আন্তর্জাতিক

থমথমে মিয়ানমার, সু চি কোথায়?

থমথমে মিয়ানমার, সু চি কোথায়? - West Bengal News 24

মিয়ানমারে সোমবারের সেনা অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন রাস্তায় রাইফেল কাঁধে টহল দিচ্ছে সৈন্যরা। দেশটির নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী এনএলডি নেতা অং সান সু চিকে নিজ কম্পাউণ্ডে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা গেছে। খবর বিবিসির।

ইয়াঙ্গুনে দেশটির প্রধান বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এয়ারপোর্টের ম্যানেজার। মিয়ানমার টাইমস পত্রিকা জানিয়েছে, আগামী ১ জুন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক এ বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে এবং বাতিল করা হয়েছে সব ধরনের ফ্লাইট উঠা নামার অনুমতি।

অং সান সু চিসহ এনএলডি নেতাদের আটকে রাখা হলেও বেশিরভাগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মুক্তি দিয়ে বাসায় গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। তবে সু চির একজন প্রতিবেশী তাকে দেখেছেন নিজ বাসার কম্পাউন্ডে।

এনএলডির প্রেস অফিসার কি তো এএফপিকে বলেছেন , ‘তার প্রতিবেশী একজন জানিয়েছেন, সু চি ভালো আছেন জানাতে কিছু সময় তিনি কম্পাউন্ডে হাঁটাহাঁটি করেছেন।”

তবে সেনা কর্তৃপক্ষের দিক থেকে এখনো এনএলডি নেত্রীর বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে।

মিয়ানমারে এখন যা হচ্ছে
অভ্যুত্থানের একদিন পর মিয়ানমারের আজকের অবস্থা অনেকটা ‘স্বস্তিহীন শান্তি’র মতো।
বড় শহরগুলোতে সৈন্যরা টহল দিচ্ছে এবং রাস্তাঘাটগুলো নিরব হয়ে পড়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে রাত্রিকালীন কারফিউ।

ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ আবার চালু হয়েছে মঙ্গলবার সকাল থেকে। যদিও ইয়াঙ্গুনে অনেকেই মনে করছেন, গণতন্ত্রের জন্য তাদের দীর্ঘ লড়াই হেরে গেছে।

আরও পড়ুন : একজন নারীসহ চার টিকটকারকে গুলি করে হত্যা

আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রতিবাদও দেখা যাচ্ছে। যেমন সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকরা অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে বুধবার থেকে কাজ বন্ধের হুমকি দিয়েছে। সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে তারা কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন।

ডা. নাইং তু অং বিবিসি বার্মিজকে বলেছেন, ‘এ ধরনের অভ্যুত্থান সহ্য করা যায় না। দেশ ও জনগণকে পরোয়া করে না এমন সামরিক শাসকের অধীনে কাজ করতে পারি না বলে আমি পদত্যাগ করেছি। তাদের প্রতি এটাই আমার সমুচিত জবাব।’

হতাশা ও ক্ষোভ
ইয়াঙ্গুন থেকে বিবিসি বার্মিজ জানিয়েছে, একদিন আগের সেনা অভ্যুত্থানকে হজম করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে পঞ্চাশ লাখ মানুষের শহর ইয়াঙ্গুন। আজ সকালেও রাস্তাগুলো ছিলো স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেকটাই নীরব।

টেলিযোগাযোগ ফিরে আসায় আতঙ্কও কিছুটা কমে এসেছে। একদিন বন্ধ থাকার পর বেসরকারি ব্যাংকগুলো তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। রাজধানী নেপিডোতে পার্লামেন্ট ভবনের চারপাশে সৈন্যরা ট্যাংক নিয়ে টহল দিচ্ছে।

এবারের অভ্যুত্থান রক্তপাতহীন হলেও করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অর্থনীতির ওপর এর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে বিদেশী বিনিয়োগ অনিশ্চিত হয়ে পড়ার ভয় অনেককে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।

সুচির বিষয়ে কোনো সরকারি তথ্য নেই
সোমবার ভোরে আটক হওয়ার পর থেকে অং সান সু চি কি অবস্থায় আছেন সে সম্পর্কে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি আসেনি। এনএলডির সূত্র গুলো অবশ্য বলছেন তিনি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট দুজনেই গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে একজন এমপি বলেছেন, ‘আমাদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যদিও আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা যদি তাদের ছবি দেখতে পেতাম তাহলেও স্বস্তি বোধ করতাম।’

এছাড়া আটক এমপিদের রাখা হয়েছে তাদের সরকারি ভবনেই যাকে একজন এমপি আখ্যায়িত করেছেন ‘ওপেন এয়ার ডিটেনশন সেন্টার’ হিসেবে।

অং সান সু চি ১৯৮৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আটক অবস্থায় ছিলেন। এবার আটকের আগ মূহুর্তে দেয়া বিবৃতিতে তিনি জনগণকে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন।

সূত্র : জাগো নিউজ

আরও পড়ুন ::

Back to top button