ঝাড়গ্রাম

জড়িয়ে গাছের প্রাণ বাঁচালেন কয়েকশো গ্রামবাসী

স্বপ্নীল মজুমদার

জড়িয়ে গাছের প্রাণ বাঁচালেন কয়েকশো গ্রামবাসী - West Bengal News 24

বেলপাহাড়ি: এ যেন চিপকো আন্দোলনের নয়া ইতিহাস লেখা হল ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়িতে! গাছ জড়িয়ে ধরে কাটতে বাধা দিলেন কুড়মি জনজাতির গ্রামবাসীরা।

জানা গিয়েছে, বন দপ্তরের শালজঙ্গল নিয়ম মাফিক কাটা হচ্ছিল। কিন্তু সেই কাজে বাধা দেন কুড়মি সমাজের লোকজন। রবিবার বেলপাহাড়ি ব্লকের ভেলাইডিহা পঞ্চায়েতের এঁঠেলার জঙ্গল এলাকায় এমন ঘটনায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে যায় বেলপাহাড়ি থানার পুলিশ। আদিবাসী কুড়মি সমাজের লোকজনের বাধায় অবশ্য গাছ কাটা বন্ধ হয়ে যায়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত কয়েকদিনে ফরেস্ট ফেলিংয়ের নামে পাঁচশো শালগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। বন দফতরের বক্তব্য, নিয়ম মাফিক জঙ্গলের শালগাছ কয়েক বছর অন্তর কাটা হয়। কাটা জায়গা থেকে আবার শাল গাছ জন্মায়। কাটা গাছ বিক্রি করে বনজ সম্পদের লভ্যাংশের ৪০ শতাংশ বন সুরক্ষা কমিটি গুলিকে দেওয়া হয়। এটা জঙ্গল ধ্বংস নয়। তবে কুড়মি সমাজের লোকজন অভিযোগ করেন, জঙ্গলের গাছ কমে গিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন : ঝাড়গ্রাম শহরে বাড়ি-বাড়ি দু’ভাগে জঞ্জাল সংগ্রহ, উদ্যোগ পুরসভার

আদিবাসী কুড়মি সমাজের রাজ্য কমিটির কোষাধ্যক্ষ নির্মল মাহাতো বলেন, “কুড়মিরা শালগাছকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করেন। কুড়মিদের ধর্মীয় ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে এবং জীবনচর্যায় পবিত্র শালগাছ জড়িয়ে রয়েছে। তাই আমরা জঙ্গলের শাল গাছ কাটতে দেব না।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলপাহাড়ি রেঞ্জের এঁঠেলা বিটের ১০ হেক্টর বনভূমির শাল জঙ্গলের গাছ কাটা চলছে কয়েকদিন ধরে। রবিবার বিষয়টি জানতে পারেন স্থানীয় মেছুয়া, ধুলিয়াপুর, দিয়াশি, বাকড়া গ্রামের কুড়মি সমাজের লোকজন। তাঁরা জঙ্গলে গিয়ে গাছ কাটতে বাধা দেন।

কুড়মি সমাজের লোকজন গাছের সামনে জমায়েত করে গাছ কাটা বন্ধ করে দেন। বিশিষ্ট পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, “ঝাড়গ্রাম জেলায় উন্নয়নের দোহাই দিয়ে গত কয়েক বছরে হাজার হাজার শাল গাছ কাটা হয়েছে। শালগাছ প্রাকৃতিক ভাবে জন্মায়। ফলে শালগাছের সংখ্যা কমছে। কুড়মি সমাজ ও গ্রামবাসীর এমন সাহসী উদ্যোগকে কুর্নিশ জানাই।”

আরও পড়ুন ::

Back to top button