ওপার বাংলা

মুনিয়ার বোন নুসরাতের বিরুদ্ধেই বহু অভিযোগ

মুনিয়ার বোন নুসরাতের বিরুদ্ধেই বহু অভিযোগ - West Bengal News 24

গুলশানের ফ্ল্যাটে মারা গেছেন মুনিয়া। তার মৃত্যুর পর তার বোন নুসরাত তানিয়া গুলশান থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। এই অপমৃত্যু মামলা তদন্ত করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু এই মামলা তদন্ত করতে যেয়ে তাদের নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তারা এই মামলার বাদী নুসরাতের বিরুদ্ধেই বহু অভিযোগ পাচ্ছেন। টেলিফোনে এবং বিভিন্নভাবে নুসরাতের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদেরকে ব্ল্যাকমেইল করা, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া সহ নানারকম প্রতারণার অভিযোগ আসছে। আর এই সব অভিযোগগুলোর কারণেই এই মামলার তদন্তে সময় লাগছে।

যে মামলাটি করা হয়েছে সেটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা নাকি সত্যিকারের মামলা এটি এখন তদন্তের অন্যতম মূল উপজীব্য বিষয় হয়েছে। যদি শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয় যে নুসরাত কোন কিছু প্রাপ্তির আশায় কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে এই আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলাটি করেছেন তাহলে শেষ পর্যন্ত নুসরাতের বিরুদ্ধেই পাল্টা মামলা হতে পারে। কারণ কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য বা কারো ক্ষতি সাধনের জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা ফৌজদারি কার্যবিধিতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এই ২৬শে এপ্রিলের পর থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে নুসরাত এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অভিযোগ আসছে। এই অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রথমত, বহু ব্যবসায়ীকে ব্ল্যাকমেইলিং করা। মুনিয়া দীর্ঘদিন ঢাকায় থাকতেন এবং তার অভিভাবক হিসেবে নুসরাত তানিয়া সবকিছু দেখভাল করতেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে যে, মুনিয়াকে ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে ফাঁদে ফেলতেন নুসরাত এবং মুনিয়া। ফাঁদে ফেলার পর এই সমস্ত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইলিং করে এবং চাপ দিয়ে টাকা আদায় করতেন। সেই সময় লোকলজ্জায় অনেক ব্যবসায়ী কথা বলেননি। তারা নীরবে নুসরাত-মুনিয়ার দাবি মেনে নিয়ে টাকাপয়সা দিয়েছেন। কিন্তু এখন এই মামলার পর কেউ কেউ মুখ খুলছেন। তবে পুলিশের সূত্রগুলো বলছে যে, আনঅফিসিয়ালি কথা বললে হবে না। তারা চান যে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করে কেউ মামলা করুক।

দ্বিতীয়ত, নুসরাত মুনিয়াকে যে বাসা ভাড়া করে দিয়েছেন সেটিও এক ধরনের প্রতারণা বলে মনে করছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। কারণ, নুসরাত তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন যে এই বাড়িটি বসুন্ধরার এমডি ভাড়া করে দিয়েছেন। কিন্তু বাড়িওয়ালার সঙ্গে কথা বলে এবং বাড়ির দলিল এবং অন্যান্য কাগজপত্রগুলো বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিশ্চিত হয়েছেন যে এই বাড়ি ভাড়াটি নুসরাত এবং তার স্বামী মিলে করে দিয়েছেন। এডভান্স এর টাকাও তিনি দিয়েছেন। কাজেই এই ভাড়ার সঙ্গে বসুন্ধরার এমডির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। আর এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে যে নুসরাত এজাহারে কেন এই মিথ্যাচার এবং প্রতারণার আশ্রয় নিলেন। এর ফলে বাদীর অভিযোগ অনেক দুর্বল হয়েছে বলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মনে করছেন।

তৃতীয়ত, নুসরাত মুনিয়ার শিক্ষাজীবন এবং তার চারিত্রিক বিষয় নিয়েও অনেক অসত্য তথ্য পুলিশের কাছে দিয়েছেন যা পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়েছে। মুনিয়া যে কলেজের ছাত্রী বলে বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন আসলে মুনিয়া সে কলেজের ছাত্রী নয়। মুনিয়ার সম্পর্কে নুসরাত যে সমস্ত তথ্য দিয়েছেন বাস্তবে দেখা গেছে যে সেই তথ্যগুলো সঠিক নয়। বরং অপমৃত্যু মামলা তদন্ত করতে যেয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মুনিয়া সম্পর্কে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাচ্ছেন।

ফলে শেষ পর্যন্ত এই মামলাটি এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। বরং নুসরাতের বিরুদ্ধেই বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। এখন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সেই সমস্ত অভিযোগগুলো তদন্ত করার চিন্তাভাবনা করছে বলে জানা গেছে।

সূত্র : পূর্বপশ্চিমবিডি

আরও পড়ুন ::

Back to top button