বলিউড

সাহসী দৃশ্যের সেই সিনেমা আর মাধুরীর আফসোস

সাহসী দৃশ্যের সেই সিনেমা আর মাধুরীর আফসোস
বলিউডের নন্দিত তারকা মাধুরী দীক্ষিত

বলিউডের নন্দিত তারকা মাধুরী দীক্ষিত। সেই আশির দশক থেকে শুরু করে এখনও মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছেন রূপে, গুণে আর অভিনয়েও। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কাজ করতে গিয়ে নানারকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। সেসব নিয়ে বভিন্ন সময়েই নানারকম মুখরোচক খবর প্রকাশিত হয়েছে।

একটা সময় বলিউডে রাজত্ব করেছেন মাধুরী দীক্ষিত। যে সময় নায়ককেন্দ্রিক সিনেমা হতো, সে সময় একাই বহু সাদামাটা ছবিকে টেনে তুলেছেন। তবে স্টারডমের চূড়ায় পৌঁছানোর আগে কম স্ট্রাগল করতে হয়নি তাকে। সেই স্ট্রাগল পর্বের একটি সিনেমা নিয়ে এখনও আফসোস করেন তিনি। ব্লকবাস্টার হিট হওয়া সত্ত্বেও একটি সিনেমার কথা মনেই রাখতে চান না। শুধু তাই নয়, সেটি নিয়ে কথা বলতেও রাজি নন তিনি।

১৯৮৪ সালে বলিউডে অভিষেক হলেও ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আর পাঁচটা বলি-হিরোইনের মতোই স্ট্রাগল করতে হয়েছে মাধুরীকে। হীরেন নাগের ফিল্ম ‘অবোধ’-এ তাকে প্রথম দেখা গিয়েছিল বড় পর্দায়। তাপস পালের বিপরীতে আনকোরা মাধুরীর উত্থান ঝড়ের গতিতে হয়নি। বরং ’৮৪-র সেই ফিল্মের পর বেশ কষ্ট করে বলিউডে নিজের জমি পোক্ত করতে হয়েছে তাকে।

আরও পড়ুন: যে কোনও সময় গ্রেপ্তার করতে পারে সুশান্তের দুই দিদি! ভয়ে বম্বে হাই কোর্টের দ্বারস্থ তাঁরা

অভিষেকের পর বেশ কয়েকটা ফিল্মে কাজ করলেও বছর চারেক বড়সড় হিট দিতে পারেননি মাধুরী। সেই স্ট্রাগলিং পর্বে সুযোগ পেয়েছেন ‘দয়াবান’-এর মতো ফিল্ম করার। ফিরোজ খানের সেই ফিল্মে সাহসী দৃশ্যে দেখা গিয়েছিল মাধুরী এবং বিনোদ খান্নাকে। ১৯৮৮ সালের ২১ অক্টোবর মুক্তি পেয়েছিল সিনেমাটি। ‘দয়াবান’-এর বোল্ড সিন এবং পাওয়ারফুল পারফরম্যান্সের জোরে বলিউডে চর্চায় থাকলেও মাধুরীর পালকে স্টারডমের ছোঁয়া লাগেনি তখনও।

সাহসী দৃশ্যের সেই সিনেমা আর মাধুরীর আফসোস

শুরুতেই সে সময় মাধুরী সুযোগ পেয়েছিলেন উমেশ মেহরার সঙ্গে একটি ছবি করার। লোভনীয় স্টারকাস্ট। রয়েছেন সে সময়কার তারকারা— সানি দেওল এবং জ্যাকি শ্রফ। তবে নায়িকার ভূমিকায় নয়। তাতে রয়েছেন কিমি কাতকর। মাধুরী তাতেও রাজি হয়েছিলেন সেই ছবি করতে। সানি-জ্যাকির সঙ্গে সে সময় কাজ করাটা বড় সুযোগ হিসেবেই দেখেছিলেন মাধুরী। ইন্ড্রাস্ট্রিতেও ভাল জমি করে নিতে পারবেন ভেবেই হয়তে তাতে রাজি হয়েছিলেন।

তবে এই ছবিটির কথা আর কখনওই মনে রাখতে চাননি মাধুরী। উমেশ মেহরার সেই ফিল্মটি ছিল ‘বর্দী’। শ্যুটিং শেষ হলেও নানা ডামাডোলে তা মুক্তি পাচ্ছিলো না। এক সময় তো প্রযোজকও বদল হল। সেই সময়ই মাধুরীর হাতে এসেছিল ‘তেজাব’। এন চন্দ্রার সেই ছবিই মাধুরীকে এক ধাক্কায় স্টারডমের তুঙ্গে তুলে দেয়। ১৯৮৮ সালের নভেম্বরে ‘তেজাব’ রিলিজের পর মাধুরীর ‘এক, দো, তিন… ’ গানের তালে মেতেছিল ৮ থেকে ৮০। সেই ছবির নায়ক অনিল কাপুরের সঙ্গে তো একেবারে জুটি তৈরি হয়ে গিয়েছিল বলিউডে। ‘তেজাব’ রিলিজ করলেও উমেশ মেহরার ‘বর্দী’ তখনও পর্দায় দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন: কাজলের বিয়ে নিয়ে বোন নিশা যা বললেন

এদিকে মাধুরীর তখন আকাশছোঁয়া স্টারডম। বাজারদরও তুমুল। সেই সাফল্যে গা ভাসাতেই বোধহয় ‘বর্দী’-র প্রযোজক তড়িঘড়ি ছবি মুক্তির সিদ্ধান্ত নেন। ‘তেজাব’ মুক্তির মাস দুয়েক পরেই মুক্তি পায় ‘বর্দী’। ‘বর্দী’ রিলিজের পর দেখা যায়, মাধুরীর রোল এতটাই কাটছাঁট করা হয়েছে যে তাকে ক্যামিয়ো বলা ছাড়া উপায় নেই।

সাহসী দৃশ্যের সেই সিনেমা আর মাধুরীর আফসোস

সেন্সর বোর্ড স সময় ওই ছবির দৈর্ঘ্য দেখে এত দিন তা মুক্তিতে বাঁধা দিয়েছিল। ফলে রোলে কাটছাঁট! সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্তে ‘বর্দী’-র যে দৃশ্যগুলো বাদ পড়েছিল, তাতে মাধুরীর বড়সড় অংশ ছিল আর তাতেই কাঁচি পড়েছিল। ফলে পার্শ্বচরিত্র থেকে মাধুরীর রোল একেবারে ক্যামিয়োতে পরিণত হয়েছিল।

‘তেজাব’-এর সাফল্যর পর পরই ১৯৮৯ সালে ‘রাম লখন’ মুক্তি পায়। সে বছরের জানুয়ারিতে সুভাষ ঘাইয়ের এর মতো পরিচালকের ‘রাম লখন’ মাধুরীকে স্টারডমের এক নয়া উচ্চতা দেয়। এরপর বলিউডে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি মাধুরীকে। তবে ‘বর্দী’ নিয়ে সে সময় বেশ অস্বস্তিতে পড়েছিলেন তিনি। সুপারস্টার নায়িকা মাধুরীকে জ্যাকির সঙ্গে ‘বর্দী’-তে বোল্ড সিনে দেখা গিয়েছিল। ওই ছবিতে সুপারস্টার মাধুরী ছিলেন একেবারেই পিছনের সারিতে। মাধুরীর নামের জোয়ারে ফিল্ম হিট করলেও তার ক্যামিয়ো দেখে ফ্যানেরাও বোধহয় হতবাক হয়েছিলেন। অবাক হয়েছিলেন তাঁর সাহসী দৃশ্যেও।

স্টারডমের তুঙ্গে ওঠা মাধুরী নিজের ক্যারিয়ারের এমন একটা সময়ে ‘বর্দী’-র জন্য ‘হ্যাঁ’ বলেছিলেন, যে সময় তিনি ফিল্ম বাছাবাছি করার মতো জায়গায় ছিলেন না। তবে কয়েক মাসের মধ্যেই যে তার ভাগ্য বদলে যাবে, তা কে জানত! স্টারডমের পর মাধুরীর কাছে একাধিক দরজা খুলে গিয়েছিল। ফিল্ম বাছাইয়ের সুযোগ ছিল। যে কোনও প্রজেক্টকে ফিরিয়ে দেওয়ারও সাহস এসে গিয়েছিল। ফিল্ম বাছাবাছির ক্ষেত্রেও তার কথাই শেষ কথা হয়ে গিয়েছিল। তবে ক্যারিয়ারের শুরুতে সেই সাহস বোধহয় তিনি চাইলেও করতে পারতেন না। ফলে ‘বর্দী’ নিয়ে এখনও বোধহয় আফসোস যায়নি। ওই ছবিকে মনেও রাখতে চান না মাধুরী।

আরও পড়ুন ::

Back to top button