জীবন যাত্রা

দেরি করে বিয়ে করার কথা ভাবছেন? তাহলে করুন এই কাজগুলো

দেরি করে বিয়ে করার কথা ভাবছেন? তাহলে করুন এই কাজগুলো

যত দিন যাচ্ছে শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। থমকে আছে শুধু এখনো একটি জায়গায়, আর সেটি হলো মেয়েদের বিয়েসংক্রান্ত ব্যাপার। এখনো গ্রামে প্রাইমারি পাশ করলেই মেয়ের বিয়ের কথা ভাবা হয়। শহরে এসে এই ভাবনাটা আসে এসএসসি পরীক্ষার পরই। একটু ভাগ্যবতী হলে বিয়ে গড়ায়। পড়াশোনা শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে, নিজের মনের মতো একটি ক্যারিয়ার পেতে মেয়েদেরও ঠিক একই সময় লাগে যতটা লাগে ছেলেদের। অথচ এই সময়টুকু আমরা তাদের দিতে চাই না। মেয়ের বয়স পঁচিশ-ছাব্বিশ পেরোলেই হায় হায় রব উঠে যায় পরিবারে, আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে, বিয়ের বয়স পার হয়ে গেল!

যারা নিজেদের জীবন নিজের মতো করে গোছাবার কথা ভাবছেন, ভাবছেন সাফল্যময় কর্মজীবনের কথা, তারা একটু দেরিতেই বিয়ে করতে চান। কিন্তু দেরিতে বিয়ে করতে চাইলে আপনাকে আগে থেকেই নিয়ে রাখতে হবে কিছু বিষয়ে প্রস্তুতি। নয়তো পরিস্থিতি সামলে নেয়া যাবে না কিছুতেই। তাই দেরিতে বিয়ে করার কথা ভেবে থাকলে করুন এই কাজগুলো।

মানসিক প্রস্তুতি নিন
দেরিতে বিয়ে করতে চাইলে আপনাকে কিছু সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার মোকাবেলা করতে হবে। যেমন পরিবারের চাপ, আত্মীয়দের কটুক্তি ইত্যাদি। এসব বিষয়ে আগে থেকেই মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।

পড়াশোনা ভালোভাবে করুন
আপনি যে বিষয়েই ক্যারিয়ার গড়তে চান না কেন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাটা খুবই জরুরি। পাশ করার জন্য না পড়ে শেখার জন্য পড়ুন। ভালোভাবে পড়াশোনা করার আরেকটি ইতিবাচক দিক আছে আর তা হলো, আপনি যদি পড়াশোনায় ভালো হন তাহলে বিয়ে নিয়ে চাপাচাপি সবাই একটু কম করবে।

প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রির দিকে নজর দিন
অনার্স পাশ করেও ভালো চাকরি পাওয়া যায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ডিগ্রিটি আপনার ক্যারিয়ারের পাথেয় হয়ে থাকবে। তাই ভালো চাকরির অফার পেলেও হুট করে পড়াশোনা বন্ধ করে দেবেন না।

অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হোন
দেরিতে বিয়ে করার সিন্ধান্তটা আপনার পরিবারের ভালো নাও লাগতে পারে এবং তারা আপনাকে তাদের বোঝা বলেও ভাবতে পারে। তাদের এ সুযোগ দেবেন না। নিজেকে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করে তুলুন। যাতে আপনি কারো বোঝা না হন বা আপনাকে কারো কাছে হাত পাততে না হয়।

নিজের লক্ষ্য স্থির রাখুন
জীবনে কী চান তা আগে ভালো করে ভেবে নিন। লক্ষ্য ঠিক করে নিয়ে এগোতে থাকুন। এলোপাথাড়ি এগোলে লক্ষ্যে পৌঁছুতে দেরি হবে। যে ধরনের ক্যারিয়ার গড়তে চান, সে বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করুন।

এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটি
জীবনে কিছু করতে হলে শুধু পড়াশোনায় ভালো হলে চলবে না, পাশাপাশি অন্যান্য গুণাবলিও থাকতে হবে। নাচ, গান, আবৃত্তি, অভিনয়, খেলাধুলা ইত্যাদিতে দক্ষতা আপনাকে শিক্ষাবৃত্তি ও ভালো চাকরি পেতে সাহায্য করবে। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি এসবও চালিয়ে যান।

ছোট ছোট কোর্স করুন
আপনার কর্মজীবনকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলবে এমন কিছু কোর্স করুন। যেমন আপনি যদি মার্কেটিংয়ে কাজ করেন বা করতে চান তাহলে সুন্দর বাচনভঙ্গি আবশ্যক। সেক্ষেত্রে শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলার কোর্স করতে পারেন।

আত্মবিশ্বাসী থাকুন
যাই ঘটুক না কেন, নিজের ওপর ভরসা রাখুন ও আত্মবিশ্বাসী থাকুন। যে যাই বলুক না কেন তাতে কান দেবেন না। একে তো অবিবাহিত, তার ওপর আবার সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে উপর দিকে উঠছেন, এমন সময় অনেকেই নানা কুত্‍সা রটাবে। এসব একেবারেই পাত্তা দেবেন না।

নিজেকে সময় দিন
নিজের ক্যারিয়ার গড়বেন, সফল হবেন – তারমানে এই নয় যে প্রাণান্ত পরিশ্রম করবেন কিন্তু নিজেকে সময় দেবেন না। নিজেকে সময় দিন। নিজের শখের কাজগুলো করুন, নিজের দিকে খেয়াল রাখুন। যাপন করুন একটি স্বাস্থ্যকর জীবন ।

আত্মসমীক্ষা করুন
ক্যারিয়ার গোছানোর জন্য হোক বা অন্য কোনো কারণে হোক, দেরিতে বিয়ে করতে চাইলে আত্মসমীক্ষাটা খুব জরুরি। আপনি কবে বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেছেন, আদৌ বিয়ে করবেন কি না, এই সিদ্ধান্তের কারণে আপনার জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কি না, লক্ষ্য অনুযায়ী কতটুকু এগোলেন – এ সবকিছু নিয়েই ভাবা উচিত।

আরও পড়ুন ::

Back to top button