রাজনীতিরাজ্য

‘তৃণমূলে দিদি ছাড়া অন্য কাউকে মানব না’: জিতেন্দ্র

'তৃণমূলে দিদি ছাড়া অন্য কাউকে মানব না': জিতেন্দ্র

সকালে দল ছাড়ার হুমকি, বিকেলে নেত্রীর ফোনের পরও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠক । রাতে ফের সংবাদ মাধ্যমের সামনে দলের সঙ্গে থাকার বার্তা । দিনভর মন্তব্যের এমন নাগরদোলাতেই ঘুরে বেড়ালেন আসানসোলের বিক্ষুব্ধ পুরপ্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি ।

দলের জেলা সভাপতি হিসেবে তাঁর শেষ সভা! এবার সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেলবেন। শুভেন্দুর পদত্যাগের দিনে জিতেন্দ্র তিওয়ারির এমন মন্তব্যে ব্যাপক শোরগোল।

গত কয়েকদিন ধরে শুভেন্দু, মিহির, রাজীবের পথে হেঁটে বলা যায় প্রায় একধাপ এগিয়ে শুধু দল নয়, খোদ তৃণমূল সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছিলেন আসানসোলের মেয়র । উত্তরবঙ্গ থেকেই আসানসোলের বিক্ষুব্ধ মেয়র জিতেন্দ্রকে সামলাতে ফোন তৃণমূলনেত্রীর।

তারপরও সন্ধেবেলা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠক করতে গেলেন জিতেন্দ্র । প্রায় দেড়ঘণ্টার বৈঠক শেষে বেরিয়ে আসানসোলের মেয়র বললেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গেই আছি ।তবে তৃণমূলে দিদি ছাড়া অন্য কাউকে মানব না ।’

অন্যান্য বিক্ষুব্ধ নেতাদের মতো জিতেন্দ্রর ইঙ্গিতও খুব স্পষ্ট । শুধু আসানসোলের মেয়রই নন, তৃণমূলত্যাগী মিহির গোস্বামী থেকে সুশীল মন্ডল সকলেই সংগঠনের দিকে আঙুল তুলেছেন । এমনকী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার কাজের ধরণও অনেকেরই মনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে ।

এদিন সকালে একটি সভায় আসানসোলের মেয়র বলেন, ‘দলের জেলা সভাপতি হিসেবে হয়তো এটাই আমার শেষ বক্তব্য। দলের সভাপতি আমি, আমাকে মেসেজ করে জানানো হয়েছে ১৮ তারিখ পর্যন্ত কোনও মিটিং-মিছিল করবেন না। পশ্চিম বর্ধমানের নেতাদের আর ভয় দেখিয়ে রাখা যাবে না। এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি বললে চলে যাব । ‘

এরপরই আসানসোলের পুরসভার বিক্ষুব্ধ প্রশাসকের কাছে আসে খোদ ‘দিদি’র ফোন । দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ উত্তরবঙ্গ থেকে ফোন করে জিতেন্দ্রকে বলেন,’মাথার গরম করিস না ।

আরও পড়ুন: ঘরের মাঠেই শুভেন্দু-বরণ, স্বাগত জানাবেন শাহ

আমি ফিরে গিয়ে বসব । কী সমস্যা সব সমাধান করে দেব ।’ সূত্রের খবর, ১৮ ডিসেম্বর বিক্ষুব্ধ জিতেন্দ্রর সঙ্গে মুখোমুখি বসার কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কলকাতাতেই হবে সেই বৈঠক । সূত্রের খবর, যেহেতু সমস্ত ক্ষোভ ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে, তাই সেই বৈঠকে থাকতে পারেন হাকিমও ।

রাজনীতি করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অনুদান থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে আসানসোলকে। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে লেখা চিঠিতে মারাত্মক অভিযোগ করেছিলেন আসানসোলের বিদায়ী মেয়র।

এদিন বলেন,’ শিল্পাঞ্চলে দলের ডাকসাইটে নেতা কী তাহলে, ছ’মাস গুলির সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করে নেতা হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। মমতার পর তৃণমূলে সবচেয়ে জনপ্রিয় শুভেন্দু অধিকারীই ।’

এদিন সকালে ফিরহাদ হাকিমকে ফের নিশানা করেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি । বলেন, ‘আপনি যিনি মিনি পাকিস্তানের কথা বলেছিলেন আপনি আমাকে জ্ঞান দেবেন! কাল থেকে বলছেন আমার ভাইয়ের মতো। ভাই হলে তো মুশকিল, বলবেন ভাগ দিন ।’

জিতেন্দ্র তিওয়ারি তো শুধু পশ্চিম বর্ধমান দলের জেলা সভাপতি নন। তিনি পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক- আসানসোলের বিদায়ী মেয়রও বটে। চিঠি বিতর্কের পর ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বৈঠক ডাক পেয়েও আসেননি।

বুধবারের বিস্ফোরক বক্তব্যের পর সেই জিতেন্দ্রর কাছে এল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন। তারপরও বিকেলে কাঁকসায় বিদ্রোহী তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে পৌছে গেলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। মুখোমুখি হলেন শুভেন্দু অধিকারীর।

সূত্রের খবর, কাঁকসায় সুশীল মন্ডলের বাড়ির এই ঘনিষ্ঠ বৈঠকেই ১৯ তারিখ অমিত শাহের জনসভাতেই বিজেপিতে যোগদানের কথা জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী ।

 

সুত্র: নিউজ ১৮ বাংলা

আরও পড়ুন ::

Back to top button