ইয়াসের প্রভাবে দুই জেলায় মৃত্যু ৩ জনের, আহত ৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বাংলা থেকে তার অভিমুখ বদলে ওড়িশায় গিয়ে আছড়ে পড়েছে গতকাল সকালেই। বাংলাকে বিদায় জানালেও তার প্রভাব যে রয়ে গিয়েছে তা ভালোই টের পাচ্ছেন সেখানকার মানুষরা। ইয়াস পরবর্তী পরিস্থিতিও যে সুখকর নয় তাও বুঝতে পারছেন সকলেই। বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকেই জেলায় জেলায় চলেছে বৃষ্টি সেই সঙ্গে মেঘের গুরু গুরু চমক। এরই মধ্যে এদিন সকালে, মুর্শিদাবাদে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় দুই কিশোরের। গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন ৫ জন। পাশাপাশি নদীয়াতেও বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির।
বৃহস্পতিবার সকালে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার রমনা বিলপাড়ার কাছে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় দুই কিশোরের। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত দুই কিশোরের নাম তাহাবুল শেখ ও সহিদুল ইসলাম। একজনের বয়স ১৭ অন্যজনের ১৬। প্রতিদিনের মতো এদিনও ওই দুই কিশোর ভোর বেলা মাঠের কাজে বেড়িয়েছিল। তাদের সঙ্গে গ্রামের আরও পাঁচজন ছিলেন।
সেইসময় আচমকা বৃষ্টি শুরু হলে সকলেই বিলের পাশের একটি গাছতলায় আশ্রয় নেয়। ওই গাছটির উপরে বাজ পড়তেই সকলে ছিটকে পড়ে যান। এলাকাবাসী তাঁদের সকলকে উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিত্সকরা জানান, বাজ পড়ে তাহাবুল ও সহিদুলের মৃত্যু হয়েছে। বাকি পাঁচজন গ্রামবাসী গুরুতর আহত, তাঁদের চিকিত্সা চলছে। একইসঙ্গে, লোচনমাটি এলাকাতেও বজ্রাঘাতে এক মহিলা জখম হয়েছেন।
অন্যদিকে, নদীয়ায় ইয়াশ পরবর্তী বৃষ্টিপাতের জেরে বজ্রাঘাতে বছর আটচল্লিশের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সনাতন বর্মণ নামে ওই ব্যক্তি নাকাশিপাড়ার বিলকুমারী পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা নাগাদ নিজের বাড়ির জমিতেই বেগুন চারা লাগাচ্ছিলেন সনাতনবাবু।
সেইসময় আচমকাই বজ্রবিদ্যুত্-সহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। ফাঁকা মাঠ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার আগেই বজ্রপাতে মারা যান তিনি। বাজ পড়ার ফলে দুটি পাখিও মারা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারাই মাঠের মধ্যে সনাতনবাবুর দেহটি পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। জানা গিয়েছে, সনাতনবাবুর পরিবারে স্ত্রী ও দুই পুত্র সন্তান রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইয়াসের প্রভাবে ইতিমধ্যেই ছয় জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সেই তালিকায় আছে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ। বজ্রবিদ্যুত্-সহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে কলকাতা ও দুই মেদিনীপুর জেলাতেও। বৃষ্টিপাতের সঙ্গে প্রায় ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, যশ শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। এর প্রভাবেই মূলত ঝাড়খণ্ড ও বিহার সংলগ্ন এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি হবে।
সূত্র : এই মুহুর্তে