ঝাড়গ্রাম: শেখ তকবির আলি খুনের ঘটনায় ধৃতদের চরম শাস্তির দাবিতে বুধবার তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো ও জেলা তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের নেতাদের নেতৃত্বে নজরকাড়া মৌন পদযাত্রা করলেন রাধানগর গ্রামের বাসিন্দারা। বিকেলে রাধানগর গ্রাম থেকে হাতে মোমবাতি নিয়ে কয়েক হাজার মানুষের মৌন পদযাত্রাটি শুরু হয়। গোড়া থেকে পদযাত্রার পুরোভাগে ছিলেন টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি আর্য ঘোষ, জেলা সংখ্যালঘু সেলের নেতা সুবান আলি, শেখ আব্দুল কাদির বুলেট প্রমুখ। পরে পদযাত্রায় যোগ দেন ছত্রধর ও তাঁর স্ত্রী নিয়তি। শহরের পাঁচমাথা মোড়ে পদযাত্রাটি শেষ হয়।
সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম থানার রাধানগর গ্রামে তকবিরের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন ছত্রধর। এই খুনের ঘটনায় বিজেপিকে দায়ী করে ছত্রধর বলেন, “বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি খুন-সন্ত্রাস শুরু করেছে।” খুনের অভিযুক্তরা বিজেপির লোক বলেও দাবি করেন তিনি। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক চরম শাস্তির দাবি করেছেন ছত্রধর। এলাকাবাসী অবশ্য জানান, বুধবার তৃণমূলের লোকজন থাকলেও অরাজনৈতিক ভাবে পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল।
গত ৮ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবা এলাকায় ক্রিকেট খেলা দেখতে এসে আক্রান্ত হন শেখ তকবির আলি। অভিযোগ শহরের গাইঘাটার বাসিন্দা কুখ্যাত জমি মাফিয়া বিশ্বজিৎ প্রধান ও তাঁর আরও দুই সঙ্গী তকবিরকে লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি করে। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় লোহার রড দিয়ে তকবিরের মাথায় আঘাত করা হয়। অভিযুক্তরা একটি গাড়িতে চেপে চম্পট দেয়। তকবিরকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : তিনমাস বেতন না পেয়ে ঝাড়গ্রাম করোনা হাসপাতালে ঠিকা-কর্মীদের বিক্ষোভ
কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে তকবিরের মৃত্যু হয়। বিশ্বজিৎ সহ তিন জনের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তকবিরের ভাই শেখ সাবির আলি। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ৯ ডিসেম্বর রাধানগর মোড়ে ঝাড়গ্রাম-মেদিনীপুর ভায়া ধেড়ুয়া রাস্তা প্রায় সাত ঘন্টা অবরোধ করে রাখেন।
পুলিশ ৭২ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। এরপরেই ওই রাতেই গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়ি এলাকা থেকে বিশ্বজিতকে এবং ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের লোধাশুলি এলাকা থেকে ওপর অভিযুক্ত শুভঙ্কর সাউকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপর এক অভিযুক্ত বিশ্বজিতের বাবা মণি প্রধান এখনও অধরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল কর্মী তকবিরও জমির কারবার করতেন। মাস খানেক আগে জমিজমা নিয়ে তকবিরের সঙ্গে বিশ্বজিতের হাতাহাতি হয়। ওই সময়ে তকবির বিশ্বজিতকে মারধরও করেছিলেন বলে অভিযোগ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পুরনো আক্রোশই তকবিরের উপরে হামলা চালিয়েছিল বিশ্বজিৎ। যদিও তকবির কাণ্ডে রাজনীতি যোগের দাবি করেছেন তৃণমূলের নেতারা।