‘যে নালিশ করেছে সে নিজে ঠিক আছে তো?’ মেডিক্যাল কলেজে ইঞ্জেকশন কেলেঙ্কারি নিয়ে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর
কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ থেকে কোভিড চিকিত্সার জীবনদায়ী ইঞ্জেকশন টোসিলিজুমাব চুরির ঘটনায় বুধবার সকাল থেকেই তোলপাড় শহর। হাসপাতালেরই এক চিকিত্সকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। এবার তা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোনও রাজনৈতিক অবস্থান তিনি নেবেন না।
পুরো ঘটনার যথাযথ তদন্তের পরেই পদক্ষেপ করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই গোটা বিষয়টি দেখবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কে একটা কী অভিযোগ করলেন, তিনি নিজে ঠিক আছেন তো? সব কিছু তদন্ত ছাড়া তো হয় না। মেডিক্যাল কলেজের ব্যাপার। ওরাই ভাল বুঝবে। ওরাই দেখবে। আর স্বাস্থ্য দফতর তো আছেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘কারও কথা শুনে আমি কোনও রাজনৈতিক অবস্থান নেব না।’
এ প্রসঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমাদের কাছে যখনই অভিযোগ এসেছে আমরা তার পরেই তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আশা করছি কাল পরশুর মধ্যে রিপোর্ট পেয়ে যাব। বুধবার সকালে জানা যায়, মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা দামের ২৬টি টোসিলিজুমাব ইঞ্জেকশন বেআইনিভাবে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ঘটনার পিছনে নাকি রয়েছে এক চিকিত্সকের হাত।
সরাসরি তথ্যপ্রমাণ সামনে না এলেও, একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতেই সামনে এসেছে এই চুরি। আইএনটিইউসি-র পক্ষ থেকে বৌবাজার থানায় ইতিমধ্যেই ডায়েরি করা হয়েছে অভিযুক্ত চিকিত্সকের বিরুদ্ধে, হাসপাতাল সুপারকে দেওয়া হয়েছে ডেপুটেশনও। জানা গেছে, অভিযুক্ত চিকিত্সক শাসক দলের এক নেতার ঘনিষ্ট বলে পরিচিত।
তিনিই প্রভাব খাটিয়ে কর্তব্যরত এক নার্সের কাছ থেকে ওই ইঞ্জেকশন হাতিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিত্সক কোনও মন্তব্য করতে চাননি। আরও জানা গেছে, রোগীর ভুয়ো প্রেসক্রিপশন লিখে কর্তব্যরত নার্সিং ইনচার্জকে জমা দিয়ে পরপর কয়েক দফায় ওই ইঞ্জেকশন তোলেন চিকিত্সক। নার্সের সন্দেহ হওয়ায় তিনি জিজ্ঞেসও করেন, কিন্তু প্রেসক্রিপশন দেখে আর কিছু বলেননি। পরে জানা গেছে, প্রেসক্রিপশনগুলি সবই জাল।
ইদানীং কোভিড চিকিত্সায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে টোসিলিজুমাব ইঞ্জেকশন। মূলত বাতের রোগের জন্য ব্যবহার করা হলেও, গবেষণায় জানা গেছে করোনা আক্রান্ত মরণাপন্ন রোগীদের চিকিত্সায় এই ইঞ্জেকশনটি কার্যকরী। এমন গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ বেআইনি ভাবে প্রভাব খাটিয়ে চুরির অভিযোগ উঠল মেডিক্যালে।
সুত্র : দ্য ওয়াল