আন্তর্জাতিক

যে কারণে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন অন্যদের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ

যে কারণে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন অন্যদের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ

তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ফল প্রকাশ হওয়ার পর করোনা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও অন্য ভ্যাকসিনগুলোর চেয়ে এখন পর্যন্ত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিনকেই সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা। আজ রোববার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মডার্না ও ফাইজারের ভ্যাকসিন দুটি গড়ে যথাক্রমে ৯৪ দশমিক ৫ থেকে ৯৫ শতাংশ কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওষুধনির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের পরীক্ষামূলক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ব্রাজিল ও যুক্তরাজ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়ালের ফলাফলে গড়ে ৭০ শতাংশ সফলতার কথা জানিয়েছে।

সেদিক দেখা যাচ্ছে, মডার্না ও ফাইজারের ভ্যাকসিনের তুলনায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের গড় কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে কম। তবে পর্যবেক্ষকদের বিশ্বাস, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন আগামী মাসে অতিরিক্ত ট্রায়ালে সফল হতে পারে। তারা বলছেন, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে যেসব প্রশ্ন উঠেছে, সেগুলোর উত্তর পাওয়া গেলে এবং ভ্যাকসিনটি অনুমোদন পেলে এটি দরিদ্র দেশগুলোতে ভ্যাকসিন সরবরাহের পথকে সহজ করবে।

আরও পড়ুন : কোভিশিল্ডে স্নায়ুর সমস্যার দেখা দিচ্ছে

শুক্রবার যুক্তরাজ্য সরকার ভ্যাকসিন অনুমোদন প্রক্রিয়ার প্রথম পদক্ষেপ নেয়। ওইদিন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার সম্ভাব্য করোনা ভ্যাকসিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রকের কাছে মূল্যায়নের জন্য রেফার করা হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়।

ডিউক গ্লোবাল হেলথ ইনোভেশন সেন্টারের প্রোগ্রাম সহকারী পরিচালক আন্ড্রিয়া টেলর সিএনএনকে বলেন, ‘ফাইজার ভ্যাকসিনটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রাথমিক ডোজ সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে মডার্না কমপক্ষে ২০২১ সালের প্রথমার্ধ্ব পর্যন্ত করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে। তাই এই দিক থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন বিশ্বের জন্য সত্যিই একটি ভালো খবর।’

অ্যাস্ট্রাজেনেকা নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোকে কয়েক মিলিয়ন ডোজ সরবরাহ এবং চিরস্থায়ীভাবে অলাভজনক ভিত্তিতে ভ্যাকসিন সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি এই ভ্যাকসিনটি অন্য ভ্যাকসিনের তুলনায় সস্তা। পাশাপাশি, এটিকে হিমায়িত তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করার প্রয়োজন হয় না বলে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এটি পরিবহন ও বিতরণ করাও সহজ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের সংক্রামক রোগ বিভাগের চেয়ার আজরা গণি সিএনএনকে বলেন, ‘আমি মনে করি, বর্তমানে এটিই একমাত্র ভ্যাকসিন, যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করা যেতে পারে।’

আরও পড়ুন : করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কবলে পড়তে পারে যুক্তরাজ্য

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি কমপক্ষে ছয় মাসের জন্য দুই থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা যাবে। অন্যদিকে, মডার্নার ভ্যাকসিন মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৩০ দিনের জন্য সংরক্ষণ করা যাবে। ফাইজারের ভ্যাকসিনটি মাইনাস ৭৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে এবং একবার উচ্চ তাপমাত্রায় আনা হলে পাঁচ দিনের মধ্যে সেটি ব্যবহার করতে হবে। এ বিষটিতে আজরা গণি বলেন, ‘ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য যে ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন সেটি অনেক দেশেই নেই।’

এদিকে, নিজেদের তৈরি ভ্যাকসিনের ৩০০ মিলিয়ন ডোজ গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই) এর কর্মসূচি ‘কোভ্যাক্স’ এর মাধ্যমে ৯২টি উন্নয়নশীল দেশে ন্যায়সঙ্গত বন্টন নিশ্চিতের জন্য সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

আরও পড়ুন ::

Back to top button