বিচিত্রতা

সাগরের নিচে ১০৩ বছর আগের সাবমেরিনের মিলল সন্ধান

সাগরের নিচে ১০৩ বছর আগের সাবমেরিনের মিলল সন্ধান

ভূমধ্যসাগরের তলদেশে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত ফ্রান্সের একটি সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পেয়েছে তিউনিসিয়ার ডাইভাররা। সম্প্রতি তারা ফ্রান্সের আঁরিয়ান নামক ওই সাবমেরিনের সন্ধান পায়। যেটি ১৯১৭ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির সাবমেরিন কর্তৃক ধ্বংস হয়েছিল। খবর এএফপির।

তিউনিসিয়ার বিজের্তের নিকটবর্তী ভূমধ্যসাগরের ক্যাপ বন নামক স্থানে সাগরের তলদেশে সন্ধান মিলেছে সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষটির। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিউনিসিয়ার বিজের্ত ফ্রান্সের দখলে ছিল।

তিউনিসিয়ার রাস আদার নামক একটি ডাইভিং ক্লাব তাদের ছাত্রদের নিয়ে ডাউভিং করতে গিয়েছিল সেখানে। তারা প্রথমবার ডাইভিং করার সময়ই ধ্বংসাবশেষটি দেখতে পায়।

এ বিষয়ে ডাইভিং ক্লাবটির পরিচালক সেলিম বাছার বলেন, ‘আমরা দেখে বুঝতে পেরেছি যে এটা কিছুর ধ্বংসাবশেষ। তবে বুঝতে পারিনি যে এটা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত সাব মেরিনের ধ্বংসাবশেষ। আর এটা যে ডাইভিং করতে গিয়ে আমরা খুঁজে পাবো তেমনটিও ভাবিনি। প্রথম ডাইভেই আমরা এটা দেশতে পাই।’

বর্তমানে এটি শেওলায় আবৃত। মাছ ও বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর আবাসস্থল। ডাইভিং করার সময় সেটার ছবি তুলে নিয়ে আসেন তারা। এরপর বিশেষজ্ঞদের দেখান এবং বিশেষজ্ঞরা এটিকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সের ব্যবহৃত সাবমেরিন বলে নিশ্চিত করেন। যেটার নাম আঁরিয়ান। যেটা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বিজের্তে ঘাটিতে রাখা ছিল।

বাছার আরো বলেন, ‘তিউনিসিয়ায় খুঁজে পাওয়া এটি তৃতীয় সাবমেরিন। তবে এটিই একমাত্র সাবমেরিন যেটা কিনা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিল। এটা সত্যিই বিস্ময়কর। ইতিহাস একেবারে আমাদের হাতে এসে ধরা দিলো।

আরও পড়ুন: মাত্র ৪৯ বছর বয়সেই ১৫০ সন্তানের বাবা তিনি!

এটি খুঁজে পাওয়ার পর আমরা সামরিক রিপোর্টগুলো মিনিট ধরে ধরে বিশ্লেষণ করেছি। সে সময় ভূমধ্যসাগরে যা যা ঘটেছিল সেগুলো জানার চেষ্টা করেছি। এগুলো খুঁজতে গিয়ে একটা সময় মনে হয়েছে যে ভাগ্যিস বিশ্বযুদ্ধের সময় আমি ছিলাম না। যুদ্ধের ভয়াবহতা আমার দেখতে হয়নি।’

অবশ্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সাবমেরিন খুঁজে পাওয়া সত্যিই অবাক করা বিষয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা আসলে স্বাভাবিক কোনো ঘটনা হয়। এমনটি খুব বেশি ঘটেও না। কারণ, সে সময় খুব বেশি জানার সুযোগ ছিল না যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ঠিক কোথায় কোন সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছিল কিংবা ডুবে গিয়েছিল।

মানুউবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ আলী আইত মিহুব বলেছেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিউনিসিয়া উপকূলে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল জার্মানির সাবমেরিন। এই অঞ্চলে তারা যুদ্ধের সময় ফ্রান্সের মিত্রদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা যাতে না পৌঁছায় সেটি নিশ্চিত করেছিল।

বিশ্বযুদ্ধের সময় তিউনিসিয়ার ৮০ হাজার মানুষকে ফ্রান্সে নেওয়া হয়েছিল বিশ্বযুদ্ধের সময় বিভিন্ন কারখানায় কাজে লাগানোর জন্য।

ফ্রান্সের সাবমেরিন অপারেটরদের সংঘঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সে সময় জার্মানির ইউ-বোট ফ্রান্সের সাবমেরিন আঁরিয়েনকে ধ্বংস করেছিল ঘাটিতে থাকা অবস্থায়। সাবমেরিনটিতে থাকা ২৯ জনের মধ্যে মাত্র ৮ জন প্রাণে বাঁচতে পেরেছিলেন।

আরও পড়ুন ::

Back to top button