পর্যটন

আকাশপথে ভ্রমণে করণীয়

আকাশপথে ভ্রমণে করণীয়

উড়োজাহাজ রানওয়ে স্পর্শ করেছে কেবল। সিটবেল্ট খুলতে বিমানবালার ঘোষণা এখনও আসেনি। কিছু মানুষের হুটোপুটি লেগে গেলো! সিটবেল্ট খুলে উঠে দাঁড়িয়ে মাথার উপরের কম্পার্টমেন্ট থেকে লাগেজ বা ব্যাগ নামানো শুরু করে দিলেন তারা। যেনো পারলে জানালা দিয়ে নিচে নেমে পড়েন এমন তাড়াহুড়ো! অধিকাংশ মানুষ বাস-ট্রেনে ভ্রমণ করে অভ্যস্ত, সেখানকার আদব-কেতা আলাদা। উড়োজাহাজে ভ্রমণ করেন একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষ। যারা নতুন ভ্রমণ করবেন তারা হয়তো অনেক কিছু না জেনে থাকতে পারেন। আবার অসংখ্যবার উড়োজাহাজে ভ্রমণ করেছেন কিন্তু জানেন না বা জানেন কিন্তু মানেন না এরকম সংখ্যাও কম নয়।

বহন-অযোগ্য জিনিসগুলো জেনে নিন:
আকাশপথে ভ্রমণের ক্ষেত্রে জিনিস বহনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যেমন- ছুরি, কাঁচি, বা যেকোনো ধারালো বস্তু, তরল বস্তু ইত্যাদি। সেগুলো জেনে নিন। এছাড়া জেনে নিন সর্বোচ্চ কত কেজি মালামাল বহন করতে পারবেন। সেই ভাবে ব্যাগ গোছান।

চেকিংয়ে সহায়তা করুন:
উড়োজাহাজে ওঠার আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেকিং হয়ে থাকে। লাইনে থাকা অবস্থায় দেখুন কীভাবে নিরাপত্তা কর্মীরা সেটি করছে। কোন কোন বস্তুগুলো আলাদা করে ট্রে-তে রাখতে বলছেন। সেইভাবে আপনিও প্রস্তুত থাকুন। কর্মীদের ওপর বিরক্ত হবেন না। আপনার ভ্রমণ আনন্দময় করতেই তারা এটি করছেন, তাদের সহায়তা করুন।

অতিরিক্ত সেলফি তুলে অযথা সময় নষ্ট নয়:
সেলফি ক্রেজ নিয়ে কিছু বলার নেই, এটি আমাদের জীবন-যাপনের অংশ। অনেকে উড়োজাহাজকে পেছনে রেখে সেলফি তুলতে পছন্দ করেন। কোনো ক্ষতি নেই, তুলুন। তবে অতিরিক্ত নয়। একবার ভাবুন, সব যাত্রীরা দুই-তিন মিনিট সময় নিলেও কতো সময় ব্যয় হবে!

ব্যাগ নিজের জায়গায় রাখুন: আপনার সিটি নির্দিষ্ট এবং ঠিক সিটের উপরে ব্যাগ রাখার জায়গাও। আপনার ব্যাগটি আপনার জন্য বরাদ্দ জায়গাতেই রাখুন এবং অন্যকে রাখতে সহায়তা করুন। অন্য সিটের উপরে আপনার একাধিক ব্যাগ রাখাটা মোটেও শোভন নয়।

ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহারে নিয়ম মেনে চলুন:
এটা সবসময়ই দেখা যায়, উড়োজাহাজ ওঠা ও নামার সময় অনেক ফোন করে বলেন, এই তো পে¬ন ছাড়লো, বা নামলো। মনে রাখবেন, উড়োজাহাজ আকাশে ওঠা ও নামার সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে হিসাব-নিকাশে পাইলট উড়োজাহাজ চালিয়ে থাকেন। আপনার মোবাইল ফোনটিও কাজ করে তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে মাধ্যমে। কাজেই আপনার একটি অপ্রয়োজনীয় ফোনকল মারাত্মক দুর্ঘটনা ডেকে আনতে পারে।

নিজে নিজেই সিট বদল করবেন না:
এটি ঠিক, উড়োজাহাজের সিট অনেকসময় খালি থাকে, আপনি চাইলে সেখানে বসতে পারেন। তবে নিজে নিজেই সিট পরিবর্তন করবেন না, কেবিন ক্রুকে জিজ্ঞেস করে তার পরামর্শ নিন।

সিট হেলান সতর্কভাবে:
সবার উচ্চতা সমান নয়। কেউ লম্বা, কেউ খাটো। সেই অনুযায়ী কারও পা লম্বা বা খাটো। হতেই পারে, আপনার পেছনে বসলেন একজন লম্বা ব্যক্তি। সেক্ষেত্রে সিট হেলানোর সময় দেখে নিন এবং তার কাজে শুনুন কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা। শুধু নিজেরটা না দেখে অন্যেরটাও দেখুন।

অপ্রয়োজনীয় কথা-বার্তা বলবেন না:
অনেকেই আছেন, মাঝপথে কেবিন ক্রু-কে ডেকে জিজ্ঞেস করেন, আমরা এখন কোথায় আছি, আর কতো সময় বাকি ইত্যাদি। এটি তার জানার কথা নয়। আর ভ্রমণের সময় আপনার বোর্ডিং পাসেই লেখা থাকে। এছাড়া কেউ গল্প করতে না চাইলে তাকে বাধ্য করবেন না।

তড়িঘড়ি করে নামা নয়:
ঘোষণা আসার পরপরই অধিকাংশ যাত্রীরা তাড়াহুড়ো শুরু করে দেন উড়োজাহাজ থেকে নামার জন্য। জরুরি অবস্থা ভিন্ন কথা, কিন্তু স্বাভাবিক সময়ে আগের যাত্রীকে আগে নামতে দিন। আপনি পাঁচ মিনিট আগে নেমেও সবাই প্রায় একই সঙ্গে যাবেন।

নিজের লাগেজ নিশ্চিত হয়ে নিন:
একই কোম্পানির একই সাইজ ও ডিজাইনের লাগেজ থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কাজেই সংগ্রহ করার সময় ভালোভাবে নিশ্চিত হয়ে নিন যেনো অদলবদল না হয়।

আরও পড়ুন ::

Back to top button