মতামত

আজও সাংবাদিকরা অবহেলা অবহেলিত

মৃত্যুঞ্জয় সরদার

আজও সাংবাদিকরা অবহেলা অবহেলিত
প্রতীকী ছবি

মৃত্যুঞ্জয় সরদার, কলকাতা: আজকের সমাজব্যবস্থা রাজনীতির বাহিরে গিয়ে কেউ যেন এক পা ফেলতে পারছে না। এটা জেমনি এই সমাজের একটা ক্ষতিকারক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ,তেমনি সভ্য মানুষ গুলো অত্যাচারিত শিকার হচ্ছে।আজও রাজনীতির বাইরে বহু মানুষ বিরাজমান অবস্থায় রয়েছে ,রাজনীতি যেমন শেষ কথা বলে ঠিক, তেমনি কিছু সততার সাথে কাজ করে এমন মানুষ যারা রাজনীতি কে মান্যতা দেয়না ।তাদের পরিণাম বা অবস্থা বেহাল, সে সাংবাদিক হোক বা ডাক্তার হোক, বা পুলিশ ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি হোক।রাজনৈতিক যেমন মানুষকে স্বর্গে পৌঁছে দিতে পারে, তেমনি মর্তের মাটির তলায় বেশি হতে পারে।

রাজনীতির বাইরে অনেক কিছু চলতেই পারে, কিন্তু বাংলার মানুষ ভুলে গেছে যে শুধু রাজনীতির শেষ কথা নয়। সত্য মিথ্যার লড়াই সততার জয় আছে সর্বদায়।রাজনীতির বাইরে থেকে যেসব সাংবাদিকরা সত্যের জন্য মরিয়া হয়ে কাজ করছে,সেই সব সাংবাদিক পরিবারের উপরে কিবা হয়নি অত্যাচার-অবিচার খুন পর্যন্ত হয়েছে । এইসব সাংবাদিক পরিবারের উপরে বিরোধী রাজনৈতিক ছাপ লাগিয়ে একাধিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে । এ ঘটনা শুধু বাংলা কেন, সারা ভারতবর্ষে এমন ইতিহাস রয়েছে। নিজেও ভুক্তভোগী।

বর্তমানে সারা বিশ্বে দুর্ভিক্ষে আকার নিয়েছে, সংবাদ সংস্থা ও সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের পাশে অথবা রাজ্য সরকার যদি না থাকে তাহলে আগামী দিনের সংবাদ সংস্থার বেহাল দশায় পরিণত হবে।করোনাভাইরাস প্রকট এ ছাড়া ভারতবর্ষজুড়ে লকডাউন ও আনলক ফাইভ দীর্ঘকালীন ফলে সংবাদমাধ্যমের মালিক ও কর্মচারীদের অবস্থা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

তেমনই পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে সারা ভারতবর্ষের একাধিক সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের। সেই জন্য একাধিকবার আমি নিজে ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট এন্ড অল এডিটর অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় সম্পাদক হয়ে সমস্ত সাংবাদিকদের পাশে সরকার থাকে তার আহবান জানিয়েছি।

তবে বাংলার সংবাদমাধ্যমে সংস্থার পাশে জীবন থাকতে পিছপা হবেনা  অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় সভাপতি দেবাংশু চক্রবর্তী।তিনি বলেন লকডাউন এর পরবর্তী সময়ে   ঝাড়খণ্ডের বাংলা দৈনিক পত্রিকার কলকাতায় সমস্ত ধরনের কাজের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। দৈনিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক  মহাশয় এর পাশে সর্বদা সহযোগিতায় ও আপদ বিপদ সর্বদাই পাশে রয়েছেন।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছেন যাতে এই পত্রিকার সরকারিভাবে বিজ্ঞাপন পায় তার অনুমোদন দেওয়ার জন্য।লকডাউন এর ফলে দুস্ত ও সমস্ত সরকারি-বেসরকারি সাংবাদিকরা তাদের পারিবারিক অবস্থা খুব দুর্ভাগ্যজনক,এমনই পরিস্থিতিতে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন  অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকেই।

বাংলা তথা ভারতবর্ষের সাংবাদিকদের পাশে সর্বদা সজাগ অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা এবং দেবাংশু চক্রবর্তী ও আমি নিজেই, স্বপন দত্ত বাউল এবং বাশিরুল হক সহ অন্যান্যরা  সাংবাদিকতা বিধ্বস্ত জাতিকে পুনর্গঠনে অবদান রাখতে পারে, ঠিক তেমনি সাংবাদিকতার নামে মিথ্যাচারিতা, পক্ষপাতিত্ব, স্বার্থপরতা এক সুসংহত জাতিকে হিংসাত্মক যুদ্ধের দাবানলে অগ্রসর ভূমিকা রাখতে পারে।তবে এই ঘটে সত্য পথের পথিক সাংবাদিকদের উপরে!কিন্তু এক শ্রেণীর সাংবাদিক আছে টাকার লোভে হয়কে নয় করে।

আর অসাধু কিছু নেতাদের কথা মতো চলে, সদ সাংবাদিকদের বিপদে ফেলেছে এই সব সাংবাদিকরা।দেশ ও দশের ভালোচায় না এই সব সাংবাদিকরা, এদের গাড়ি বাড়ি সবি হয়। আর সদ সাংবাদিকরা খাওয়ার পয়সা পায় না। এই সব সদ সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নেই,এদেরকে সমাজের বুকে খারাফ প্রমাণ করাতে ব্যাস্ত সবাই। তাই আজকের লেখার বিষয় বস্তু সাংবাদিকদের ভূত ভবিষ্যৎ।তবে সব সাংবাদিকদের পাশে আছেন ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট এন্ড অল এডিটর অ্যাসোসিয়েশন জাতীয় সভাপতি দেবাংশু চক্রবর্তী।

দীর্ঘ ১৬ বছর সাংবাদিকতার জীবনে আমার পরিবারের বহু খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে,কারন সত্য অনুসন্ধানী হয়ে সাংবাদিকতা করার জন্য । এই করলে পরিণাম ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল জীবনে জেল-জরিমানা সবই কেটেছে তবেই সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা আমিজনি। প্রকৃত অর্থে সাংবাদিকতা আর দশটি পেশার মতো নয়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও’র মতে, সাংবাদিকতা একটি ঝুঁকিপূর্ণ পেশাও।

প্রকৃত সাংবাদিকের দায়িত্ব বস্তুনিষ্ঠ ও সততাপূর্ণ সংবাদ পরিবেশন করা। টুকটাক সাংবাদিকতা করার সুবাদে মাঝে মাঝেই অনেকে আমার থেকে জানতে চায় সাংবাদিকতা বিষয়ক নানা তথ্য। অনেকেই বলেন, “আমরা আপনার মতো পেপারে লিখতে চাই।  অথবা কিভাবে শুরু করবো?” আজকের এই লেখাটি সেসব ক্ষুদে ক্রিয়েটিভ মানুষগুলার জন্য যারা বড় হয়ে সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন দেখে অথবা পেপারে লেখার ইচ্ছা রাখে। আজ আমরা ফিচার রাইটিং অথবা দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকতা সম্পর্কে জানবো:   সাংবাদিকতার প্রাথমিক স্তরেই সবার জানা হয়ে যায় যে, সংবাদে কোনো অবস্থাতেই ধর্ষিতা বা যৌন নিপীড়নের শিকারের নাম প্রকাশ করা যাবে না৷ এটা মোটামুটি সবাই জানেন বলে ধর্ষিতা বা যৌন নিপীড়নের শিকারের নাম প্রকাশিত হতে খুব একটা দেখা যায় না৷

কিন্তু অনেকক্ষেত্রে ধর্ষিতার এলাকার নাম বা তাঁর কোনো আত্মীয়ের নাম বা পরিচয় প্রকাশিত হতে দেখা যায়৷ যাঁরা প্রকাশ করেন, তাঁদের আসলে নাম, পরিচয় প্রকাশ না করার পেছনের কারণগুলো সম্পর্কেই হয়ত ধারণা নেই৷ নইলে তাঁরা নিশ্চয়ই বুঝতেন, এলাকা, এ বিষয়টি ‘কমন সেন্স’ থাকলেই বোঝা সম্ভব৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, অনেকেরই যেন সেই সেন্স বা সেন্স খাটানোর সময় নেই৷ এ যুগেও কোনো সাংবাদিকের এমন ভুল সত্যিই মর্মান্তিক৷মাত্র কয়েক বছর আগের তুলনায় সাংবাদিকদের এখন অনেক বেশি স্টোরি তৈরি করতে হয়।

বেশি কাজ উৎপাদনের চাপে আপনি ভাবতে পারেন আপনার আসল কাজ হচ্ছে সব কিছু প্রক্রিয়াজাত করা – নতুন কোন গল্পের কথা ভাবা বা অনুসন্ধান করা নয়। তাছাড়া,  সাংবাদিকতার মানেই হচ্ছে মানুষকে নতুন কিছু বলা। মৌলিক সাংবাদিকতার জন্য যে নৈপুণ্য দরকার সে বিষয়ে বিভিন্ন লেকচার এবং কর্মশালায় বিবিসির সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে টুডে অনুষ্ঠানের প্রাক্তন সম্পাদক কেভিন মার্শ-এর দেয়া বক্তব্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এই গাইড।পৃথিবী বদলে যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে তার রাজনীতি, অর্থনীতি আর মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ধারা।

বদলে যাচ্ছে মানুষের চিন্তা-চেতনা, রুচি, বিবেকবোধের দৃষ্টিকোণ আর দীর্ঘদিনের চলমান অভ্যাস। এই পরিবর্তনের সাথে বদলে যাচ্ছে সাংবাদিকতার সনাতনি ধারাও। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার স্থান এখন দখল করেছে করপোরেট সাংবাদিকতা। একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিক এই রূপান্তরগুলোকে শুধু দেখেই শেষ করতে পারেন না, সেগুলোকে তার নিবিড় পর্যবেক্ষণেও রাখতে হবে এবং তার নিজস্ব এথিক্সের আলোকে চলার পথ বা সংবাদ লেখার পথ ঠিক করতে হবে।তবে অনেক ধরনের ঘটনাই ঘটে প্রতিদিন। তবে গুরুত্বের বিচারে সব ঘটনা একই মানের না হওয়ায় সবই সংবাদ হিসেবে প্রকাশিত হয় না।

সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ, কিন্তু এদিক থেকে চিন্তা করলে সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ নয়। কারণ সমাজে ঘটে যাওয়া সব ঘটনাবলীই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় না। একজন সাংবাদিকের নিজস্ব মতামত প্রকাশের জায়গা সংবাদপত্র নয়, ঘটনা যতটুকু ঘটে, ততটুকুই বলবেন একজন সাংবাদিক; এর বেশি নয়। আজকের সাংবাদিকতার জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জও এটাই। জনমত সৃষ্টিতে তাই আজকের সাংবাদিকরা রাখতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

একটি সাধারণ খবরকে একজন সাংবাদিক এমনভাবে উপস্থাপন করতে পারেন, যাতে তা পাঠক পড়তে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং তা পাঠকের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। একজন সাংবাদিককে চিন্তা করতে হবে জনমতের জায়গা থেকে জনকল্যাণের জায়গা থেকে।  একটি সৎ সংবাদ প্রকাশ করতে প্রয়োজন জনগণের সাহসী খোলামত ও অভিযোগ।কেউ যদি একটি সহজে বহনযোগ্য ডিজিটাল যন্ত্রের সাহায্যে ছবি বা ভিডিও ধারণ করে তা সম্পাদনা করে খবর আকারে প্রকাশ করে, তাকেই মোবাইল সাংবাদিকতা বলে।

মোবাইল ডিভাইসটি হতে পারে একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা, গো-প্রো বা একটি সেলফোন। হতে পারে একটি সম্পূর্ণ আলাদা প্রযুক্তিও। কেউ কেউ মোবাইল সাংবাদিকতাকে সেলফি সাংবাদিকতাও বলছেন। আমার কাছে মুখ্য বিষয় হচ্ছে রিপোর্টিং, তার জন্য আপনি কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন, তা গৌণ বিষয়।

সংবাদের খোঁজে প্রতিমুহূর্তেই ঘুরে ফিরছে সাংবাদিকরা৷ সেই ঘোরাঘুরির মাঝেই চোখে পড়ে অনেক কিছু, যা হয়ত সংবাদ নয় কিন্তু সাংবাদিক মন লিখতে চায়৷ জানাতে চায় তার পাঠকদের৷খবরের জন্য এখন সবসময় মাঠে-ঘাটে যেতে হয় না৷ ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়ার সুবাদে আরাম কেদারায় বসেও সহজেই লিখে দেয়া যায় বড় বড় খবর৷ রাজন হত্যা থেকে শুরু করে বেশ কিছু খবর তো মূলধারার সংবাদমাধ্যমের আগে সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই আমরা পেয়েছি৷এযুগে নির্ভরযোগ্যতার বাছবিচর ছাড়াই সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নির্ভরতা বাড়ছে৷ ফলে ভুল সংবাদ প্রচারের দায়ও নিতে হয়েছে বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমকে৷

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের নামও কিন্তু এই তালিকায় আছে৷ ‘সাংবাদিকের চোখ’ এবং বিবেচনাবোধ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া থেকে যা খুশি তাই প্রচার করে দেয়া নিশ্চয়ই দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা নয়৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমকে অনেক ক্ষেত্রে সংবাদের উৎস বা সূত্র ভাবা যেতে পারে, কিন্তু পরিপূর্ণ এবং প্রশ্নাতীতভাবে ঠিক খবরের পরিবেশক ভাবা কখনোই ঠিক নয়৷আধুনিক এই যুগে আমরা সবাই কম বেশি পেপার পড়ি।  অনলাইন, প্রিন্টের দুনিয়াতে নানা খবরাখবরের সাথে আমরা আপডেটেড থাকি সংবাদকর্মীদের কল্যাণে।সংবাদকর্মীরা প্রতিনিয়ত ব্যস্ত থাকেন আমাদের জন্য সংবাদ সংগ্রহে।

এটাই মূলত তাদের নেশা ও পেশা।  ঘটনাপ্রবাহ ও ফিচার এমনভাবে লিখতে হয় যাতে পাঠক একবার পড়লেই পুরো ব্যাপারে সুস্পষ্ট ধারণা পান। এ জন্য যা করতে হবে তা হলো রিসার্চ। যে বিষয় বা ঘটনা নিয়ে লিখবেন, ঐ বিষয়টি গুগল করুন। আপনার সামনে আসবে আসবে হাজার হাজার তথ্য। নিজের প্রয়োজন মত তথ্যাদি সংগ্রহ করুন ও তা প্রয়োগ করুন লেখার সময়।

আরও পড়ুন : ডিজিটাল মিডিয়া বা অনলাইন নিউজ পোর্টাল গুলোকে কেউ সরকারিভাবে প্রাধান্য দেন নি?

ফিচার রাইটার ( যারা পেপার / পত্র পত্রিকার জন্য খবর সংগ্রহ করেন তা লেখেন প্রকাশের জন্য)  টেলিভিশন সাংবাদিকতা ( যেখানে মাইক্রোফোন আর ক্যামেরা হাতে সাংবাদিক ও তার দল চলে যান খবর সংগ্রহে যা আমরা পরবর্তীতে টিভি খবরে দেখতে পাই)  ফটোজার্নালিস্ট  ( এই ব্যাক্তি সাংবাদিক তবে খবর সংগ্রহের না, ছবি সংগ্রহের। ভারতবর্ষের এমনকি বিশ্বে কোথায় কি হচ্ছে তার সাথে আপটু ডেট থাকা ও দরকারে ক্যামেরা নিয়ে ছবি তোলা ও ভিডিও করা এ ধরনের সাংবাদিক এর কাজ)    প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে আপনি কোন বিষয়ের উপর আর্টিকেল লিখবেন।

যদি কোন সাম্প্রতিক ঘটনা বা ইস্যু নিয়ে লিখতে চান তবে আপনাকে কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে হবে –

– ঘটনার সাথে কারা কারা জড়িত আছে

– কোথায় ঘটেছে ঘটনাটি, কেন ঘটেছে

– কবে ঘটেছে ( দিন, তারিখ, সময়)

– কিভাবে ঘটলো, সূত্রপাত, ঘটনাপ্রবাহ ও বিস্তারিত

– ঘটনা ঘটার সময়ে আশে পাশে থাকা বক্তা / একাধিক বক্তার মন্তব্য! বড় বড় সংবাদ সংগ্রহকারী ওয়েবসাইট আছে যার সারাবিশ্বের সংবাদ মুহূর্তের মধ্যে সংগ্রহ করার কাজে নিয়োজিত যেমন – রয়টার্স, বিবিসি, সিএন এন ইত্যাদি৷  এদের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে সংবাদ তৈরী করতে পারেন।

নিয়মিত পেপার, টেলিভিশনের সাথে আপ-টু-ডেট থাকা আপনার জ্ঞানকে বাড়িয়ে তুলবে রিসার্চ এর ব্যাপারে৷ একজন ভালো সংবাদকর্মী হতে হলে আপনাকে অবশ্যই গবেষণা ও রিসার্চ করতে হবে ও যে কোন বিষয়ে সাধারণ জনগণের চেয়ে বেশি জানতে হবে। আজকের যুগের সাংবাদিকরা এসব কিছুর ধার ধারে না। কোনরকম একটা ইউটিউব চ্যানেল বানিয়ে নিজেকে মহান সাংবাদিক বলে পরিচয় দিয়ে বাংলা তথা বাংলার বাইরে তোলাবাজি শুরু করে দিয়েছে।

এই সব সাংবাদিকদের হাত অনেক লম্বা চওড়া, এরা প্রয়োজনে মানুষকে খুন করতে পারে, এদের নিচে নামতে এক সেকেন্ডও সময় লাগে না।এইসব সাংবাদিকদের ফলে সদ নিষ্ঠাবান ত্যাগী সাংবাদিক গুলো আজ যেন আরো অসহায় হয়ে পড়েছে। তোলাবাজ সাংবাদিকরা মেরে কেটে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হাত রেখে, ও নিজেরা ইউনিয়ন করে বোঝাপড়া করে তোলাবাজি করছে। আর সৎ সাংবাদিককে অবহেলা করছে, তুচ্ছ মনে করছে এবং প্রশাসনকে ভুল পথে চালনা করছে।

সরকারের যারা আমলায় আছে ন তাদের কাছে এই লেখার মাধ্যমে একটা অনুরোধ করবো, এক করে সৎগুণই এবং নিষ্ঠাবান সাংবাদিকদের প্রতি ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা টুকু জাগিয়ে তুলুন। এখনো বহু সাংবাদিক আছে যারা অনেক ভালো লেখক ও সাংবাদিক, যাদের লেখা পড়লে এই সমাজ সংস্কারের ইতিহাস সম্পূর্ণ দেখা যায়।সেইসব সাংবাদিকদেরকে সরকারি প্রেসক্লাব ও অনুদান এবং মাসিক ভাতা ব্যবস্থা করলে ,আগামী দিনে এদের পরিবার অনেকটাই সুস্থ থাকবে ।

করোনাভাইরাস এর ফলে যেভাবে সাংবাদিকরা অর্থহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছে, এই সময়ে সরকার সৎ নিষ্ঠাবান ও সাহসী সাংবাদিকদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছে ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট অল এডিটর অ্যাসোসিয়েশন। তাতে আর কোনদিন যাতে সাংবাদিকতায় শাসক দলের কাছে অবহেলায় অবহেলিত না হয় ,সেদিকে দেখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাছে। বাংলার অসহায় সৎ সাহসী ও নিষ্ঠাবান সাংবাদিকরা আজও সরকারের সব কিছু থেকে বঞ্চিত এদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান করছে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে।

সমস্ত সাংবাদিকদের মাসিক ভাতা ও সরকারি প্রেস কার্ড এবং সরকারি মর্যাদা যথাযথভাবে দেওয়া ,তার অনুরোধ জানাচ্ছি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ।এই লেখাটির আগে আজকের রাতের অভিজ্ঞতার কথা না লিখলে এলাকাটি হয়তো সম্পূর্ণ হবে না। নিশীথ রাত, আর দু-এক ঘণ্টা পরে ফুটবে ভোরের আলো। সবাই ঘুমে আচ্ছন্ন।গ্রামাঞ্চলে নেমে এসেছে শীতের আবহ। ঘরের টিনে কুয়াশার টুপ টাপ শব্দ করছি বলে বার বার মনে হচ্ছে।এখন তো তেমন কোন কুয়াশা নেই, তাহলে ওটা কিছু একটা শব্দ আমি পাচ্ছি।

আর দূর থেকে ভেসে আসছে কুকুরের হাঁক-ডাক। আর মাঝে মধ্যে আমার ডের বছরের বয়সী আদুরে মেয়েটি জেগে ওঠে। নজর কেড়ে নেয় সে।একাগ্রতা ভেঙে যায়।রাত জেগে পড়া ও লিখা পুরোনো অভ্যাস।অনেক গালমন্দ শুনছি, অসুস্থ হয়ে পড়ি তবুও নিশাচরের অভ্যাস বদলাতে পারিনি। আগে সঙ্গী ছিল বই, খাতা আর কলম। এখন প্রযুক্তির কল্যাণে ল্যাপটপ আর ফোন। তবে এখনও বইয়ের প্রতি টান বেশি। কত রাত যে নির্ঘুমে কেটেছে তার ইয়ত্তা নেই।তবে কয়েক দিন ধরে অবশ্য লেখার মনস্থির করলেও লিখতে পারছি না তবুও প্রতিদিন রুটিনমাফিক লেখার চেষ্টা করি।

চোখ উঠেছে। শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক দুচিন্তায় অস্থির সময় কাটছে এখন। যেন বিষিয়ে উঠেছে চারপাশ। মনপাখি বার বার বলছে, মৃত্যুঞ্জয় এতদিন (প্রায় ১৬ বছর) সাংবাদিকতা করলে …! সত্যিই তো কি করলাম। বন্ধু-বান্ধব কোথায় আর আমি কোথায়। তবে কিছুই পাইনি বললে ভুল হবে, সারাবিশ্বে আমার নাম টি জানে। পেয়েছি অনেক কিছু। জনগণের ভালবাসা আর সম্মান। ব্যর্থ হয়েছি পুলিশ ও প্রশাসন-প্রেমিক সাংবাদিক হতে, তাদের পদলেহন করতে। ভগবানের অমূল্য দান-দুই চোখে যা দেখেছি, যা সত্য তা লিখে চলেছি। পাছে লোকের কথা মাথায় থাকে না।

আর  যারা বাড়ি, গাড়ি আর দালানের মালিক হয়েছেন, তাদের সারাদিন-সারা বছর দেখেছি, পুলিশ আর প্রশাসনের তোয়াজগিরি করতে। জনগণের বিপদাপদ ও মামলা-মোকদ্দমায় পক্ষপাতিত্ব বা পুলিশের সাথে খাতিরের সুযোগে দু’এক পয়সা হাতিয়ে নিতে। সরকারি টিআর-কাবিকা, কাবিটার প্রকল্প নিয়ে উদরপূর্তি করতে। সংবাদের নামে অর্থ হাতিয়ে নিতে। জনগুরুত্ব ও নির্যাতিত-নিপীড়িত-বঞ্চিত মানুষের সংবাদ অর্থের বিনিময়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিতে। অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট, দখলদারিত্ব আর টেন্ডারবাজির সংবাদ না করার বিনিময়ে পারিতোষিক নিতে।

তারা পুলিশ আর প্রশাসনের সংবাদ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ব্যস্ত থাকেন প্রেসরিলিজ নিয়ে। ঘুর ঘুর করেন নেতা-পাতি নেতাদের পেছন পেছন। আমি সেটা আজও করতে পারিনি। অন্যদিকে   সৎ ও সত্য সংবাদ লিখলে যেন সুবিধাবাদী সাংবাদিকদের আঁতে ঘা লাগে। পুলিশ-প্রশাসন বা অন্যায়, দুর্নীতি, দখলবাজি, অনিয়ম, অসঙ্গতির সংবাদ লিখলে তো কথাই নেই। সত্য লিখলে প্রশাসনপ্রেমিক সাংবাদিকদের সম্মানে আঘাত হানে।

ইরাজার অর্থ যেন বেহাত হয়ে যাওয়ার ভয়ে তটস্থ থাকে। সৎ ও সততার সাথে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অসৎ সাংবাদিকদের ল্যাং খাওয়ার ভয়ও তাড়া করে। কারণ সংবাদের চেয়ে অর্থের মোহে নিমজ্জিত থাকেন অসৎ সাংবাদিকরা। তাদের হাতে প্রচুর সময়। অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানার মতো কাজকর্ম তাদের।

অবশ্য অসৎ সাংবাদিকদের ওপর দোষ চাপানো যায় না। সমাজের নানা অবস্থান থেকে তারা এ মহান পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। জড়িয়ে পড়েছে টাউটশ্রেণীর লোকজনও। গ্রামের অধিকাংশ লোকই অশিক্ষিত। তারা সাংবাদিক-অসাংবাদিক তফাৎ কম খুঁজে পান। এজন্য দায়ী অবশ্য সংবাদপত্র নিয়ে দেখভালোর দায়িত্বে নিয়োজিত কর্তাব্যক্তিরা। সরকার বাহাদুরের তথ্য মন্ত্রণালয় ও প্রেস ইনস্টিটিউটের। দেশে কত পত্রিকা রয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। কালভদ্রে বের হয়। মফস্বল এলাকায় এরকম পত্রিকার প্রতিনিধিদের বেশ দাপট।

ব্যস্ত সাংবাদিক। তাদের কত নামডাক। কোন ঘটন-অঘটনে তাদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। আর নির্বাচন, সভা-সমাবেশ হলে তো কথাই নেই। তাদের ধারেকাছে যায় কে।  এর শেষ কোথায় জানি না। সাংবাদিকতার হৃতগৌরব কখন ফিরে আসবে তাও জানি না। নগর সাংবাদিকদের মতো কখন উন্নতমানের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে গ্রামীণ সাংবাদিকেরা-এই প্রশ্ন এখন সবার কাছে। যুগ বদলেছে। দিন দিন বেড়েই চলেছে দ্রব্যমূল্য ও শ্রমবাজার। শুধু বাড়ছে না মফস্বল সাংবাদিকদের শ্রম আর ঘামের মূল্য। দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কী আছে।

 

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। West Bengal News 24-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

আরও পড়ুন ::

Back to top button