জানা-অজানা

বাঁশ চাষ করে কোটিপতি রাজশেখর পাতিল

বাঁশ চাষ করে কোটিপতি রাজশেখর পাতিল - West Bengal News 24

রাজশেখর পাতিল, গ্রামে তিনি পরিচিত বাঁশ চাষী হিসেবে। এক সময়ে দেনায় ডুবে থাকা রাজশেখর স্রেফ বাঁশ চাষ করে আজ কোটিপতি।বছরে তিনি অন্তত ১ কোটি টাকা আয় করেন বাঁশ বিক্রি করে। তার ওপর চাষের জমিতে ফল, সবজির মতো অন্যান্য ফসল তো রয়েছেই।

‘রাজশেখর পাতিল বাম্বু’ নামে তার একটি ইউটিউব চ্যানেলও রয়েছে। সেখানে তার ফলোয়ারের সংখ্যা ৮ হাজারেরও বেশি। কী ভাবে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ চাষ করে সাফল্য পাওয়া যাবে তা শেখান তিনি।

আজ গ্রামের সবাই তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ; কিন্তু একটা সময় এমন ছিল যখন তাকে নিয়ে সবাই ঠাট্টা করতেন। ‘ব্যর্থ’ হিসেবে দাগ পড়ে গিয়েছিল তার নামের সামনে।

রাজশেখরের জন্ম মহারাষ্ট্রের খরা কবলিত অঞ্চল নিপানি গ্রামে। ‘নিপানির’ বাংলা অর্থ হল পানি বা জলহীন। তাদের গ্রামে প্রবল পানিসঙ্কট ছিল। রাজশেখরের বাবাও একজন চাষী ছিলেন।

আরও পড়ুন : কোন দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি বই পড়ে

রাজশেখর তখন পড়াশোনা করছেন। দেনার ভার মাথায় নিয়েই তিনি পড়াশোনা শেষ করেন। তারপর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় যোগ দেন। সেখান থেকে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা বেতন পেতেন তিনি।

পরে তার বেতন বেড়ে হয় ৬ হাজার টাকা; কিন্তু ঋণ শোধ করার জন্য এই টাকা যথেষ্ট ছিল না। তার বয়স যখন ২৭ বছর, তখন পরিবারের হাল ধরার জন্য বাবা-মা তাকে গ্রামে ডেকে পাঠান।

প্রথমে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি অফিসার হওয়ার; কিন্তু সাফল্য আসেনি। তারপর তাদের ১৬ একর জমিতে ফলের চাষ শুরু করেন।

ফল চাষ লাভজনক ছিল। আম, জাম, সফেদার চাষ করতেন তিনি। তা থেকে দৈনিক ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় হত।

রাজশেখর তার কাছ থেকে সেই সমস্ত বাঁশ গাছ নিয়ে নিজের জমির চারপাশে পুঁতে দেন। উদ্দেশ্য ছিল জমির বেড়া হিসাবে সেগুলো কাজে লাগানো।

২০০৫ সাল থেকে গ্রাহক নিজে থেকেই খোঁজ নিয়ে বাঁশ কেনার জন্য তার কাছে আসতে শুরু করলেন। সে বছর বাঁশ বিক্রি করে ২০ লাখ টাকা উপার্জন করেন তিনি। ওই বছর থেকেই বিষয়টি গুরুত্ব পায় রাজশেখর কাছে। সারা দেশ ঘুরে বাঁশের বিভিন্ন প্রজাতির চারা নিয়ে এসে জমিতে পুঁততে শুরু করে দেন সে বছর থেকেই। কারণ তিনি বুঝে গিয়েছিলেন এই ব্যবসা কতটা লাভদায়ক।

বাঁশ গাছের খুব একটা পরিচর্যা করতে হয় না। চাষে পানিও লাগে খুব কম। খরাপ্রবণ পানিসঙ্কটের গ্রামে তাই বাঁশ চাষই হয়ে ওঠে তার কাছে আদর্শ।

গলা পর্যন্ত দেনায় ডুবে থাকা রাজশেখর আজ কোটিপতি। প্রতি বছরে বাঁশ চাষ থেকেই অন্তত ১ কোটি টাকা আয় করেন তিনি। তার নাম লোকের মুখে মুখে ফেরে। গ্রামবাসীরা এখন ‘ব্যর্থ’ রাজশেখরের কাছে বাঁশ চাষের পাঠ নিতে আসেন।

সূত্র: আনন্দবাজার

আরও পড়ুন ::

Back to top button