রাজ্য

শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে বুদ্ধদেব, আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর

শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে বুদ্ধদেব, আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

প্রবল শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। তাঁর শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইড জমে যাওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে চিকিত্‍সকদের। কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।

তবে বুদ্ধবাবুর কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ। পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বুদ্ধবাবুর চিকিত্‍সার জন্য। হাসপাতালে গিয়ে তাঁর পূর্বসূরির দ্রুত আরোগ্য কামনার পাশাপাশি চিকিত্‍সা বা চিকিত্‍সকদের বিষয়ে যে কোনও সাহায্য করতে সরকার তৈরি বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দীর্ঘ দিন সিওপিডি থাকায় শ্বাসকষ্টের সমস্যা বুদ্ধবাবুর অনেক দিনের সঙ্গী। বেশ কিছু দিন ধরেই পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডারের সাহায্য নিতে হয় তাঁকে। শীত কাল পড়লে শ্বাসের সমস্যা আরও বাড়ে। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে মঙ্গলবার বেশি অসুস্থ বোধ করায় পরীক্ষা করেন চিকিত্‍সকেরা।

কিন্তু বুধবার তাঁর অবস্থার অবনতি হয়, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে। তার পরেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। গত বছর পুজোর আগে ওই হাসপাতালেই এক বার ভর্তি হয়েছিলেন বুদ্ধবাবু। হাসপাতাল সূত্রে বলা হয়েছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক।

বুদ্ধবাবুর অসুস্থতার খবর পেয়ে এ দিন সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বুদ্ধবাবুর কন্যা সুচেতনার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”আমরা কেউ চিকিত্‍সক নই। চিকিত্‍সকেরা সব রকম চেষ্টা করছেন। বুদ্ধবাবু দ্রুত সেরে উঠুন, এই কামনা করছি।

আরও পড়ুন: পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে বিজেপির আর নয় অন্যায় কর্মসূচী

আর বৌদি (বুদ্ধ-জায়া মীরা ভট্টাচার্য), ওঁদের মেয়েকে বলছি, আমরা সব রকম ভাবে সঙ্গে আছি।” হাসপাতালের ভিতরে বুদ্ধবাবুকে দেখার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। সে কথা খেয়াল রেখে সহযোগিতা করার জন্য সকলের কাছে আবেদন জানিয়ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, যে মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে এসএসকেএমের চিকিত্‍সক সরোজ মণ্ডলও আছেন। প্রয়োজন হলে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে আরও সাহায্য করতেও তাঁরা তৈরি। মুখ্যমন্ত্রীর পরে হাসপাতালে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও। তার আগে গিয়েছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালে পৌঁছনোর আগে চিকিত্‍সকদের সঙ্গে কথা বলে আসেন বুদ্ধবাবুর দলীয় সতীর্থ সূর্যবাবু, বিমান বসু ও সুজন চক্রবর্তী। সূর্যবাবু বলেন, ”ওঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যা প্রবল। পরিস্থিতি অনুযায়ী যা যা করণীয়, চিকিত্‍সকেরা সবই করবেন। সে কথাই বলা হয়েছে।”

হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ফুসফুসে পুরনো নিউমোনিয়ার ক্ষত রয়েছে। আগের ছোট ছোট স্ট্রোকের ফলে মস্তিস্কও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত।

পরবর্তী পরীক্ষায় ধরা পড়ে, শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে এবং রক্তে পিএইচ-এর মাত্রা কম। তবে নাড়ির গতি ও রক্তচাপ স্থিতিশীল।কার্বন ডাই অক্সাইড জমে গিয়ে জটিলতা যাতে আরও বেড়ে না যায়, সেই চেষ্টাই চালাচ্ছেন চিকিত্‍সকেরা।

 

 

সুত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

আরও পড়ুন ::

Back to top button