“কবিগুরুর লেখা জাতীয় সঙ্গীত বদলাতে দেওয়া হবে না” :কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় পোস্টার মেরে দাবি জানাল ‘ঐক্য বাংলা’
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা : বিজেপি সাংসদ সুব্রাহ্মণ্যম স্বামী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত জাতীয় সঙ্গীত ‘জন গণ মন’ বদলাতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আবেদন জানিয়েছেন। এই ঘটনার পর থেকেই স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ আপামর বাঙালি সমাজ।
এবার বিজেপি সাংসদ সুব্রাহ্মণ্যম স্বামীর এই আবেদনের বিরুদ্ধে গত বুধবার ২৩শে ডিসেম্বর দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পোস্টারিং কর্মসূচি গ্রহণ করল ‘ঐক্য বাংলা’।
কেন এই কর্মসূচি গ্ৰহণ করা হল ?
উত্তরে ‘ঐক্য বাংলা’র সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতী সুলগ্না দাশগুপ্ত জানান , ” বিজেপি সাংসদ যেভাবে কবিগুরুর লেখা জাতীয় সঙ্গীত বদলাতে চেয়েছেন তা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। তাঁর এই আবেদনের তীব্র বিরোধী আমরা। সুতরাং আমাদের প্রতিবাদটা আরো জোরালো ভাবে করার লক্ষ্যে ও আরো সংখ্যক বাঙালিকে এই বিষয়ে সচেতন করার জন্য সচেতন করার জন্য এই পোস্টারিং কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।”
এই ব্যাপারে ঐক্য বাংলার সামগ্রিক কর্মসূচির কথা বলতে গিয়ে সংগঠনের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নেতা অভিজিৎ গুহ নিয়োগী জানান,” আমরা গত ১৩-২০ ডিসেম্বর ‘জাতীয় সঙ্গীত সপ্তাহ’ কর্মসূচি পালন করি যেখানে সামাজিক মাধ্যমে ও পথে নেমে সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর এই আবেদনের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করার প্রক্রিয়া চলে। আমরা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাই। তাছাড়াও গত ২০শে ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার মোহর কুঞ্জের সামনে একটা প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। সুতরাং এই বিষয়ে আমরা প্রথম থেকেই সরব।”
আরও পড়ুন : স্বপরিবারে প্রতারণার ব্যাবসা – কোটী টাকা তছরুপী – মিথ্যা অপহরণের মামলা ফাঁস করল কলকাতা পুলিশ
এই কর্মসূচীগুলি সময় ও শ্রমসাপেক্ষ। এতো ছোট সংগঠন হয়েও কেন ও কিভাবে এই প্রতিবাদ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে ঐক্য বাংলা ?
উত্তরে ‘ঐক্য বাংলা’র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ঐক্যযোদ্ধা সৌম্য চৌধুরী বলেন, “পোস্টারের উপযোগিতা আজকের ব্যস্ত বাঙালির কাছে সব চেয়ে বেশি, কারণ পথ চলতে চোখে পড়বে। আরো বেশি সংখ্যক বাঙালির কাছে পৌঁছে যেতে পারব আমরা। আমরা আমাদের আন্দোলনের সত্যতায় বিশ্বাস করি। তাই সময়, শ্রম, অর্থ যতই যাই লাগুক, বাঙালির কাছে পৌঁছনোর জন্য, তাঁদের এই আন্দোলনে সামিল করার জন্য, যা করা দরকার আমরা তাই করবো। ”
একই আবেগের প্রতিধ্বনি করে কর্মসূচিতে উপস্থিত ঐক্য বাংলা সংগঠনের সমর্থক যাজ্ঞবল্ক্য সিংহ বলেন, ” কোনোভাবেই কবিগুরুর রচিত জাতীয় সঙ্গীত বদলাতে দেওয়া হবে না।”
‘ঐক্য বাংলা’র তরুণ সদস্য দেবায়ন সিংহ কার্যতঃ বিজেপির দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন,” বহিরাগত নেতাদের বাংলার মাটিতে নিয়ে এসে যতই মুখে রবীন্দ্র স্তুতি করা হোক, এরা আসলে একটা বাঙালি বিদ্বেষী দল। তাই তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ও আদর্শকে মুছে ফেলতে চায়। আমরা যতদিন আছি, শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে এই ঘৃণ্য চক্রান্তের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।”
অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে যেভাবে এই ইস্যুতে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করছে বাংলার প্রথম মুক্তপন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
এখন এটাই দেখার যে ঐক্য বাংলা সংগঠনের ক্রমাগত চাপে বিজেপি সাংসদ সুব্রাহ্মণ্যম স্বামী তাঁর এই অদ্ভুত দাবি থেকে সরে আসেন কি না।