কলকাতা

ঐক্য বাংলা’র প্রতিবাদের জের ; পিছু হটল কেন্দ্র ,দুর্গাপুজোর সময় হচ্ছে না নির্ধারিত UGC NET পরীক্ষা

ঐক্য বাংলা'র প্রতিবাদের জের ; পিছু হটল কেন্দ্র ,দুর্গাপুজোর সময় হচ্ছে না নির্ধারিত UGC NET পরীক্ষা

নিজস্ব সংবাদদাতা , কলকাতা : সমগ্র ভারতে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও অন্যান্য পদের শিক্ষকদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয় UGC NET পরীক্ষার মাধ্যমে। গত শুক্রবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়। সেখানে দেখা গিয়েছিল যে সেই পরীক্ষার সময়সূচিতে রয়েছে ২১শে অক্টোবর ও ২২শে অক্টোবর যা আসলে দুর্গাষষ্ঠী ও দুর্গাসপ্তমী ।

এর পর থেকেই প্রতিবাদে সরব হয়েছিল বাংলার প্রথম মুক্তপন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন ‘ঐক্য বাংলা’ও।

অবশেষে ‘ঐক্য বাংলা’ সহ আপামর বাঙালি সমাজের তীব্র প্রতিবাদে নতিস্বীকার করল কেন্দ্র। গতকাল অর্থাৎ ২১শে সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে NET কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় যে ২১,২২ ও ২৩ অক্টোবর নির্ধারিত পরীক্ষা হবে না।

কিভাবে এই সাফল্য অর্জন করল ‘ঐক্য বাংলা’ ?

‘ঐক্য বাংলা’ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতী সুলগ্না দাশগুপ্ত জানান , ” এই তথাকথিত বাঙালি বিরোধী বিজ্ঞপ্তিটি আমাদের নজরে আসে গত শনিবার অর্থাৎ ১৯শে সেপ্টেম্বর। সেই দিনই আমরা সামাজিক মাধ্যমে দুর্গাপুজোর সময় পরীক্ষা নেওয়ার ঘৃণ্য সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আমাদের স্বল্প পরিসরে এই বাঙালি বিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করতে শুরু করি।

আমরা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে , কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তরে ও সংশ্লিষ্ট NET কর্তৃপক্ষকে ইমেইল করি। পরের দিন অর্থাৎ ২০শে সেপ্টেম্বর সেই মেলের বয়ান আমরা আমাদের সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করে আমাদের সদস্য ও সমর্থকদের এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ করি। সমগ্ৰ বাঙালি জাতির সম্মিলিত প্রতিবাদের জেরেই কেন্দ্র এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হল । ”

আরও পড়ুুন: মুখ্যমন্ত্রী কৃষকদের নিয়ে কুমিরের কান্না কাঁদবেন না, তোপ রাজ্যপালের

তবে কি শুধুমাত্র গণ ইমেইল কর্মসূচির মাধ্যমেই কি ‘ঐক্য বাংলা’ এই সাফল্য অর্জন করল ?

উত্তরে ‘ঐক্য বাংলা’ সংগঠনের অন্যতম নেতৃস্থানীয় সদস্য অভিজিৎ গুহ নিয়োগী বলেন , ” গণ ইমেইল কর্মসূচি অবশ্যই একটি কার্যকরী উপায়। সামাজিক মাধ্যমে উপযুক্ত জায়গায় প্রতিবাদ করলে সাফল্য লাভ করলে যে অধিকার আদায় করা সম্ভব তা তো বোঝাই যাচ্ছে।”
এখানে না থেমে অভিজিৎ বাবু আরো যোগ করেন , ” সামাজিক মাধ্যমে , বহুমুখী অনলাইন কর্মসূচির মাধ্যমে যে অধিকার আদায় করা সম্ভব, সেই বিষয়ে ‘ঐক্য বাংলা’ সকলকে পথ দেখাল। ”

এই সাফল্যে কি ভাবছে ‘ঐক্য বাংলা’ ?

ঐক্য বাংলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সৌম্য চৌধুরী সোজাসুজি বলেন , ” আমরা আমাদের জন্মলগ্ন থেকে বাঙালি সহ সকল বাংলার ভূমিসন্তানদের জন্য লড়াই করছি। যেখানে , যে বিষয়ে বাংলা বিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অথবা বাঙালি বিদ্বেষী মনোভাব দেখা গিয়েছে , আমরা আমাদের সাধ্যমত লড়াই করে গিয়েছি। ভবিষ্যতেও এই নীতি থেকে আমরা সরব না” , সাফ জানান সৌম্য বাবু।

তবে বিষয়টিকে একটু অন্যভাবে দেখছেন ঐক্যযোদ্ধা দেবায়ন সিংহ। এই তরুণ সদস্যের কথায় , বিষয়টা পুরোটাই রাজনৈতিক ।দেবায়ন বলেন , ” এটা তো বোঝাই যাচ্ছে বিষয়টা পুরোটাই রাজনৈতিক। আসলে নাড়ি টিপে দেখে নেওয়া হচ্ছে বাঙালির আবেগে আঘাত করলে সে কিভাবে প্রত্যুত্তর দেয়। সেই অনুযায়ী আগামী নির্বাচনগুলোতে তারা তাদের কৌশল ঠিক করবে। তবে বাংলায় বাংলার ভূমিসন্তানদের কথা ভেবে যদি কোনো রাজনৈতিক দল কৌশল প্রয়োগ করে , তবে বুঝতে হবে যে বাংলা জাতীয়তাবাদী ভাবধারার রাজনীতিই ভবিষ্যতে মূলস্রোতের রাজনীতি হয়ে উঠবে।”

অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যেভাবে একের পর এক বিভিন্ন ইস্যুতে যেভাবে মাটি কামড়ে লড়াই করে , জনমত তৈরি করে , শুধুমাত্র সামাজিক মাধ্যমে , বিভিন্ন অনলাইন কর্মসূচির মাধ্যমে অধিকার আদায় করছে ‘ঐক্য বাংলা’ , তাতেই বোঝাই যাচ্ছে সাত মাস বয়সী বাংলার প্রথম মুক্তপন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠনটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করেই বাঙালি জাতীয়তাবাদী পরিসরে আত্মপ্রকাশ করেছে।

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button