রাজনীতিরাজ্য

মাত্র ১৫ মিনিটেই অমিত শাহর বাড়িতে আলোচনা দ্রুত বেরিয়ে এলেন শুভেন্দু! জল্পনা রাজনৈতিক মহলে

Suvendu Adhikari : মাত্র ১৫ মিনিটেই অমিত শাহর বাড়িতে আলোচনা দ্রুত বেরিয়ে এলেন শুভেন্দু! জল্পনা রাজনৈতিক মহলে - West Bengal News 24

মিনিট ১৫। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) সঙ্গে তাঁরই বাসভবনে রুদ্ধদ্বারে বৈঠক সারলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। একদিকে যখন হেস্টিংসে বৈঠক করছেন দিলীপ ঘোষেরা, তখন শাহি-বৈঠকে শুভেন্দু। শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে শুভেন্দুর এই বৈঠক ঘিরে হাজারো প্রশ্ন গেরুয়া শিবিরেই।

এই বৈঠকের আগাম কোনও সূচি নির্ধারিত ছিল না। আচমকাই সোমবার বিকালের পর সিদ্ধান্ত হয় আর তারপরই শুভেন্দু অধিকারীকে তলব। রাত ১১টা নাগাদ পৌঁছন শুভেন্দু। সকালে গুজরাটে নেতা নরেন্দ্র মোদীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মনসুভ মণ্ডাভিয়ার সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সাক্ষাৎ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটা নেহাতই কোনও সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়। কারণ এই গোটা আবহে মনসুভ মাণ্ডাভিয়ার উপস্থিতি বিশেষ ইঙ্গিতপূর্ণ। কোনও আলাদ অর্থই দাঁড়াচ্ছে। নাহলে কেবল বাংলার রাজনৈতিক হিংসা যদি এই বৈঠকের ইস্যু হয়ে থাকে, তাহলে কোনও প্রেক্ষাপটেই মোদী-ঘনিষ্ঠ এই নেতার নাম আসার কথা নয়।

তারপর অমিত শাহর বাড়িতে যান শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু মিনিট পনেরোরও কম সময়ে বৈঠক হয়। এবং অমিত শাহের দফতর থেকে কেবল একটি টুইট করে শুধুমাত্র বৈঠক হওয়ার বিষয়টিই জানানো হয়। কোনও রকমের ব্যাখ্যা, কী নিয়ে আলোচনা- তা কিছুই জানানো হয় না।

টুইটে দেওয়া হয়েছে বৈঠকের ছবিও। তাতে অবশ্য দু’জনকেই হাসি মুখে দেখা যাচ্ছে। তবে এই বৈঠকের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে বিজেপির অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে আরও একটি বিষয়। বিশ্লেষকরা বলছেন প্রাক নির্বাচন পর্ব থেকেই বঙ্গে বিজেপির মুখ হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু অধিকারী। নির্বাচনে সেভাবে ভাল ফল করতে পারেনি দল। তবে শুভেন্দুর ওজন তাতে কমেনি। বরং রাজ্যের বিরোধী নেতা হিসাবে উঠে এসেছেন তিনি। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে, এমনকি প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী মাপের বৈঠকেও উপস্থিত থাকতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে।

ভোট পরবর্তী হিংসা, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি একাধিকবার সরব হয়েছেন। রাজ্যপালের সঙ্গেও করেছেন জরুরি বৈঠক। রাজ্যের একাধিক ইস্যু আর তার প্রেক্ষিতে দলের অবস্থান স্পষ্ট করার ক্ষেত্রে এখন তাঁর মুখই প্রধান হয়ে উঠছে গেরুয়া শিবিরে। কিন্তু তাতে দলের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে। আশা অনুযায়ী ভোটে ভাল ফল না হওয়ায় শুভেন্দুকে দায়ি করেছেন রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ।

দলের একাংশ শুভেন্দু অধিকারীর ওপর অসন্তুষ্ট। কারণ চুরি, প্রতারণার মামলায় ইতিমধ্যেই নাম জড়িয়েছে তাঁর। তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কিন্তু যাঁকে রাজ্যের প্রধান বিরোধী মুখ হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে গেরুয়া শিবির, তাঁর গায়েই কালি লাগলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে আর সেটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ত্রিপল চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠছে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি গত কয়েকদিনে অস্বস্তি বাড়িয়েছে দুটি ফৌজদারি মামলা আর তার প্রেক্ষিতে উঠে আসা দুটি নাম- রাখাল বেরা ও চঞ্চল নন্দী। দুজনেই শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলে পুলিশ দাবি করছে।

পুলিশ এখন কাটাছেঁড়া করা শুরু করছে। তাতে কি কেঁচো খুঁজতে কেউটে বেরোয় কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে দলেরই একাংশ। অপর অংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসাই এই বৈঠকের অন্যতম ইস্যু। ভোট পরবর্তী হিংসার কীভাবে রাজ্য থেকে জাতীয় স্তরে নিয়ে যেতে পারে? তারই একটি অঙ্ক নির্ধারণ হয়েছে এদিনের বৈঠকে। এমনটাই মত একাংশের। কিন্তু তাতে প্রশ্ন যদি এটিই বিষয় হয়ে থাকে, তাহলে বৈঠক কেন ভার্চুয়ালি হল না?

এক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে দিল্লিতে যখন বৈঠকে শুভেন্দু, তখন কলকাতায় হেস্টিংসে বৈঠক করছেন দিলীপ ঘোষেরা। শুভেন্দুকে কেন দিল্লিতে ডাকা হল, তা নিয়ে যে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের কাছেও কোনও স্পষ্ট ধারণা নেই, তা জানিয়ে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গেরুয়া শিবিরের স্ট্র্যাটেজি নিয়েই প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।

সূত্র : টিভি৯ বাংলা

আরও পড়ুন ::

Back to top button