মতামত

বাংলাতে নেতাদের একাংশ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ

মৃত্যুঞ্জয় সরদার

বাংলাতে নেতাদের একাংশ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ - West Bengal News 24

বাংলার নেতারা দুর্নীতিগ্রস্ত এমনই অভিযোগ উঠেছে বহুবার, বহু ক্ষেত্র বিশেষে উপরে । কেউ কয়লা দুর্নীতি, কেউ গরু পাচার সাথে দুর্নীতি সঙ্গে যুক্ত,কেউ সরকারি প্রকল্পের অর্থনৈতিক দুর্নীতিগ্রস্থ সাথে যুক্ত। তবে সব অভিযোগ সেই ভাবে প্রমানিত না হলেও অভিযোগ উঠেছে বহু নেতার দিকে। অভিযোগের ফলে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের একাংশেরা নিজেকে বাঁচাতে একের পর এক দল পরিবর্তন করেছে। তার উদাহরণ এই বাংলায় ভরি ভরি আছে।একুশের নির্বাচনের আগে রাজ্যে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে আমফান ‘দুর্নীতি’। আমফানের ত্রাণের টাকা নয়ছয়, এবং অপাত্রে দান হয়েছে বলে বহুবার সুর চড়িয়েছে বিজেপি (BJP)।

এসবের মধ্যে হাই কোর্টের CAG-কে দিয়ে তদন্ত করানোর নির্দেশ অস্বস্তি বেশ খানিকটা বাড়িয়েছে তৃণমূলের। খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) এসে আমফান নিয়ে হাই কোর্টের রায়কে হাতিয়ার করে রাজ্যকে খোঁচা দিয়ে গিয়েছেন। ভোটের আগে তাই আমফান অস্বস্তি ঝেড়ে ফেলতে ফের আদালতেরই দ্বারস্থ হল সরকার। এখন দেখার আদালত কী সিদ্ধান্ত নেয়।তবেই গত মে মাসের বিধ্বংসী আমফানে (Amphan) ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরির পর পরই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্তদের নতুন তালিকা তৈরি করে পরিবার পিছু ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়াও হয়। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইট, এগিয়ে বাংলা ‘‘তে সাহায্য প্রাপকদের তালিকাও তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। মামলা করেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাম প্রভাবিত কৃষক সংগঠন-সহ অন্যান্যরা। মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল আমফানের ত্রাণ বণ্টনে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা সাহায্য পাননি। পাশাপাশি কেন্দ্র থেকে যে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে, তা খরচ করা হয়নি। সবকটি মামলা একসঙ্গে শুনানির পর ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কতজনকে টাকা দেওয়া হয়েছে এবং কতজন টাকা পায়নি, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সিএজি-কে তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছিল হাই কোর্ট ।

আরও পড়ুন : শনিবার বর্ধমানে জে পি নাড্ডার রোড শো ঘিরে চড়ছে রাজনৈতিক পারদ

পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ক্যাগের সঙ্গে যেন সমস্তরকমের সহযোগিতা করা হয়। সেই নির্দেশ পুর্নবিবেচনার আরজি জানিয়েছে রাজ্য।রাজ্য বিরোধী দল বিজেপি আম্ফান দুর্নীতির টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ কে সামনে রেখে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ভোটে জেতার সম্ভাবনা এগিয়ে নিয়ে চলেছে এই রাজ্যে।বাংলার রাজনীতিতে অবস্থান পরিবর্তন ঘটেছে ২০১৯ লোকসভা ভোটের পরেই,ভালো মানুষের রাজনীতিতে কোন জায়গা নেই সে কথা পরিষ্কার গ্রামবাংলায় কান পাতলে শোনা যায়।বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে? এমন পরিস্থিতি বাংলার প্রতিটি গ্রামে! ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর যতসব দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা নিজেদের ক্ষমতা রক্ষা করার জন্য সিপিএম থেকে ,তৃণমূলে যোগদান করেছিল। মানুষের উপর যে অত্যাচার সেই অত্যাচার আজও অব্যাহত,এর থেকে রেহাই পায়নি দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা, উত্তর ২৪ পরগনা ও কুচবিহার এবং মালদহ, জলপাইগুড়ি সহ অন্যান্য জেলা গুলি!যারা পার্টির নেতাদের মোটা টাকা মুনাফা দিতে পারছে, এবং তাদেরকে বাবু বাবু করতে পারছে, তাদেরকে এক বাড়ির মধ্যে একা দিক বাংলা আবাস যোজনা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা টাকা পাইয়ে দিচ্ছে নেতারা এমনই অভিযোগ উঠেছে গ্রামবাংলা থেকে।যারা বাম সরকারকে বিদায় জানাবার জন্য সত্তিকারের আন্দোলন করেছিল তৃণমূল দলের জন্য, তাদের উপর অত্যাচার আজও অব্যাহত।গ্রামবাংলার সাংবাদিকরা যারা সত্যি কথা লিখেছিল সেই সময়, আজও তাদের পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি।তাদেরকে অনাহারে মারার চেষ্টা চলছে, তৎকালীন বামফ্রন্টের নেতা ছিলো, আজ তারা তৃণমূলে । বামফ্রন্ট থাকাকালীন এদের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ ছিল আর সে কথা সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে এসেছিল।এসব সাংবাদিকরা এদের বিরুদ্ধে লিখেছিল আজ তারা এইসব নেতাদের হাতে অত্যাচার অবিচার থেকে রেহাই পাচ্ছে না।দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিং ২ নম্বর ব্লকের তেমনই এক সাংবাদিক পরিবার আজ অত্যাচারিত অবহেলিত নিপীড়িত।

প্রশাসনের বহু আমলা সে কথা জানেন, তারপরও তারা পরিবার রেহাই পাচ্ছে না। আজকের যুগে অবৈধ সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে ক্ষমতা একটি বড় অস্ত্র। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন পৃথিবীর বহু নেতা। সম্পদ অর্জনে তারা একে অপরকে ছাড়িয়ে গেছেন। ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় পাঁচ দুর্নীতিবাজ নেতাকে নিয়ে লিখেছেন পরাগ মাঝি।এরকম দুর্নীতিবাজ নেতা তাই বাংলাতে কম নেই সে অভিযোগ বহুকাল ধরে চলে আসছে।রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনের সাথে সাথে নিজেদেরকে পরিবর্তন করেছে।আজ সিপিএম, কাল টিএমসি আগামী দিনে বিজেপি করার ইচ্ছাও তারা প্রকাশ করেছে।নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত এরা সবাই এমনই অভিযোগ দীর্ঘদিনের।আমাদের রাজ্যের প্রায় সব জেলায় বন্দুকের নলে চালায় বিচারব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন আইন কেউ ধার ধারে না।যেখানে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নেই সেখানে সাধারণ মানুষের অবস্থা কেমন,সাংবাদিকদের ছবি তোলার অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেয়া হচ্ছে এ কথা প্রকাশ্যে দিনের আলোর মতো স্বচ্ছ। সত্য কথা বললে তার কোন অনিবার্য। ১৯৬৯ সালের জরুরি অবস্থার মতো,সেই সময় নকশালদের জন্ম হচ্ছে বাড়ি থেকে বের হলেই ফিরবে কিনা, সে নিয়ে চিন্তায় থাকতে হতো বাড়ির লোকেদের!অনেকেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি খুন হয়ে গেছে!তেমনি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি পরিণতি হয়েছিল ১৯৭১ সাল পর্যন্ত।আজও সেই পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর দিন, কে কখন যে কোথায় খুন হয়ে যাচ্ছে, না বোঝার আগেই। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে বাংলার সাধারন মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এর জন্য দায়ী কে বা কারা? তবেই আজ যারা রক্ষক তারাই ভক্ষক, সে অভিযোগ আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে গিয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা। আর এর জন্য দায়ী একশ্রেণীর নেতারা।

আরও পড়ুন : শুভেন্দু-ছোঁয়ায় অপবিত্র শহীদ বেদী গঙ্গাজলে ‘শুদ্ধ’ করে পার্থ-মদনের শ্রদ্ধা

নেতাদের একাংশ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। ভেতরে ভেতরে অনেকের বিজেপির সঙ্গেও যোগ রয়েছে। ‘দিদিকে বলো’ অভিযোগ এমনি কথা উঠে এসেছে সবথেকে বেশি গ্রাম বাংলা থেকে।তৃণমূল কংগ্রেসের এক শ্রেণির নেতা–কর্মী যে তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত তা সাধারণ মানুষের জানাই ছিল৷ ভুক্তভোগী মানুষ এই তোলাবাজিতে অতিষ্ঠ, বিরক্ত, কোথাও কোথাও আতঙ্কিত৷ এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের সামনে পড়ে তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টতই বুঝতে পেরেছেন রাজ্যের বিরাট সংখ্যক মানুষের তৃণমূল সরকার সম্পর্কে ক্ষোভের অন্যতম কারণ নেতা–কর্মীদের তোলাবাজি এবং দুর্নীতি৷ এই অবস্থাতেই তিনি দলীয় এক কর্মীসভায় বলেছেন, ‘দুর্নীতি বরদাস্ত করব না’, ‘চোরদের দলে রাখব না’৷বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ তৃণমূলের এই দুর্নীতি নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই কটাক্ষ করতে ছাড়েননি৷ কিন্তু এ রাজ্যে ক্ষমতায় না আসতেই তারাও দুর্নীতিতে হাত পাকিয়ে ফেলেছেন৷ গ্যাসের ডিলারশিপ পাইয়ে দেওয়ার ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়া, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিজেপি নেতা–কর্মীদের টাকা তোলার বিষয়টি কিছুদিন আগে প্রকাশ্যে এসেছিল৷ অন্য দল থেকে দুর্নীতি এবং নানা অপরাধে যারা বহিষ্কৃত হচ্ছে, তাদের তো তারা আদর করে দলে নিচ্ছেন৷ ক্ষমতায় আসার আগেই যারা এমন বাঁধনহারা, ক্ষমতায় এলে তাদের দুর্নীতি যে কত মাত্রাছাড়া হবে, ভাবলে গা শিউরে ওঠে৷ তবেই সচ্ছ প্রশাসনের দাবিদার বিজেপির কাছে খারাপ খবর। ১৮০টি দেশের মধ্যে দুর্নীতিতে ভারত ৮১ নম্বরে। নেপাল রয়েছে ১২২ নম্বরে, বাংলাদেশ ১৪৩ নম্বরে, পাকিস্তান ১১৭ নম্বরে আর আফগানিস্তান ১৭৭ নম্বর স্থানে। দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) ২০১৮ সালের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ভারতের সঙ্গে তালিকায় ৮১ নম্বর স্থান ভাগাভাগি করেছে ঘানা, মরোক্কো আর তুরস্ক। সেইসঙ্গেই রিপোর্ট বলছে, দুর্নীতি নিয়ে খবর করতে গিয়ে ভারতে নিহত হয়েছেন ১৫ জন সাংবাদিক। অন্যদিকে, গত বছর ১৫ তম সূচকে থাকা বাংলাদেশ এবার ২ ধাপ উন্নতি করেছে। বাংলাদেশের মতোই সমান স্কোর পেয়েছে আরও পাঁচটি দেশ। এগুলি হলো ক্যামেরুন, গাম্বিয়া, কেনিয়া, মাদারগাস্কা ও নিকারাগুয়া। সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৭। গত বছর যা ছিল ১৫।

এবার বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ সোমালিয়া। সবচেয়ে কম দুর্নীতির দেশ নিউজিল্যান্ড। দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে আফগানিস্তান। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বের ১২টি খ্যাতনামা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপ থেকে পৃথকভাবে তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে দুর্নীতির ধারণাসূচক প্রতিবেদন তৈরি করে। আর দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের তালিকায় নিঃসন্দেহে সবার ওপরে থাকবেন ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ সুহার্তো। তিনি ছিলেন ইন্দোনেশিযার দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট। ১৯৬৭ সালে দেশটির ক্ষমতায় এসে একাধারে ৩১ বছর শাসন করেছেন। সুহার্তোর ক্ষমতায় আসার আগের বছরটি ছিল ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। সে সময় ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ ছিলেন এই জেনারেল। ১৯৬৫-৬৬ সাল জুড়ে তার নেতৃত্বে এক ভয়াবহ হত্যাকাÐ সংঘটিত হয়। সে সময় ইন্দোনেশিয়ার সেনাদের হাতে মৃত্যুবরণ করে লাখ লাখ কমিউনিস্ট ও কমিউনিস্ট সমর্থক। ক্ষমতায় আসার পর ১৯৬৮ সালের মার্চ নাগাদ জেনারেল সুহার্তো পাকাপোক্তভাবে ইন্দোনেশিয়ার সর্বেসর্বা হয়ে ওঠেন। দেশটির সাবেক শাসক এবং জাতির পিতা সুকর্নকে গৃহবন্দি করে রাখা হয় এবং সেখানেই তিনি ১৯৭০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। সুহার্তো বার্কলে মাফিয়া নামে পরিচিত একদল অর্থনীতিবিদ এবং মার্কিন সাহায্যে রাতারাতি ইন্দোনেশিয়াকে বদলে ফেলেন। সরকারি সম্পত্তি বেসরকারিকরণ করা হয়। ধনী গোষ্ঠী গজিয়ে ওঠে যত্রতত্র, বাড়তে থাকে ধনী-গরিব বৈষম্য, দুর্নীতি এবং রাষ্ট্রসমর্থিত মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। জেনারেল সুহার্তোর এই নতুন ঘরানার সরকারকে বলা হয় ‘নিউ অর্ডার’। ইন্দোনেশিয়ার রাজনীতিতে কমিউনিস্টদের ইতি টানা হয়ে যায়।

১৯৭৫ সালে এই সুহার্তোর নির্দেশেই তার কুখ্যাত জেনারেলরা পূর্ব তিমুরে হামলা চালায় এবং ঠিক একইভাবে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ঘটায়।১৯৬৫ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে সুহার্তোর নেতৃত্বে ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি লক্ষ করা যায়। দেশটির বার্ষিক উৎপাদন ৬.৭ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। দেশটির জিডিপি বেড়ে মাথাপিছু আয় ৮০৬ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ১১৪ মার্কিন ডলারে। ১৯৯৭ সালে ইন্দোনেশিয়ার দারিদ্র্যসীমা ১১ শতাংশে নেমে এসেছিল, যেখানে ১৯৭০ সালে দারিদ্র্যসীমা ছিল ৪৫ শতাংশে। ১৯৬৬ সালে দেশটির মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৭ বছর। সুহার্তোর আমলে এই আয়ুসীমা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭ বছরে। নবজাতকের মৃত্যুহার ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনা হয়। শুধু তাই নয়, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ওঠে দেশটি। এই কৃতিত্বের জন্য জাতিসংঘ থেকে সুহার্তোকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।কিন্তু এত উন্নয়ন সত্তে¡ও স্বেচ্ছাচারিতা এবং সীমাহীন দুর্নীতি অসন্তোষের বীজ ছড়িয়ে দেয় ইন্দোনেশিয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে। এই অসন্তোষ গণবিস্ফোরণে রূপ নেয় ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝিতে। বিভিন্ন ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে লভ্যাংশের ভাগ পেতেন সুহার্তো। এভাবে তিনি কত সম্পদের মালিক হয়েছিলেন তা এখনো অজানা। তবে, ধারণা করা হয় তার সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১৫ থেকে ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে।এছাড়াও সন্তান, পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়দের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে অনৈতিকভাবে সাপ্লাই কনট্রাক্ট এবং বিশেষ করমুক্ত সুবিধা দিতেন সুহার্তো। অনেক প্রতিষ্ঠান লাল ফিতার দৌরাত্ম্য থেকে মুক্ত হয়ে বাধাহীন ব্যবসা করার জন্য সুহার্তোর ঘনিষ্ঠ মহলের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলত।

বিভিন্ন নামে সুহার্তোর বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে সুবিধাভোগীদের ঘুষের অর্থ জমা হতো। একটা সময় অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, ঘুষ ছাড়া ইন্দোনেশিয়ায় ব্যবসা করা ছিল অসাধ্য একটি কাজ। আর বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক লভ্যাংশের আড়াই শতাংশ জমা হতো সুহার্তোর ঝুলিতে।১৯৯৮ সালে এশিয়ার আর্থিক সংকট ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিকে পতনের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। সে বছরই তীব্র অসন্তোষ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা এবং আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন সুহার্তো। পদত্যাগের দুই বছর পর তার বিরুদ্ধে সাতটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান থেকে ৫৫০ মিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে এবং তাকে গৃহবন্দি করা হয়। কিন্তু অসুস্থতাজনিত কারণে সে সময় তার কাঠগড়ায় দাঁড়ানোরও জোর ছিল না। ২০০৭ সালের জুলাই মাসে তার বিরুদ্ধে দেড় বিলিয়ন ডলারের একটি নাগরিক মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলারও কোনো শুনানি হয়নি। কারণ মামলা দায়েরের কয়েক মাসের মধ্যেই ২০০৮ সালের ২৭ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন সুহার্তো। এদিকে রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাতের আবহে নবান্ন থেকে হঠাৎ রাজভবনে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল। সৌজন্য সাক্ষাৎ, জানানো হল নবান্ন সূত্রে। কী নিয়ে দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে? তুঙ্গে জল্পনা।

বিজেপিতে যোগ দেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় পদ পেলেন শুভেন্দু অধিকারী। জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান করা হল নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ককে। এদিন সবংয়ের সভা থেকে তৃণমূলকে তোপ দোগেন শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা শুক্রবার সবংয়ে সভা করবে তৃণমূল।জলপাইগুড়ির সাংগঠনিক দলকে কড়া বার্তা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, দ্বন্দ্ব ভুলে সবাইকে একসঙ্গে চলার নির্দেশ দেন তৃণমূল যুব সভাপতি। যদিও বৈঠক শেষে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন এক তৃণমূল নেতা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফর গুরুত্ব দিতে চাইছে না বিজেপি।হাওড়ার জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সরব হলেন দলের জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, জেলা নেতাদের অসহযোগিতার জন্যই অনেকে দল ছাড়ছেন। সেইসঙ্গে সরকারি পরিষেবা মানুষ সর্বত্র পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।  গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল।  দু’পক্ষের কাজিয়া নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।

আরও পড়ুন ::

Back to top button