ঝাড়গ্রাম

শিবির বদলে ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের নায়িকা প্রার্থী

স্বপ্নীল মজুমদার

শিবির বদলে ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের নায়িকা প্রার্থী - West Bengal News 24

ঝাড়গ্রাম: তিনবার ভোটে দাঁড়িয়ে একবারও জিততে পারেনি। সেটা তাঁর দোষ নয়। এতদিন যে দলে ছিলেন সেই ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর সংগঠন বলে এখন কার্যত কিছুই নেই। তবে তৃণমূলের টিকিট পেয়ে এবার জেতার ব্যাপারে একশো শতাংশ নিশ্চিত সাঁওতালি সিনেমার নায়িকা বিরবাহা হাঁসদা। শুক্রবার ঝাড়গ্রাম বিধানসভা আসনে বিরবাহাকেই দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিরবাহাকে কলকাতায় ডেকে পাঠান তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থার প্রধান প্রশান্ত কিশোর।

বিরবাহার সঙ্গে বৈঠকের পরে তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলার যে কোনও একটি আসনে প্রার্থী করা হবে বলে জানান পিকে। বিরবাহা অবশ্য শর্ত দেন ঝাড়গ্রাম আসনে টিকিট পেলে তবেই তিনি ভোটের ময়দানে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পিকের প্রতিশ্রুতি পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় বেহালায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে বিরবাহা তৃণমূলে যোগ দেন। তারপর থেকেই তৃণমূলের অন্দরে বিরবাহাকে নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়। সব জল্পনার অবসান ঘটল শুক্রবার। ঝাড়গ্রাম আসনটি সর্বসাধারণ (জেনারেল) হলেও পিকের প্রতিশ্রুতি মত আদিবাসী সমাজের তরুণ মুখ বিরবাহাকেই প্রার্থী করা হল।

ঝাড়গ্রাম জেলার চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতেই মুখ বদলে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘তরুণ মুখ’কেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।

আরও পড়ুন : ঝাড়গ্রামে স্বামীজি-বিষয়ক যুব সম্মেলন

বিরবাহা এ দিন বলেন, ‘‘অনেকদিন ধরেই মানুষের জন্য কাজ করছি। কিন্তু মানুষের কাজ করার জন্য উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম এতদিন ঠিক পাচ্ছিলাম না। জিতে দিদির হাত শক্ত করব।”

অভিনেত্রী বিরবাহার বাবা প্রয়াত নরেন হাঁসদা ছিলেন জঙ্গলমহলের অবিসংবাদিত আদিবাসী নেতা। ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর প্রতিষ্ঠাতা নরেন হাঁসদা নব্বইয়ের দশকে বিনপুর থেকে দু’বার বিধায়ক নির্বাচিত হন। নরেনের স্ত্রী ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর বর্তমান সভানেত্রী চুনিবালা হাঁসদাও বিনপুরের দু’বারের প্রাক্তন বিধায়ক। যদিও ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে বিনপুর কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে হেরে যান বিরবাহা। এমনকি গত লোকসভা ভোটেও ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে প্রার্থী হয়ে তাঁর জামানতও জব্দ হয়ে যায়। এরও আগে ২০১৩ সালের পুরভোটে ঝাড়গ্রাম শহরে নিজের ওয়ার্ডেই প্রার্থী হয়ে হেরে গিয়েছিলেন।

বিরবাহা অবশ্য মনে করেন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী হিসেবে এবার জিতবেনই।

ঝাড়গ্রামের বিদায়ী বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা গত বছর অক্টোবরে প্রয়াত হন। ঝাড়গ্রাম বিধানসভা আসনটি জেনারেল হলেও ২০১১ ও ২০১৬ দু’বারই জয়ী হন আদিবাসী সম্প্রদায়ের সুকুমার। বিধায়কের মৃত্যুর পরে রাজনীতিতে এসেছেন তাঁর ছেলে সুরজিৎ। পিকে টিমের পরামর্শে প্রয়াত বাবার ছবি নিয়ে গ্রাম-গঞ্জে ১৫ দিন ঘুরে কৃতজ্ঞতা যাত্রা কর্মসূচি করেন সুরজিৎ। তাঁকে প্রার্থী করা হবে বলে জল্পনা বাড়ছিল। কিন্তু সুরজিতের মতো ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাহাতো, শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রশান্ত রায়ের মত অনেক হেভিওয়েট নেতার নাম আলোচনায় ছিল। মমতা অবশ্য বেছে নিলেন সাঁওতালি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিরবাহাকে।

গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক চূড়ামণি মাহাতো ও বিনপুরের বিধায়ক খগেন্দ্রনাথ হেমব্রমকে এবার টিকিট দেননি তৃণমূল নেত্রী। গোপীবল্লভপুরে প্রার্থী হয়েছেন চিকিৎসক খগেন্দ্রনাথ মাহাতো। বিনপুরে প্রার্থী হয়েছেন রাজ্য যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা। নয়াগ্রামে অবশ্য বর্তমান বিধায়ক দুলাল মুর্মুকেই ফের তৃতীয় বারের জন্য টিকিট দিয়েছেন মমতা।

আরও পড়ুন ::

Back to top button