রাজনীতিরাজ্য

বলবিন্দর সিংয়ের সঙ্গে ‘অমানবিক’আচরণ করেছে পুলিশ: ধনকড়

বলবিন্দর সিংয়ের সঙ্গে 'অমানবিক'আচরণ করেছে পুলিশ: ধনকড়

বিজেপির নবান্ন অভিযানে শিখ সম্প্রদায়ের এক জনের পাগড়ি খোলা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। অভিযোগ ওঠে জোর করে পাগড়ি টেনে খুলে দিয়েছে পুলিশ। রাজ্য পুলিশ এ নিয়ে সাফাই দিলেও, এই ঘটনার জন্য তাঁদের একহাত নিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।

সোমবার দু-দু’টি টুইট করেন রাজ্যপাল। রাজ্য পুলিশ এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করা ওই টুইটে বলবিন্দর সিংয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন তিনি। তার সঙ্গে কার্যত অমানবিক আচরণ করা হয়েছে বলেও দাবি করেন ধনকড়। রাজ্যপালের বক্তব্য, এব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা না করে, কাজের সমর্থনে বিবৃতি দিচ্ছেন।

এছাড়া আরেকটি টুইটে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাইট উপাধি ত্যাগের প্রসঙ্গ টেনে আনেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। টুইটে রাজ্যপাল বলেছেন, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের জেরে, হাজার কিমি দূরে থেকেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘নাইট’ উপাধি ত্যাগ করেছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের মাথা যেন উঁচু থাকে, লজ্জা যেন না থাকে। এটা সংশোধন করার সময় এসেছে বলেও টুইটে খোঁচা দিয়েছেন জগদীপ ধনকড়।

বিতর্কের সূত্রপাত বৃহস্পতিবার বিজেপির ‘নবান্ন চলো’ অভিযানে। ওই কর্মসূচি চলাকালীন বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে। কোথাও কোথাও তা ধস্তাধস্তির চেহারা নেয়। সেই সময়ের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয় সেদিন সন্ধ্যা থেকেই।

আরও পড়ুন : মণীষ খুনের ঘটনায় রাজ্যপালের কাছে সিবিআই তদন্তের দাবি বিজেপির

তাতে দেখা যায় এক শিখ যুবককে আটক করছে পুলিশ। তখন টানাহ্যাঁচড়ায় তাঁর পাগড়িটি খুলে যাচ্ছে। সেই পাগড়ি খোলার ঘটনা ঘিরেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে শিখ সম্প্রদায়ের একাংশ। খোদ হরভজন সিং এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে।

এদিকে, রবিবার পাগড়ি ইস্যুতে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছিলেন দিল্লি শিখ গুরুদোয়ারা ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি মনজিন্দর সিং সিরসা।এদিন রাজ্যপালের হাতে দুই পাতার একটি চিঠি দেন শিখ সম্প্রদায়ের ওই শীর্ষ ধর্মীয় সংগঠন। তাঁদের মূল দাবি, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। দোষী পুলিশদের শাস্তি দিতে হবে।ওই শিখ সংগঠনের অভিযোগ, ‘পাগড়ি খুলে নেওয়ার মতো যে জঘন্য অপরাধ পুলিশকর্মীরা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে বলবিন্দর সিংকে গ্রেফতার করা হল। যারা ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হেনেছে তাদের বিরুদ্ধে ২৯৫ ধারায় মামলা হওয়া উচিত।’

উল্লেখ্য, রাজ্য পুলিশ একটি টুইটে দাবি করেছে,’বিজেপির বিক্ষোভে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ওঁর পাগড়ি ধস্তাধস্তির সময় এমনিই খুলে পড়েছে। আমাদের আধিকারিক কখনওই পাগড়ি খুলে দেওয়ার চেষ্টা করেননি। কোনও সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত করাটা আমাদের অভিপ্রায় নয়।

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সব ধর্মকে সম্মান করে। আমাদের আধিকারিক গ্রেফতারির আগে বারবার ওই ব্যক্তিকে পাগড়িটি ঠিক করে নিতে অনুরোধও করেছিলেন। আমরা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বদ্ধপরিকর।’ নিজেদের টুইটে গ্রেফতারির ঠিক আগের মুহূর্তে তোলা বলবিন্দরের একটি ছবিও পোস্ট করেছে রাজ্য পুলিশ। সেখানে তাঁকে একেবারে সঠিকভাবে পাগড়িটি পরে থাকতে দেখা যাচ্ছে। রবিবারই এ ঘটনা নিয়ে টুইট করে বিবৃতি দিয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর।

সুত্র: কলকাতা ২৪*৭

আরও পড়ুন ::

Back to top button