পুরাণে লুকিয়ে রয়েছে হিন্দু সধবাদের শাঁখা পরার কারন, মানলে আপনি সুখি, না মানলে…
জ্যোতিষ শাস্ত্রেও এয়োস্ত্রীদের শাঁখাকে দেওয়া হয়েছে অপরিসীম গুরুত্ব৷ হাতের সাদা শাঁখা জোড়া টলিয়ে দিতে পারে সংসারের ওপর ঘনাতে থাকা বড় বিপদ৷
হিন্দু সধবারা যুগ যুগ ধরেই হাতে শাঁখা-পলা-লোহা পরেন, আর সিঁথিতে রাঙান সিঁদুর৷ কিন্তু কেন এইগুলি এয়ো স্ত্রী-রা ব্যবহার করেন তার পিছনে রয়েছে গূঢ় কারণ৷ সনাতন ধর্মে বিবাহিত নারীদের কখন থেকে শাঁখা ব্যবহারের প্রচলন হয়?
পুরাণ কাহিনি অনুযায়ি, দেবসভায় এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানে শিব-পার্বতীও আমন্ত্রিত হন। শিব শ্মশানবাসী৷ গাঁজা -র নেশার বুঁদ আত্মভোলা৷ স্ত্রীকে অতিরিক্ত ধনসম্পদে ভরিয়ে দেওয়ার কথা কখনই তাঁর মনে হত না৷ তাই অনুষ্ঠানে পরে যাওয়ার মতো কোনো অলঙ্কার ও আভূষণ তাঁর ছিল না।
পার্বতীর এই অবস্থায় আত্মভোলা মহেশ্বর পড়লেন মহাবিপদে। স্বর্গলোকের সকল দেবীর দেহে যেখানে অলঙ্কারে ভরে থাকবে সেখানে তিনি তাঁর স্ত্রীকে কী করে নিরাভরণ অবস্থায় নিয়ে যাবেন? বিব্রত শিব বিশ্বকর্মার কাছে সহায়তা চাইলেন।
আরও পড়ুন : জেনে নিন কোথায় তিল থাকলে কী হয়
কিন্তু বিশ্বকর্মা শিবকে জানালেন যে, পৃথিবীর সব রত্ন শেষ হয়েছে এবং সেসব রত্নের অলঙ্কার পরেই দেবীরা স্বর্গলোকের অনুষ্ঠানে যাবেন । একমাত্র সিন্ধুতলের শঙ্খই অবশিষ্ট আছে, যা দিয়ে তিনি পার্বতীর জন্য অলঙ্কার তৈরি করে দেওয়া সম্ভব।
শিব তখন নিজের স্ত্রী পার্বতীকে শঙ্খ-সাজিয়ে দেন, সেভাবেই তিনি দেবসভায় যান৷ শঙ্খের উজ্জ্বল শুভ্র আলোয় দেবীদের রাশি রাশি মণিমাণিক্য ম্লান হয়ে গেল । তখন থেকেই বিবাহিতা হিন্দু নারীর শ্রেষ্ঠ অলঙ্কার একজোড়া শাঁখা।
এদিকে জ্যোতিষ শাস্ত্রে মুক্তা হচ্ছে চন্দ্রের প্রতীক। মুক্তা ব্যবহার করলে- মাথা ঠাণ্ডা থাকে, রূপ লাবন্য বৃদ্ধি পায়, মানসিক বিষন্নতা দূর হয়, মেয়েলি রোগ প্রতিরোধ করে – সাদা শাঁখাও এই একই কাজ করে।
মূলত মেয়েদের মাথা ঠাণ্ডা রেখে সুখে সংসারধর্ম পালন করতে শাঁখা মেয়েদেরকে সাহায্য করে। এদিকে আধুনিক সময়ে সাদা শাঁখাকে সোনায় মুড়ে পরিধান করেন, তারা শাঁখার উক্ত উপকারগুলো থেকে যে বঞ্চিত হবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই সর্বোচ্চ উপকারিতা পেতে হলে শাঁখাকে তার আসল রূপেই ব্যবহার করতে হবে।
সুত্র : নিউজ ১৮