বিজেপির বিরুদ্ধে যৌথ সংগ্রামের ডাক দিয়ে সোনিয়া সহ ১৪ নেতাকে চিঠি মমতার
দ্বিতীয় দফার নির্বাচন রয়েছে নন্দীগ্রামে। ১ এপ্রিল সেখানে ভোট। অর্থাৎ রাত পোহালেই টানাটান উত্তেজনায় শুরু হয়ে যাবে নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে অ–বিজেপি নেতাদের চিঠি লিখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী থেকে শুরু করে শরদ পাওয়ার, এমকে স্ট্যালিন, তেজস্বী যাদব, উদ্ধব ঠাকরে, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, নবীন পট্টনায়েক–সহ প্রত্যেককে চিঠি লিখেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। গণতন্ত্র ও সংবিধানের উপর বিজেপির আঘাতের প্রতিবাদে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এটাই উপযুক্ত সময় বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই চিঠি থেকে জানা গিয়েছে, দিল্লির শাসন ক্ষমতা সংক্রান্ত বিতর্কিত বিলের বিরুদ্ধে সমস্ত অবিজেপি নেতাদের জোটবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন তিনি। এমনকী সিপিআই(এম–এল)–কেও চিঠি দিয়েছেন তিনি। চিঠি গিয়েছে জগন রেড্ডি, কেএস রেড্ডি, ফারুখ আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতি, দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের কাছেও। নির্বাচিত সরকারের তুলনায় দিল্লির উপরাজ্যপালের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা তুলে দেওয়ার বিতর্কিত বিলের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ডাক দিয়েই এই চিঠি তিনি লিখেছেন।
আরো পড়ুন : তৃতীয় দফার ভোটে ৫০ শতাংশ প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা দ্বাদশ শ্রেণি থেকে কম
এই চিঠিতে মোদী সরকারকে নিশানা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, সিবিআই, ইডি–কে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি সরকার। বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের মুখে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতাকে তলব করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাই চিঠিতে মূলত সাতটি বিষয়ের ওপরেই জোর দিয়েছেন তিনি। বারবারই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, দেশের গণতন্ত্র ও সংবিধানকে রক্ষার্থে বিজেপিকে রুখতে অবিজেপি শক্তিগুলিকে একজোট হতে হবে।
আবার নির্বাচিত সরকারের তুলনায় দিল্লির উপ–রাজ্যপালের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা তুলে দেওয়ার বিতর্কিত বিলের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ডাক দিয়েছেন এই চিঠি। এবারের নির্বাচনে নন্দীগ্রাম কার্যত ব্যাটলফিল্ড। শুভেন্দু অধিকারী বনাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বৈরথ ঘিরে টানটান উত্তেজনা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বারবার সরব হচ্ছেন মোদী–শাহরা। এই প্রেক্ষাপটে নন্দীগ্রামে ভোটের মুখে বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়ে সোনিয়া গান্ধীদের মমতার চিঠি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
চিঠির শুরুতেই তিনি বিতর্কিত দিল্লি বিলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। নির্বাচিত সরকারের তুলনায় দিল্লির উপ–রাজ্যপালের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতার বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ডাক দিয়েই এই চিঠি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘বিজেপি দেশের সমস্ত অ–বিজেপি দলগুলির সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করার চেষ্টা করছে। রাজ্য সরকারগুলির ক্ষমতাকে হ্রাস করতে ও স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চাইছে। এক কথায়, বিজেপি ভারতে এক দলীয় স্বৈরাচারি শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।’
কেন্দ্র রাজ্যগুলির সঙ্গে বঞ্চনারও অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। যেভাবে অ–বিজেপি রাজ্যগুলির নেতৃত্বের সঙ্গে কেন্দ্রের দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা রাজনৈতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও রাজ্যগুলির মতামতকে কেন্দ্র গুরুত্ব দেয় না বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন অ–বিজেপি ১৪টি দলের প্রতিনিধিকে লেখা চিঠিতে এই প্রত্যেকটি বিষয় উল্লেখ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।