Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
জীবন যাত্রা

মাস্ক পরে যদি ‘মাস্কনি’ হয়

মাস্ক পরে যদি ‘মাস্কনি’ হয়

মাস্ক ব্যবহারে কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষা পাওয়া গেলেও এটি ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে। চিকিৎসকরা এই ব্রণকে ‘মাস্কনি’ বলেন। যাদের মুখমণ্ডলে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বেশি তাদের মাস্কনি হওয়ার ঝুঁকিও বেশি।

ইউটি হেলথ সান অ্যান্টনিওর ডার্মাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জেনিফার রেজসি মানওয়ারিং বলেন, ‘কাপড়ে মুখমণ্ডল ঢাকলে তাপ, আর্দ্রতা, মেকআপ, তেল ও অন্যান্য নোংরা জমে। ফলে ত্বকে ব্রণ, রোসাসিয়া ও অন্যান্য র‌্যাশ উঠতে পারে।’ এখানে মাস্কনি প্রতিরোধের কিছু উপায় উল্লেখ করা হলো।

দিনে দু’বার মুখ ধুয়ে নিন: মাস্ক পরেন কিংবা না পরেন, মুখমণ্ডলের যত্ন না নিলে সহজেই ব্রণ ওঠতে পারে। কিন্তু প্রতিদিন মুখমণ্ডল ভালোভাবে ধুয়ে নিলে ব্রণের বিকাশ ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা ত্বক বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রু আলেক্সিস বলেন, ‘প্রতিদিন জেন্টেল ক্লিনসার দিয়ে দু’বার মুখমণ্ডল ধুয়ে নিলে ব্রণ বিকাশের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে। অনেক এত বেশি ব্যস্ত থাকেন যে দিনে দু’বারের বেশি মুখমণ্ডল ধোয়া সম্ভব হয় না।তাদের জন্য আমার সাজেশন হলো, তারা যেন সঙ্গে ফ্র্যাগরেন্স-ফ্রি বেবি ওয়াইপস, ওয়েট ফেসিয়াল ওয়াইপস অথবা অ্যাকনি ওয়াইপস রাখেন।’

উপযুক্ত মাস্ক ব্যবহার করুন: ডা. মানওয়ারিং বলেন, ‘যেসব মাস্ক নাক ও মুখকে সম্পূর্ণরূপে ঢেকে ফেলে তা ব্যবহারে বেশি আর্দ্রতা জমে ও ত্বকের সংস্পর্শে বেশি আসে, যেমন- এন৯৫ ও রেসপিরেটর স্টাইলের মাস্ক। এসব মাস্ক ভাইরাস থেকে সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা দেয়, কিন্তু এগুলো ত্বককে উক্ত্যক্তও করে বেশি। তাই নরম কাপড়ের মাস্ক পরতে পারেন। এতে ভাইরাসও প্রতিরোধ হবে, ত্বকের সংস্পর্শে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম হবে।’ ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের ত্বক বিশেষজ্ঞ শিল্পী খেতারপাল বলেন, ‘পলিয়েস্টার, নাইলন ও রেয়নের মতো সিন্থেটিক ম্যাটারিয়াল ব্যবহার করবেন না। এগুলো ব্যবহারে মাস্কের নিচে ঘাম জমে, যা থেকে ব্রণ ও অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে। যদি ঘরে মাস্ক তৈরি করেন, তাহলে সংক্রমণ এড়াতে মাস্কের বহির্ভাগে পুরু কাপড় ব্যবহার করুন ও ত্বকের সুরক্ষায় অন্তর্ভাগে নরম কাপড় রাখুন।’

আরও পড়ুুন: সেলফি দেখে ব্যক্তিত্ব চেনা

নিয়মিত মাস্ক ধুয়ে নিন: বেশিরভাগ মানুষই নিয়মিত মাস্ক ধোয়ার ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। কিন্তু ডা. খেতারপালের মতে, প্রতিদিনই কাপড়ের মাস্ককে ধোয়া উচিত ও মেডিক্যাল মাস্ক পরিবর্তন করতে হবে। মাস্কের ভেতর দৃশ্যমান নোংরা থাকলে অবশ্যই ধুতে হবে অথবা ফেলে দিয়ে নতুন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) মতে, প্রতি ব্যবহারের পর কাপড়ের ফেস মাস্ক ধুয়ে ফেলা উচিত। মাস্কের ভাইরাস ধ্বংস করতে ওয়াশিং মেশিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় সাধারণ ডিটারজেন্ট ব্যবহার করলে চলবে। অথবা সিডিসির মতে, এক লিটার জলে চার চা-চামচ ব্লিচ মিশিয়ে মাস্ক ভাইরাসমুক্ত করতে পারেন। মাস্ককে ব্লিচ মিশ্রিত জলে পাঁচ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন, তারপর সাধারণ জলে ধুয়ে নিয়ে ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।

মাস্ক মাঝে মধ্যে খুলে রাখুন: বাইরে সবসময় মাস্ক পরে থাকতে হবে এমনকোনো কথা নেই। ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে বাইরে থাকলেও লোকজনের অনুপস্থিতিতে মাস্ক খুলে নিলে সমস্যা নেই। রাস্তাঘাটে হাঁটার সময় আশপাশে কেউ না থাকলে মাস্ক খুলে ফেলতে পারেন। এতে ত্বক হাঁপ ছেড়ে বাঁচবে। ডা. আলেক্সিস প্রতি চার ঘণ্টায় ১০-১৫ মিনিট মাস্ক ব্যবহার না করতে পরামর্শ দিয়েছেন।

লোশন ব্যবহার করুন: কিছু লোশন ত্বক ও মাস্কের মধ্যে বেষ্টনি তৈরি করে ব্রণ বিকাশের ঝুঁকি কমাতে পারে। ডা. আলেক্সিস নন-কমিডোজেনিক ফেসিয়াল লোশন ব্যবহার করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। লোশনে যেন সিরামাইড, গ্লিসারিন ও হাইয়ালুরোনিক অ্যাসিডের মতো উপাদান থাকে। ডা. মানওয়ারিং বলেন, ‘মাস্কের ব্যবহারে ইতোমধ্যে ব্রণ বিকশিত হয়ে থাকলে কিছু লোশন এই অবস্থাকে আরো খারাপ করতে পারে। কড়া সুবাসের লোশন এড়িয়ে চলুন। ত্বকে শুষ্কতার প্রবণতা থাকলে পেট্রোলিয়াম জেলি বা ঘন ইমোলিয়েন্ট ব্যবহার করুন।’

মেকআপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন: ত্বককে সৌন্দর্যমণ্ডিত করতে মেকআপ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই ভাইরাস মহামারিতে দুই কারণে মেকআপের ব্যবহার এড়িয়ে যেতে পারেন। প্রথমত, ফেস মাস্ক পরলে সৌন্দর্য ঢাকা পড়ে যায়। দ্বিতীয়ত, মেকআপের ওপর ফেস মাস্ক ব্যবহার করলে ব্রণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এছাড়া মাস্কের কার্যকারিতায় নেতিবাচক প্রভাব না ফেলতেও মেকআপ পরিহার করতে হবে। ডা. মানওয়ারিং বলেন, ‘মুখমণ্ডলে মাস্ককে ভালোভাবে ধরে রাখতে মেকআপ বর্জন করা উচিত। কিন্তু চোখ ও কপালে মেকআপ ব্যবহার করতে পারেন।’

ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছে যান: মাস্কের ব্যবহারে ত্বকে বিকশিত ব্রণ বা রোসাসিয়ার অবস্থা আরো খারাপ হলে ও ঘরোয়া টোটকায় কাজ না হলে ত্বক বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button