ঝাড়গ্রাম

তামার ঘটেই দেবী কালিকার আরাধনা ঝাড়গ্রামের কন্যাগুরুকুলে

স্বপ্নীল মজুমদার

তামার ঘটেই দেবী কালিকার আরাধনা ঝাড়গ্রামের কন্যাগুরুকুলে

ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রামের শ্রীরামকৃষ্ণ সারদাপীঠ কন্যাগুরুকুলের প্রাচীন কালীপুজো হয় তামার ঘটে। দেবীর অধিষ্ঠান ওই তামার ঘটেই। কার্তিকী অমাবস্যায় সেই ঘটস্থাপন করেন সন্ন্যাসিনীরা। জলপূর্ণ তামার ঘটের ভিতর দেওয়া হয় মুক্তো, সোনা, রুপো ও তামার মতো নানা রত্ন ও ধাতু।

থাকে আম, বট, অশ্বত্থ, কাঁঠাল ও বকুল— পঞ্চপল্লব। তার উপর ডাব। এই ঘটেই দক্ষিণা কালীর আহ্বান। প্রাণ প্রতিষ্ঠার পরে ষোড়শোপচার পুজো হয়। তন্ত্র মতে পুজো হলেও পশুবলি হয় না এখানে। পরিবর্তে কলা বলি দেওয়া হয়। তবে দক্ষিণা কালিকার উদ্দেশে অন্নভোগের সঙ্গে নিবেদন করা হয় পঞ্চব্যঞ্জন আর মাছ-মাংসের রকমারি পদ।

তামার ঘটেই দেবী কালিকার আরাধনা ঝাড়গ্রামের কন্যাগুরুকুলে

সময়টা ১৯৪৮ সাল। জঙ্গলমহলে নারী শিক্ষার প্রসারে ঝাড়গ্রামে আসেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সন্ন্যাসী স্বামী শর্বানন্দ। গড় ঝাড়গ্রামের জঙ্গল লাগোয়া একপ্রান্তে তিনি গড়ে তোলেন শ্রীরামকৃষ্ণ সারদাপীঠ কন্যাগুরুকুল। ১৯৫০ সালে তাঁরই উদ্যোগে এখানে তামার ঘটে কালী পুজোর সূচনা হয়।

তামার ঘটেই দেবী কালিকার আরাধনা ঝাড়গ্রামের কন্যাগুরুকুলে

১৯৬১ সাল পর্যন্ত তিনি নিজেই পুজো করতেন। কিন্তু স্বামী শর্বানন্দ অসুস্থ হয়ে পড়ায় ১৯৬২ সাল থেকে কন্যাগুরুকুলের সন্ন্যাসিনীরাই পুজোয় তন্ত্রধারক ও পুরোহিতের দায়িত্ব পান। ১৯৭০ সালে দেহ রাখেন শর্বানন্দ।

তামার ঘটেই দেবী কালিকার আরাধনা ঝাড়গ্রামের কন্যাগুরুকুলে

কালীপুজোর সকালে কন্যাগুরুকুলের শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা মন্দিরে চণ্ডীপাঠ হয়। নাটমন্দিরে ঘট-পুজো হয় বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকার তিথি মেনে মহানিশায়। ফল-মিষ্টি নৈবেদ্যের পাশাপাশি, দেবীকে নিবেদন করা হয় অন্নভোগ, লুচি, নানা ব্যঞ্জন, মাছ ও মাংসের বিভিন্ন পদ।

তামার ঘটেই দেবী কালিকার আরাধনা ঝাড়গ্রামের কন্যাগুরুকুলে

ষোড়শোপচারে পুজো শেষে দক্ষিণা কালীর হোমের পূর্ণাহতির পর ঘট নাড়িয়ে হয় বিসর্জন ক্রিয়া। প্রতিপদের দুপুরে অন্ন ও মাছ-মাংসের প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button