আন্তর্জাতিক

‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ নিয়ন্ত্রণে মরিয়া ট্রাম্প-বাইডেন

‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ নিয়ন্ত্রণে মরিয়া ট্রাম্প-বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র ৫ দিন বাকি। শেষ মুহূর্তের এসে ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ নিয়ন্ত্রণে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন দুই প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন। দুজনই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রাজ্য চষে বেড়াচ্ছেন। ‘দোদুল্যমান’ রাজ্যগুলোতে নিজেদের পরিচিতি ও প্রতিশ্রুতি তুলে ধরছেন রিপাবলিক ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থীরা।

হোয়াইট হাউজের টিকিট পাওয়ার লড়াইয়ে দোদুল্যমান রাজ্যগুলো হাতছাড়া করতে চাইছেন না ট্রাম্প বা বাইডেন কেউই। তুমুল প্রতিযোগিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতে দুজনই চালাচ্ছে জোরালো প্রচারণা।

মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর জরিপে গোটা দেশে ট্রাম্পের চেয়ে ৭ থেকে ৯ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন বাইডেন। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলের অর্ধেকটাই নির্ভর করছে তুমূল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলো ঠিক কোন দিকে যায় তার ওপর।

মধ্য পশ্চিমাঞ্চলের তিন রাজ্য মিশিগান, উইসকনসিন এবং নেব্রাস্কায় সফর করবেন ট্রাম্প। যেখানে গত নির্বাচনে তিনি ডেমক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়েছিলেন। দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য রাজ্যগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে চাইলেও জরিপে দেখা যাচ্ছে মিশিগান ও উইসকনসিনতে তিনি পিছিয়ে আছেন। তবে এগিয়ে আছেন নির্ভরযোগ্য রিপাবলিকান রাজ্য নেব্রাস্কায়।

আত্মবিশ্বাসী বাইডেন দক্ষিণের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের দুই জায়গায় প্রচার অভিযান চালাচ্ছেন। ১৯৯২ সালের পর জর্জিয়ায় ডেমোক্র্যাটরা জয়লাভ করেনি। জরিপে দেখা যাচ্ছে যে, ওই রাজ্যের ১৬টি ইলেক্টরাল কলেজ ভোট পাবার জন্য বাইডেন ও ট্রাম্পের অবস্থান প্রায় একই স্থানে।

নিয়ম অনুযাযী, যে রাজ্যে যে প্রার্থী সবেচয় বেশি ভোট পান সেই রাজ্যের সবকটি ইলেক্টরাল ভোট তিনিই জিতে নেন। ফলে ৫৩৮ সদস্য বিশিষ্ট ইলেক্টরাল কলেজের সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যক ২৭০টি ভোট পাবার জন্য ট্রাম্প ও বাইডেন উভয়ই উন্মুখ হয়ে রয়েছেন।

আরও পড়ুন: হোয়াইট হাউজকে করোনার হট জোনে পরিণত করেছেন ট্রাম্প: ওবামা

আগাম ভোটের বিষয়ে রিপাবলিকানদের তুলনায় ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে আগ্রহ বেশি। ব্যাটলগ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিত পাঁচটি সুইং স্টেটে রিপাবলিকানদের চেয়ে প্রায় ২০ লাখ বেশি ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন। ২০১৬ সালে যে পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে অল্প ব্যবধানে জয় পেয়েছিলেন ট্রাম্প, এবার সেখানে পড়া আগাম ভোটে অনেক এগিয়ে ডেমোক্র্যাটরা। অঙ্গরাজ্যটিতে যতসংখ্যক রিপাবলিকান আগাম ভোট দিয়েছেন, তার তিনগুণ দিয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা।

রিপাবলিকান অঙ্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত টেক্সাসেও এবার প্রচুর আগাম ভোট পড়েছে। ২০১৬ সালে অঙ্গরাজ্যটিতে পড়া মোট ভোটের ৮০ শতাংশের বেশি এরই মধ্যে দেওয়া হয়ে গেছে। আর অ্যারিজোনা, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, নেভাদা ও নর্থ ক্যারোলাইনায় পড়েছে গত নির্বাচনে পড়া মোট ভোটের ৬০ শতাংশের বেশি।

সুইং স্টেটগুলোয় ২০১৬ সালে পড়া মোট ভোটের হিসাবে ফ্লোরিডায় ৬৩, নর্থ ক্যারোলাইনায় ৬৭, ওহাইওতে ৩৯, মিশিগানে ৪৩, পেনসিলভানিয়ায় ২৮, অ্যারিজোনায় ৬০, উইসকনসিনে ৪৫ ও আইওয়ায় ৪৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্য হিসেবে বিবেচিত জর্জিয়ায় ৬৬, মিনেসোটায় ৪০, নেভাদায় ৬৬ ও টেক্সাসে ৮২ শতাংশ ভোট এরই মধ্যে পড়েছে।

করোনার কারণে প্রথমবারের মতো আগাম ভোটের সুযোগ দেওয়া অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে নিউইয়র্ক অন্যতম। এ অঙ্গরাজ্যে এরই মধ্যে ৪ লাখ ২২ হাজার ভোট পড়েছে, যা ২০১৬ সালে পড়া মোট ভোটের ৫ শতাংশ। অঙ্গরাজ্যটিতে মাত্রই আগাম ভোট শুরু হয়েছে, চলবে ১ অক্টোবর পর্যন্ত।

ফলে নিউইয়র্কের মতো অঙ্গরাজ্যগুলোয় আরও বহু আগাম ভোট পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষত ডেমোক্র্যাট হিসেবে পরিচিত অঙ্গরাজ্যগুলোয় আগাম ভোট পড়ার হার বেশি। বিপরীতে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন বেশি এমন অঙ্গরাজ্যগুলোয় আগাম ভোট পড়ার হার কম।

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button