১২টি অপ্রচলিত কিন্তু কার্যকর স্বাস্থ্যগত পরামর্শ
স্বাস্থ্যগত বিষয়ে আমাদের রয়েছে প্রচুর ভুল ধারণা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপনে এমন সব তথ্য উল্লেখ করে, যা আমাদের ক্ষতি করে। এসব ভুল ধারণা বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যগত বিষয়ে ১২টি কার্যকর পরামর্শ থাকছে এ লেখায়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হাফিংটন পোস্ট।
১. ভালো বিশ্রামের জন্য ১ কাপ কফি
দিনের বেলা ভালো বিশ্রামের জন্য ২০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন (১-২ কাপ কফি) গ্রহণ করে সঙ্গে সঙ্গে ২০ মিনিটের বিশ্রামে গেলে এর ফল পাওয়া সম্ভব। জাপানি এক গবেষণায় দেখা গেছে, এভাবে বিশ্রাম করা হলে তা আপনাকে আগের তুলনায় বেশি কর্মক্ষম করে তুলবে।
২. খাওয়ার পর দ্রুত দাঁত ব্রাশ নয়
আপনার খাওয়া শেষ হলে দ্রুত দাঁত ব্রাশ করবেন না। এতে দাঁতের এনামেলের ক্ষতি হয়। বিশেষ করে খাবারটি যদি অ্যাসিড ধরনের হয় তাহলে তা দাঁতের বেশি ক্ষতি করবে। কারণ অ্যাসিড ধরনের খাবার বিশেষ করে রসালো টক ফল, স্পোর্টস ড্রিংক্স, টমেটো, সোডা ইত্যাদি দাঁতের এনামেল নরম করে দেয়। তারপর দাঁত ব্রাশ করলে এনামেলের স্তর উঠে গিয়ে দাঁতের ক্ষতি করে। এ কারণে খাবার পর আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
৩. ছোট সাইজের পোশাক পরতে হলে ওজন তুলুন
আপনার যদি ছোট সাইজের পোশাক পরার আগ্রহ থাকে তাহলে শুধু ওজন কমানোর চেষ্টা না করে বরং ওজন তোলার মতো শারীরিক পরিশ্রম করা যেতে পারে। কারণ ওজন তুললে তাতে দেহের চর্বির স্থান নেবে মাংসপেশী। আর মাংসপেশী কম জায়গা নেয়।
৪. খাবার কমানোর জন্য বেশি করে খান
কিছু খাবার আছে, যা খেলে আপনার ওজন দ্রুত বেড়ে যায়, আবার কিছু খাবার আপনার ওজন সেভাবে বাড়ায় না। কিছু খাবার রয়েছে, যা অন্য খাবার খাওয়ার রুচি নষ্ট করে। এখন আপনি যদি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তাহলে অনেক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। যেমন সামান্য কার্বোহাইড্রেট আপনার ক্ষুধা বাড়িয়ে আরও কার্বোহাইড্রেট খেতে উৎসাহিত করবে। কিন্তু চীনাবাদাম, মাখন, পনির ও আপেল আপনার ক্ষুধা কমিয়ে দেবে।
৫. ক্লান্ত অবস্থায় এনার্জি ড্রিংক্স বাদ দিন
কফির তুলনায় পাঁচ গুণ ক্যাফেইন রয়েছে এনার্জি ড্রিংক্সে। আর এটি পান করলে আপনার দেহে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। হৃৎস্পন্দন বাড়ানোসহ নার্ভাস সিস্টেমের ওপরও প্রভাব বিস্তার করে এগুলো। এতে আপনার রক্তের চিনির পরিমাণ দ্রুত বেড়ে গেলেও তা কিছুক্ষণের মধ্যে কমে যায়, ফলে আরও এনার্জি ড্রিংক্স পান করার ইচ্ছা জাগ্রত হয়।
৬. ঘামলে বেশি করে পানি পান করুন
শরীর যদি ঘেমে যায় তাহলে অনেকেই পানি পান করতে নাও আগ্রহী হতে পারেন। কিন্তু বিষয়টি মোটেও ঠিক নয়। কারণ এ ধরনের পরিস্থিতিতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
৭. ওজন কমাতে ডায়েট সোডাও বাদ দিন
অনেকেই ওজন কমানোর জন্য ‘ডায়েট’ লেবেল দেখে নানা পানীয় কিনে থাকেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো এগুলো কার্যকর নয়। বরং অনেকাংশে একই কাজ করে।
৮. ঠাণ্ডা হওয়ার জন্য গরম পানীয়
গরমকালে আপনার দেহ ঠাণ্ডা করার জন্য কি পান করবেন- গরম নাকি ঠাণ্ডা? সম্প্রতি দুটি গবেষণায় দেখা গেছে গরমকালে গরম চা-কফি পান করলে তা দেহের তাপমাত্রা কমাতে সহায়তা করে। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, সামান্য পরিমাণে গরম পানীয় পান করলেই তা আপনার দেহের তাপমাত্রা সেন্সরগুলোতে ধরা পড়ে এবং দেহ ঠাণ্ডা করার জন্য বাড়তি উদ্যোগ নেয় (যেমন বাড়তি ঘাম)। ফলে দেহের তাপমাত্রা কমতে থাকে।
৯. ক্লান্তি দূল করার জন্য ব্যায়াম করুন
কর্মব্যস্ত দিনের শেষে বাড়িতে পৌঁছে আপনি যে কাজটি কোনোক্রমেই আর করতে চাইবেন না, তা হলো ব্যায়াম। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, ক্লান্তি দূর করার জন্য এ কাজটিই করা উচিত। কারণ ৩০ মিনিটের হালকা একটি ব্যায়াম সেশন করা হল আপনার দেহ অনেক বেশি অক্সিজেন গ্রহণ করবে। আর এ অক্সিজেনই আপনার ক্লান্তি দূর করে দেবে। এতে মানসিক প্রশান্তিও আসবে।
১০. স্মৃতিশক্তি বাড়াতে লিখুন
আধুনিক নানা ডিজিটাল উপকরণের কারণে আমাদের লেখালেখির অভ্যাস বর্তমানে চলেই যাচ্ছে। কিন্তু এটি স্মৃতিশক্তির জন্য ক্ষতিকর। আপনি যদি কোনো বিষয় আত্মস্থ করার পর লিখে রাখেন তাহলে মস্তিষ্ক বিষয়টি ভালোভাবে ধারণ করে। এতে বিষয়টি মনে রাখাও সহজ হয়।
১১. সম্পর্ক গাঢ় করার জন্য দূরে থাকুন
একটার পর একটা সামাজিক অনুষ্ঠানে গিয়ে সামাজিকতা করার চেষ্টা করলে তা অনেক সময় হিতে বিপরীত হয়। তার বদলে কিছু সময় সবার থেকে দূরে থেকে সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করতে হয়। এতে নিজের সম্পর্কে জানার পাশাপাশি অন্যদের সম্পর্কেও চিন্তাভাবনা করা সহজ হয়। ফলে আপনার মানসিক চাপ ও উদ্বেগ দূরে চলে যায় এবং ঠাণ্ডা মাথায় সম্পর্কগুলো ঝালিয়ে নেওয়া সহজ হয়।
১২. সুস্থ থাকার জন্য অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান বাদ দিন
কিছু সাবান ও হ্যান্ডওয়াস রয়েছে, যেগুলো ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তোলে বলে দাবি করে। তবে এগুলো বাস্তবে জীবাণু প্রতিরোধে তেমন পার্থক্য তৈরি করতে না পারলেও দীর্ঘদিন ব্যবহারে মানবদেহের ক্ষতি করতে পারে।