভাতা দেওয়া হয়। জানা যায় যে ট্রাম্প অর্গানাইজেশন ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনায় দুই ভাইকেও সাহায্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন : বাজারে এলো রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন

ইভাঙ্কা ট্রাম্প তার ফ্যাশন লাইনের নিয়ন্ত্রণও তুলে দেন কোম্পানির প্রেসিডেন্টের হাতে এবং সম্পদের দেখাশোনার জন্য তিনি একটি ট্রাস্ট গঠন করেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক ও বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে পিতার পাশে ইভাঙ্কা ট্রাম্পের উপস্থিতি দিনে দিনে বৃদ্ধি পেয়েছে। হোয়াইট হাউজের ওয়েস্ট উইং-এ তাকে অফিস দেওয়া হয়েছে, হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে যোগ দেওয়ার বিষয়ে নিরাপত্তাজনিত অনুমতিও দেওয়া হয়েছে।

সেখানে তিনি বিনা বেতনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একজন বিশেষ সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু পিতার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে সিবিএস টেলিভিশনকে ইভাঙ্কা ট্রাম্প বলেছিলেন যে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনে যোগ দেবেন না, বরং তিনি যে তার একজন কন্যা সে বিষয়টির উপরেই তিনি বেশি জোর দেবেন।

কিন্তু পরে দেখা গেল অন্য ঘটনা। সময়ের সাথে সাথে কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও তার জামাতা জ্যারেড কুশনার দেশের ভেতরে ও বাইরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ ও দৃশ্যমান সহযোগী হয়ে উঠলেন।

ট্রাম্প প্রশাসনে নিজের ভূমিকার জন্য ইভাঙ্কা ট্রাম্প প্রশংসিত ও সমালোচিত দুটোই হয়েছেন। আন্তর্জাতিক নেতাদের সঙ্গে ইভাঙ্কা ট্রাম্পের বৈঠক এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে অন্যান্য নেতাদের বৈঠকে তার উপস্থিতি নিয়ে যেমন সমালোচনা হয়েছে তেমনি হোয়াইট হাউজে তার অঘোষিত ভূমিকার জন্যও তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছেন। অনেকেই এটিকে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট বা স্বার্থের সংঘাত বলে উল্লেখ করেছেন।

তার স্বামী মি. কুশনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি চুক্তির বিষয়ে উদ্যোগ নিতে। অনেকেই মনে করেন জ্যারেড কুশনারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের রাজধানী তেল আভিব থেকে জেরুসালেমে সরিয়ে আনা হয়েছে, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের মধ্যে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ইভাঙ্কা ট্রাম্প সপরিবারে ওয়াশিংটন চলে আসেন। স্বামী জ্যারেড কুশনারের কারণেও হোয়াইট হাউজে আরো বেশি প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন ইভাঙ্কা ট্রাম্প।

ইভাঙ্কা ট্রাম্প আগের বারের নির্বাচনী প্রচারণায় কর্মজীবী নারীদের অধিকারের জন্য বক্তব্য রেখে গেছেন। তিনি বলেছেন নারীদের সমান মজুরি এবং মাতৃকালীন সময়ে বেতনসহ ছুটি আদায়ের ব্যাপারে তিনি কাজ করে যাবেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নারীদের ব্যাপারে অশোভন মন্তব্য, আচরণ এবং যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ইভাঙ্কা ট্রাম্প সেসময় তার পিতার পাশে দাঁড়িয়েছেন।

একজন সফল ব্যবসায়ী ও মাতা হিসেবে তিনি নারী ভোটারদের আহবান জানিয়েছেন তার পিতাকে ভোট দেওয়ার জন্য। ইভাঙ্কা ট্রাম্পও তার পিতাকে খুব ভালোবাসেন। সানডে টাইমস ম্যাগাজিনকে তিনি একবার বলেছিলেন যে তার পিতাও নারীবাদের সমর্থক। তিনি বলেছেন, একারণেই আমি আজকের এই নারী।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও গতবার আইওয়াতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে বলেছিলেন, সে সব সময় এজন্য চাপ দিচ্ছে। সে বলে ড্যাডি ড্যাডি, এটা আমাদের করতে হবে। সে বুদ্ধিমতী এবং সঠিক।

পিতার বিতর্কিত কিছু কাজের বিরুদ্ধে কথা না বলার কারণেও ইভাঙ্কা ট্রাম্পের সমালোচনা হয়েছে। তবে এর জবাব দিতে গিয়ে সিবিএসকে তিনি একবার বলেছিলেন, আমি কোথায় কোথায় আমার পিতার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি সেটা তিনি জানেন।

তিনি বলেন যে তার এই ভিন্নমতের কথা তিনি তার পিতাকে শান্তভাবে, সরাসরি ও স্বাভাবিক ভাবে জানিয়ে দেন। ইভাঙ্কা ট্রাম্প ২০১৮ সালের শুরুর দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকের সমাপনী অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

এর কয়েক মাস পরে তার পিতা বলেছিলেন যে তাকে তিনি জাতিসংঘের দূতের দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠবে বলে তিনি সেটা করা থেকে বিরত থেকেছেন।

আরো এক বছর পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার মেয়েকে বিশ্বব্যাংকের প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দিলে ইভাঙ্কা ট্রাম্প সেটি ফিরিয়ে দেন। তার নিজের ব্যক্তিগত ইেমইল অ্যাকাউন্ট থেকে শত শত কর্মকর্তাকে ই-মেল পাঠানো হলে ইভাঙ্কা ট্রাম্প কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন। কিন্তু ২০১৬ সালে তার পিতা এই একই কারণে হিলারি ক্লিনটনের সমালোচনা করেছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা কালে হিলারি ক্লিনটন তার ব্যক্তিগত ই-মেল ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন বলে মি. ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন।

ওসাকায় শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে তার যোগদানের ঘটনা নিয়েও অনেক বিতর্ক হয়েছে। ফরাসী প্রেসিডেন্ট সেসময় একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন যাতে ইভাঙ্কা ট্রাম্পকে বিশ্ব নেতাদের আলোচনায় যোগ দিতে দেখা গেছে।

আর সবশেষে ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও তার পরিবার করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে নিউ জার্সিতে ভ্রমণ করায় তার বিরুদ্ধে গাইডলাইন ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। করোনাভাইরাসের ওই গাইডলাইনে লোকজনকে ঘরে অবস্থান করতে বলা হয়েছিল।

পরে হোয়াইট হাউজ তার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছে, এই ভ্রমণ বাণিজ্যিক কারণে ছিলো না। কিন্তু তার কন্যার এই ভ্রমণের অল্প কিছু আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টুইট করে অনুরোধ করেছিলেন, আপনারা যারা বাড়িতে থাকার মতো ভাগ্যবান, অনুগ্রহ করে তারা সেটা করুন।

তবে সোশাল মিডিয়া ব্যবহারের বিষয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প তার পিতার চেয়েও অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করেন। ইন্সটাগ্রামে তার ৬৬ লাখ অনুসারী।

টুইটারে ৯৩ লাখ। এসব অ্যাকাউন্টে তিনি তার পরিবারের ছবি ও মহান ব্যক্তিদের বানী পোস্ট করে থাকেন। গত নির্বাচনের আগে ইভাঙ্কা ট্রাম্পের রাজনীতিতে কোন অভিজ্ঞতা ছিলো না। অভিজ্ঞতা ছিলো না পিতা ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও। কিন্তু গত চার বছরে পিতা-কন্যা দুজনেরই বহু অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে।

কসমোপলিটান নামের একটি ম্যাগাজিন একবার ইভাঙ্কা ট্রাম্পের কাছে জানতে চেয়েছিল কখনও তিনি প্রেসিডেন্ট হতে চাইবেন কিনা। ইভাঙ্কা ট্রাম্পের উত্তর ছিলো আমার মনে হয় না। কিন্তু আমি জীবন থেকে শিখেছি ‘নেভার সে নেভার’ অর্থাৎ কখনোই ‘কখনো না’ বলতে হয় না।

আরও পড়ুন ::

Back to top button