‘নজর ঘোরানোর চেষ্টা’, নারদে গ্রেফতারিতে তৃণমূল-বিজেপিকে দুষে CBI-কে তুলোধোনা সিপিআইএমের!
নারদ মামলায় (Narada) কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের (Cbi) তত্পরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল সিপিএম (Cpim)। এদিন দলের তরফে এপ্রসঙ্গে লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র (Suryakanta Mishra) বিবৃতিতে লিখেছেন, ”করোনা মহামারিতে যখন সারা দেশের মানুষের জীবন, জীবিকা অভূতপূর্ব বিপর্যয়ের সম্মুখীন তখনই সরকারের সীমাহীন অপদার্থতা চাপা দিতে মানুষের নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই এই সময়টা বেছে নেওয়া হয়েছে।” এপ্রসঙ্গে বিজেপি (Bjp) ও তৃণমূলকে (Tmc) একযোগে আক্রমণ করেছেন সূর্যকান্ত মিশ্র।
এদিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আজ ১৭ মে রাজ্যের ২ জন মন্ত্রী-সহ তৃণমূল কংগ্রেসের তিন নেতা ও কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকে ‘নারদা’ কান্ডে নিজাম প্যালেসের (Nijam Palace) সিবিআই দফতরে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। করোনা মহামারিতে যখন সারা দেশের মানুষের জীবন, জীবিকা অভূতপূর্ব বিপর্যয়ের সম্মুখীন তখনই সরকারের সীমাহীন অপদার্থতা চাপা দিতে মানুষের নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই এই সময়টা বেছে নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে দেশ ও রাজ্যব্যাপী করোনা মহামরির ভয়ংকর আক্রমণের সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা সিবিআই-র এই পদক্ষেপের আমরা তীব্র প্রতিবাদ করছি। বিজেপি পরিস্থিতিকে ঘোরালো করেছে এবং তৃণমূল কংগ্রেস এই পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করতে তত্পর হয়ে উঠেছে। মহামারি আইন সংক্রান্ত সরকারী নির্দেশ ও সার্কুলারকে অমান্য করে নিজাম প্যালেস-সহ রাজ্যের সর্বত্র সরকারী দলের পক্ষ থেকে অবৈধ জমায়েত করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে সিপিএমের তরফে আরও লেখা হয়েছে, আমরা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চিটফান্ড কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত সকল অপরাধীদের বিচার ও লুষ্ঠিত মানুষের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবী নিয়ে লড়াই করছি। বহু গরীব ও সাধারণ মানুষ এই আর্থিক প্রতারণার শিকার হয়েছেন এবং অনেকেরই দুখঃজনক মৃত্যু হয়েছে। নারদা টেপ নিয়েও অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য বিজেপি সরকার এবং তাদের পরিচালিত সংস্থাসমুহ সাত বছরে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। সংসদে এল কে আদবানির নেতৃত্বে গঠিত ‘এথিক্স কমিটি’-কে অকেজো করে রাখা হয়েছিল।
এখনও পর্যন্ত সংসদে স্পিকার ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পরস্পর বিরোধী অবস্থান নিয়ে চলেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার দু-মুখো নীতি নিয়ে চলছে। রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য দর কষাকষি ও দল ভাঙানোর লক্ষ্যে এই কেলেঙ্কারিগুলোকে চাপা দিয়ে এই সব কেলেঙ্কারির সাথে যুক্ত অন্যান্য আসামীদের রক্ষাকবচ দিতে নিজের দলের নেতা বানিয়েছে। এখন করোনা মহামারির মোকাবিলাই প্রধান কাজ। কেন্দ্রীয় সরকারের সার্বিক ব্যর্থতা দেশের জনগণকে এক ভয়ংকর বিপদের মধ্যে নিক্ষেপ করেছে। বিজেপি-র মনে রাখা উচিত সদ্য রাজ্যের মানুষ যে তাঁদের সরকারে চায় না, স্পষ্টভাবে সেই রায় দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীরও মনে রাখা উচিত যে এই রায় বিজেপি-র বিরুদ্ধে হলেও তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি ও স্বৈরশাসনের পক্ষে ইতিবাচক রায় নয়। দুর্নীতির সঙ্গে আপোষ করে, দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপি-র মতো ভয়ংকর শক্তিকে যে মোকাবিলা করা যায় না এই শিক্ষা তৃণমূল কংগ্রেসেরও গ্রহণ করা উচিত। সংঘ পরিবার ও বিজেপি-র ফ্যাসিবাদী কায়দায় শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে হলে নিজেদের দলের অভ্যন্তরে দুর্নীতি ও বিরোধীশূন্য স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে হয়।
সূত্র : কলকাতা ২৪*৭