মতামত

রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর সংঘাত সাংবিধানিক নীতি নির্ধারিত কতটা কার্যকরী

মৃত্যুঞ্জয় সরদার

রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর সংঘাত সাংবিধানিক নীতি নির্ধারিত কতটা কার্যকরী - West Bengal News 24

সাধারণ মানুষ ভারতবর্ষের সংবিধানের স জানেনা, তবে অনেক গুরুগম্ভীর ব্যক্তিত্ব আছে তারা সংবিধান জেনেও মান্যতা দেয় না। তবে আমি নিজে তেমনি ভাবে সংবিধানের কিছু জানিনা। ভারতবর্ষের সংবিধানের বই পড়ে যতোটুকু জেনেছি ততটুকু আমি বলার চেষ্টা করব। ভারতবর্ষের সংবিধানে সংশোধিত গণতন্ত্রে পদমর্যাদা ব্যক্তিদের নিজস্ব ক্ষমতা সংবিধানে দেওয়া রয়েছে। তবে আমরা যেন কেউ সংবিধান মানি না তেমনি ইঙ্গিত স্পষ্ট রাজ্যতে। যত দিন এগিয়ে আসছে ততই যেন দেখছি ভারতবর্ষের রাজনীতিতে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর চ্যাপ্টা হয়ে গেছে ধর্মের মেরুকরণে। রাজ্য রাজনীতিতে উথাল পাথাল মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের সংঘাতে। জনগণ মনে করছে রাজ্যে হচ্ছে টা বা কি? গ্রামগঞ্জে একটা কথা শুনতে পাচ্ছি সাহায্যে নাকি রাষ্ট্রপতি শাসন হতে চলেছে, এটা কি যুক্তিযুক্ত সংশোধিত গণতন্ত্রে! রাজ্যে এমনকি আইনশৃঙ্খলার অবনতি হল যে রাষ্ট্রপতি শাসন দিতে হবে, তবে রাজ্যের রাজ্যপাল তার নিজের সংবিধানিক এক্তিয়ার ভুলে বরাবরই টুইট করে সমস্যার সমাধান করতে চাইছে ,এটা কি সংবিধানের পক্ষে নীতি নির্ধারিত কার্যকলাপ। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে রাজনীতি মহলে। তবে বিগত দিনের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাতে রাষ্ট্রপতি শাসন হয়েছে, তেমনি ইতিহাস আজ স্পষ্ট করে তুলে ধরতে চাইছি। তবে রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা অবনতি হলেও ,রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার মতন তেমনি আইনশৃঙ্খলার অবনতি এ রাজ্যে ঘটেনি। তাই বলবো রাজ্যের প্রধান রাজ্যপাল মহাশয় কে বাংলার ভূত ভবিষ্যৎ আপনার দিকে তাকিয়ে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সত্যিকারে গরিব দরদী তাই রাজ্যের উন্নয়ন আর মানুষের নিরাপত্তা দুটোর দিকে নজর আছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যথেষ্ট দায়িত্বশীল। সেই কারনে বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে নিয়েও বিতর্কের অন্ত নেই। বিরোধীদের অভিযোগ, তিনি এমন সব কথা বলেন, এমন টুইট করেন যে দেখলে ধন্ধে পড়তে হয়, এটা কি একজন সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তির কথা, না কি বিরোধী রাজনীতিকের বক্তব্য।  এই নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে উত্তাল , মুখ্যমন্ত্রী বনাম রাজ্যপালের ঘিরে বিতর্কের ঝড়।রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।যেভাবে কাজ করছেন তার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সহমত হতে পারছেন না, তার কারণ পশ্চিমবঙ্গ স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ২১ জন রাজ্যপালকে দেখেছে। কিন্তু বর্তমান রাজ্যপাল সকলের থেকেই আলাদা ।

অতীতে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের মতানৈক্য হয়েছে কিন্তু যে পদ্ধতিতে বর্তমান রাজ্যপাল তাঁর দায়িত্ব পালনের নামে সরাসরি রাজ্য সরকারের সঙ্গে “কোল্ড ওয়ার” চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি রাজ্যপাল হয়ে এসে প্রথম গেলেন বিজেপি সাংসদদের বাড়ি ভাটপাড়ায়। তারপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজেপির কেন্দ্ৰীয় মন্ত্রীকে উদ্ধার করার জন্য। কিন্তু পশ্চিমবাংলায় বহু তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী মারা গিয়েছেন বিজেপি কর্মীদের আক্রমণে তাঁদের বাড়ি গেলেন না। সহানুভূতিও জানালেন না। কাশ্মীরে যখন উগ্রপস্থীদের হাতে পাঁচজন বাঙালি শ্রমিক খুন হলেন তখনও কোনও সমবেদনা জানালেন না এবং তাঁদের বাড়িতেও গেলেন না। রাজ্যপাল সারা রাজ্য ঘুরতে শুরু করেছেন। কিন্তু কেন? আগেই আলোচনা করেছি যে রাজ্যপাল নির্বাচিত হন না, রাষ্ট্রপতির দ্বারা নিয়োজিত হন।তবে কোনাে কোন সংবিধান বিশেষজ্ঞ রাজ্যপালকে রাজ্য প্রশাসনের একজন প্রকৃত ক্ষমতাসম্পন্ন শাসক হিসেবে প্রতিপন্ন করেছেন। রাজ্যপাল রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব হলেও তিনি কিন্তু মূলত নিয়মতান্ত্রিক শাসকরূপেই বেশি পরিচিতি লাভ করেছেন। এদিকে গণপরিষদের অন্যতম সদস্য সংবিধান-প্রণেতা ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর বলেছিলেন যে, রাজ্যপাল কোনাে ক্ষমতা ভােগ করেন না। তাই তাকে মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হয়। কে এম মুন্সী বলেছিলেন যে, রাজ্যপাল মন্ত্রীসভাকে উপেক্ষা করবেন না, তিনি গ্রেট ব্রিটেনের রাজা-রানির মতাে ভূমিকা পালন করবেন, তার স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা থাকলেও তা কোনােক্রমেই রাজ্যে দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থার পরিপন্থী হবে না। তিনি হলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান (Constitutional Head) বা নামসর্বস্ব প্রধান (Nominal Head)। উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল সরোজিনী নাইডু-রাজ্যপালের পদটিকে সোনার খাঁচায় বন্দি পাখির (A Bird in Golden Cage) সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।যাক এসব কথা, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাইছে রাজ্যের রাজ্যপালের সাংবিধানিক ক্ষমতা কতটা।বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একই পদ্ধতিতে রাজ্যপালের সমতুল্য পদাধিকারী নিয়োগ করা হয়। কানাডায় লেফটেন্যান্ট গভর্নর বা অস্ট্রেলিয়ার গভর্নর একই পদ্ধতিতে নিয়োগ করা হয়। সংবিধানের ১৫৫ ধারায় রাজ্যপাল নিয়োগ করবেন দেশের রাষ্ট্রপতি এবং তিনি যদি চান তাহলে তাঁর ইচ্ছায় অপসারণ করতে পারেন। সংবিধানের ১৬৩ (১) নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিমণ্ডলীর সদস্যরা রাজ্যপালকে সাহায্য ও পরামর্শ দেবেন তাঁর সংবিধানে বর্ণিত কাজ করার জন্য। এছাড়া রাজ্যপাল তাঁর ক্ষমতা বলে উপরে বর্ণিত সংবিধানের নির্দেশ অথবা পারবেন যা সংবিধানসম্মত। সংবিধানের ১৬৩(২) ধারায় বলা হয়েছে, যদি রাজ্যপাল উপরোক্ত ধারা অনুযায়ী কোনও কাজ করেন প্রশ্ন করা যাবে না। অর্থাৎ রাজ্যপাল অনুযায়ী কাজ করবেন এবং সেই কাজ সম্পর্কে কোনও প্রশ্ন করা যাবে না। সংবিধানে ১৬৩(৩) ধারায় বলা হয়েছে, যদি মন্ত্রিমন্ডলী কোনও প্রশ্ন উথাপনে করেন তা কোনও কোর্টেই অনুসন্ধান করা যাবে না। একটি বিষয় অত্যন্ত পরিষ্কার যে রাজ্যপাল মূলত মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিমণ্ডলীর পরামর্শে ও সাহায্যে কাজ করবেন। কিন্তু যদি নিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করেন তাও সংবিধানের সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেই করতে হবে। রাজ্যপাল রাজ্যের সাধারণ এক্সিকিউটিভ যিনি মন্ত্রিমণ্ডলীর পরামর্শে কাজ করেন তিনি প্রয়োজন মনে করলে মন্ত্রিমণ্ডলীকে পরামর্শ দিতে পারেন। কিন্তু তা মানার জন্য জোর করতে পারেন না। কারণ মন্ত্রিমণ্ডলী মানুষের কাছে দায়বদ্ধ কিন্তু রাজ্যপাল নন।তাহলে কেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের এত সংঘাত?রাজভবন থেকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রও নতুন ঘটনা নয়। আর পশ্চিমবঙ্গের রাজভবন তো নিছক রাজ্যপালের বাড়ি নয়। এই ভবন ছিল ভারতের বড়ো লাট সাহেবের বাড়ি। এখানে প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তা টিভি রাজেশ্বরকে রাজীব গান্ধী পাঠান, মনমোহন সিংহ পাঠান আর কে নারায়ণনকে। গোয়েন্দা কর্তারা রাজ্য সরকারের সমস্ত কার্যকলাপের ওপর নজর রাখতেন, রিপোর্ট দিতেন। বীরেন শাহর মতো জ্যোতি বসুর বন্ধুও সিপিএম দলের জেলায় জেলায় সন্ত্রাস, শিক্ষা, ও স্বাস্থ্যের করুণ পরিস্থিতির সব রিপোর্ট পাঠাতেন কেন্দ্রের কাছে।

কিন্তু এখন কোনও গোপন রিপোর্ট নয়, রাজ্যপাল পদে পদে যাচ্ছেন প্রকাশ্য সংঘাতে। একটা হিসেব বলছে, ধনখড় দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ২০১৯ এর ৩০ জুলাই। এই এক বছর এক মাস সময়ের মধ্যে কম পক্ষে ৬০ টি বড় সংঘাত হয়েছে দু’পক্ষের। গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর রাজ্যপাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভ থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসার জন্য। এমনকী দুর্গা পুজোর সময় রাজ্য সরকার আয়োজিত কার্নিভাল বা বিসর্জন উৎসবে মিডিয়াতে তাঁকে দেখানো হয়নি, এমন অভিযোগ করা হয়েছে। রাজ্যপাল এবং তাঁর স্ত্রীর আসন নাকি এমন জায়গায় রাখা হয় যেখান থেকে কোনওভাবেই টিভিতে দেখা যাবে না। এছাড়া কথায় কথায় মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে তাঁর ডেকে পাঠানো, রাজ্য প্রশাসনের কাজকর্মে নাক গলানো, এমনকী করোনা দুর্যোগেও রাজ্য সরকারের সমালোচনা করা, এই সব অভিযোগ মমতা সরকার তুলেছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। রাজ্যপাল বলছেন, তিনি এ কাজ করছেন সংবিধান মেনে আর পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বার্থে।এখানে সবচেয়ে মূল্যবান প্রশ্নটি উত্থাপিত হচ্ছে। রাজ্যপালের ক্ষমতার সীমানাটি কোথায়? যুক্তফ্রন্ট আমলে স্পিকার বিধানসভা অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি করে দেওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে কেন্দ্র বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে। এ ব্যাপারে সমালোচনা হয়েছে সেদিনও। কিন্তু পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টে বোম্মাই বিচার কিন্তু রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার ব্যাপারেও অনেক সাংবিধানিক বিধিনিষেধ লাগিয়েছে।আজ মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের সাংবিধানিক ক্ষমতা কতটা তা এই লেখার মধ্যে স্পষ্ট করে দিতে চাই।ভারতীয় সংবিধানে ১৫৭ নম্বর অনুচ্ছেদে রাজ্যপাল কে হতে পারেন, তাঁর ক্ষমতার পরিসর কী হবে, তা সবিস্তারে বলা হয়েছে। রাজ্যপালের চার রকমের ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে। প্রশাসনিক, আর্থিক, পরিষদীয়, ও বিচারবিভাগীয়। কিন্তু রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতির অধীনে থাকেন এবং রাষ্ট্রপতিকে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুসারেই চলতে হয়, রাজ্যপালের ক্ষেত্রেও সেই একই প্রথা অনুসরণ করা হয়। রাজ্যের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুসারেই রাজ্যপাল কাজ করেন। বিধানসভাতেও রাজ্যপালের ভাষণ রাষ্ট্রপতির ভাষণের মতই রাজ্য মন্ত্রিসভা চূড়ান্ত করে।

সংবিধান কতকগুলি ক্ষেত্রে রাজ্যপালের একক ক্ষমতা দিয়েছে যেমন (১) মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ (২) মন্ত্রিত্ব বাতিল (৩) বিধানসভা বাতিল (৪) বিশেষ ক্ষেত্রে রাজ্যপাল মন্ত্রিমণ্ডলীর পরামর্শ শুনতে বাধ্যনন। যখন ১৯৪৭ সালের প্রিভেনশান অফ করাপসন অ্যাক্ট অনুযায়ী কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে দোষ প্রমাণিত। কিন্তু মন্ত্রিমণ্ডলী তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নিষেধ করছেন। এই প্রসঙ্গে রাজ্যপালকে ক্ষমতা দেওয়ার কারণ হল মন্ত্রিমণ্ডলী মন্ত্রীর অপরাধের বিচার করতে পারে না। বিচার সংবিধানের ২৩৫ ধারা অনুযায়ী যখন কোনও উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতের জজের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তখন উচ্চ আদালতের বিচার অনুযায়ী রাজ্যপালকে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে মন্ত্রিমন্ডলীর সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য নন রাজ্যপাল। সংবিধানের ১৬৩ ধারায় বলা হয়েছে, সংবিধানে বর্ণিত রাজ্যপালের ক্ষমতা পালনে রাজ্যপাল মন্ত্রিমণ্ডলীর পরামর্শ মানতে বাধ্য নন। বিষয়গুলি হল__ (১) রাজ্যে বিশেষভাবে শান্তি বিঘ্নিত হলে রাজ্যপাল তাঁর ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন (২) রাজ্য মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করা (৩) বিধানসভা বাতিল করেতে পারবেন (৪) নির্বাচন তদারক, পথপ্রদর্শন এবং নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন (৫)রাজ্যের পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান এবং অ্যাডভোকেট জেনারেলকে নিয়োগ করা। উপরে যে সকল ক্ষমতা রাজ্যপালকে দেওয়া হয়েছে প্রায় সবগুলিই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে থেকেই পালন করতে হবে। সংবিধানের ১৬৬ ধারায় বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে প্রশাসনিক ব্যবস্থা রাজাপালের নামেই প্রয়োগ করতে হবে। রাজ্য সরকারের আদেশ এবং অন্যান্য কার্যকলাপ রাজ্যপালের দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে এবং সেই আদেশকে কোনও স্তরে প্রশ্ন করা যাবে না। রাজ্যপাল রাজ্যের কর্মপদ্ধতি আরও সরলীকরণ করার জন্য নিয়ম তৈরি করতে পারবেন যা মন্ত্রিমণ্ডলীকে জানানো হবে।তবে সংবিধানের ১৬৭ ধারায় বলা হয়েছে (১) মন্ত্রিসভার গৃহীত সিদ্ধান্ত রাজ্যপালকে জানাতে হবে এবং কোনও আইন প্রণয়ন করতে হলে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে জানাবেন। প্রশাসন পরিচালনা ও আইন প্রণয়নের প্রস্তাব রাজ্যপালকে জানাতে হবে। কোনও মন্ত্রী যদি কোনও সিদ্ধান্ত নেন যা মন্ত্ৰিমণ্ডলী অনুমোদন করে না সেই বিষয়ে জানতে চাইলে রাজ্যপালকে জানাতে হবে। সংক্ষিপ্তভাবে সংবিধানে বর্ণিত বিষয়গুলি তুলে ধরা হল যা রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারকে সংবিধানে নির্দেশ দিয়েছে। তবে রাজ্যপালের সাথে রাজ্যের সংখ্যা বিগত দিনে দেখা গিয়েছিল, তা নিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছিল। সেই ইতিহাস আমি আজ এই লেখার মধ্যে তুলে ধরছি।জ্যোতি বসুর সময় রাজ্যপাল ছিলেন এ পি শর্মা। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারের সুপারিশ না মেনে উপাচার্য করেছিলেন সন্তোষ ভট্টাচার্যকে। তাই নিয়ে দীর্ঘদিন সরকার বনাম রাজ্যপাল সংঘাত হয়েছে।

এ পি শর্মার এক বছরের সময়কালে সিপিএম আওয়াজ তুলেছে, ‘এ পি শর্মা গদি ছাড়, বাংলা ছাড়’। রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল করে পাঠালেন সাবেক গোয়েন্দা প্রধান টিভি রাজেশ্বরকে। রাজ্য সরকারের ধারণা হলো, সরকার ও দলের উপর নজরদারির জন্য রাজেশ্বরকে পাঠানো হয়েছে। গোলমাল শুরু। রাজীব ক্ষমতা হারানোর পরে রাজেশ্বরেরও বিদায় নিশ্চিত করেছিল সিপিএম।এদিকে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় যখন মুখ্যমন্ত্রী হলেন, তখন কেন্দ্রে ও রাজ্যে কংগ্রেস। ফলে রাজ্যপালের সঙ্গে বিরোধ হওয়ার কথা নয়। জ্যোতি বসুর দীর্ঘ মুখ্যমন্ত্রিত্বকালে ও পরে বুদ্ধদেববাবুর সময়ে বেশ কয়েকবার রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরোধ বেধেছে।একই রকম ভাবেমমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তিনজন রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন। এম কে নারায়ণন, কেসরী নাথ ত্রিপাঠী এবং জগদীপ ধনখড়। তিনজনই সরকারের সঙ্গে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছেন। তবে ধনখড়ের সময় বিরোধ যেন সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিন ধনখড় রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রী, অন্য মন্ত্রীদের সমালোচনা করেন। রাজ্যপাল কোনো নির্দেশ দিলে, বৈঠক করতে চাইলে সেখানে হামেশাই সরকারি অফিসার, মন্ত্রী, এমনকী উপাচার্যরা পর্যন্ত যান না। তৃণমূল সমানে রাজ্যপালের সমালোচনা করে যায়। দুই তরফের সমালোচনায় পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর জায়গায় পৌঁছেছে। অতীতে কোনো রাজ্যপাল সম্ভবত কোনো মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্য সরকারের এরকম লাগাতার সমালোচনা করে যাননি।তাই আবার মনে করিয়ে দিতে চাই।কেন্দ্রীয় সরকারের সুপারিশে রাজ্যপালকে নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির মতো তিনিও কার্যত ক্ষমতাহীন প্রধান। রাজ্যপালের অবশ্য কিছু বাড়তি ক্ষমতা আছে। যেমন রাজ্য সরকারকে বরখান্ত করে ৩৬৫ ধারা জারির সুপারিশ করা। সংবিধান অনুসারে রাজ্যপাল নামেই একটি রাজ্যের প্রধান, কিন্তু আসল ক্ষমতা থাকে জনগণের ভোটে নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। এমনিতে তাঁর পদে থাকার মেয়াদ পাঁচ বছর। তবে তার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে সরিয়ে দিতে পারে। বহুদিন ধরেই কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের নেতারাই মূলত রাজ্যপাল হন। ফলে তাঁদের কাজকর্ম ও কথাবার্তা নিয়ে প্রশ্ন ও অভিযোগের অন্ত থাকে না। এমনকী এই রাজনৈতিক বিতর্কও একাধিকবার হয়েছে, রাজ্যপালের পদ কেন রাখা হবে?রাজ্যের আনুষ্ঠানিক প্রধান রাজ্যপাল ও প্রকৃত প্রধান মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে যদি এই ধরনের বিরোধ শুরু হয়, তা হলে পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়ায় তার উদাহরণ হলো পশ্চিমবঙ্গ। এখানে প্রতিদিন রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী বনাম রাজ্যপালের রাখঢাকহীন লড়াই চলছে। এর শেষ রাষ্ট্রপতি শাসনের সিদ্ধান্তে না কি ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর, না কি নতুন রাজ্যপাল নিয়োগ হলে, তার জবাব ভবিষ্যৎ দেবে। একটা হিসেব বলছে, ধনখড় দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ২০১৯ এর ৩০ জুলাই। এই এক বছর এক মাস সময়ের মধ্যে কম পক্ষে ৫৫ টি বড় সংঘাত হয়েছে দু’পক্ষের। গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর রাজ্যপাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভ থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসার জন্য। এমনকী দুর্গা পুজোর সময় রাজ্য সরকার আয়োজিত কার্নিভাল বা বিসর্জন উৎসবে মিডিয়াতে তাঁকে দেখানো হয়নি, এমন অভিযোগ করা হয়েছে। রাজ্যপাল এবং তাঁর স্ত্রীর আসন নাকি এমন জায়গায় রাখা হয় যেখান থেকে কোনওভাবেই টিভিতে দেখা যাবে না। এছাড়া কথায় কথায় মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে তাঁর ডেকে পাঠানো, রাজ্য প্রশাসনের কাজকর্মে নাক গলানো, এমনকী করোনা দুর্যোগেও রাজ্য সরকারের সমালোচনা করা, এই সব অভিযোগ মমতা সরকার তুলেছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। রাজ্যপাল বলছেন, তিনি এ কাজ করছেন সংবিধান মেনে আর পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বার্থে।

এখানে সবচেয়ে মূল্যবান প্রশ্নটি উত্থাপিত হচ্ছে। রাজ্যপালের ক্ষমতার সীমানাটি কোথায়? যুক্তফ্রন্ট আমলে স্পিকার বিধানসভা অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি করে দেওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে কেন্দ্র বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে। এ ব্যাপারে সমালোচনা হয়েছে সেদিনও। কিন্তু পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টে বোম্মাই বিচার কিন্তু রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার ব্যাপারেও অনেক সাংবিধানিক বিধিনিষেধ লাগিয়েছে।শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে কি না সেটা অন্য প্রশ্ন, ঘটনা হলো, রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। আর পশ্চিমবঙ্গে এই ঘটনা নতুন নয়। সেই ১৯৬৭ সাল থেকে বিভিন্ন রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত লেগেছে। বস্তুত, পরিস্থিতি এখন এমন হয়েছে, কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের বিরোধী কোনো দল পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় থাকলেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত বাঁধবেই।

১৯৬৭ সালের ঘটনার দিকে চোখ ফেরানো যাক। রাজ্যপাল ধরমবীর। রাজ্যে প্রথম অ-কংগ্রেসি সরকার হলো। বিপ্লবী বাংলা কংগ্রেস ও সিপিআই এবং সিপিএম জোট মিলে তৈরি করল সেই সরকার। মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখোপাধ্যায়। সরকার বছরখানেকও টেকেনি। বিল্পবী বাংলা কংগ্রেসের কিছু বিধায়ক মিলে কংগ্রেসের সঙ্গে সরকার গড়তে চাইলেন। জ্যোতি বসু বললেন, বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষা হোক। রাজ্যপাল সেই দাবি না মেনে  নতুন সরকারকে শপথে ডেকে নিলেন। তার পরের ঘটনা আরো চমকপ্রদ। রাজ্যপাল বনাম স্পিকারের লড়াই শুরু হলো।এরপর ১৯৬৯ সালে আবার যুক্ত ফ্রন্ট সরকার। রাজ্যপাল শান্তিস্বরূপ ধাওয়ান। তখনও ফ্রন্টের কিছু শরিকের সঙ্গে সিপিএমের বনিবনা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখোপাধ্যায় পদত্যাগ করলেন। সিপিএম কিছু শরিকদের নিয়ে সরকার গঠন করতে চাইল। রাজ্যপাল সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে সরকারকে বরখাস্ত করে দিলেন।মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যকলাপ সম্পূর্ণ লেখাটি তুলে ধরে সমাপ্তি করব।

মুখ্যমন্ত্রীর যােগ্যতা, নিয়ােগ ও কার্যকাল
কোনাে অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে হলে তাকে রাজ্য আইনসভার সদস্য হতে হয়। তবে এ কথাও ঠিক যে, রাজ্য আইনসভার সদস্য না হয়েও ছ-মাস মুখ্যমন্ত্রী পদে তিনি বহাল থাকতে পারেন। সংবিধানের ১৬৪ (১) নং ধারানুযায়ী রাজ্যপাল সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধানসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের নেতা বা নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়ােগ করে থাকেন। তবে অনেকক্ষেত্রে রাজ্যের বিধানসভায় কোনাে দল বা জোট যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারে তাহলে মুখ্যমন্ত্রী কে নিয়ােগ সংক্রান্ত ব্যাপারে রাজ্যপাল তার স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রীর কার্যকালের স্থায়িত্ব ৫ বছর অর্থাৎ তার কার্যকালের মেয়াদ বিধানসভার মেয়াদেরই সমান।

অঙ্গরাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলি

সংবিধানে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। এ বিষয়ে সঠিক ধারণা লাভের জন্য রাজ্যের রাজ্যপাল, মন্ত্রীসভা, বিধানসভা, নিজ দল ও জনগণের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক আলােচনা করা দরকার। নিম্নে সেগুলি আলােচনা করা হলㅡ

(১) রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে মুখ্য সংযােগসূত্র হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী: মুখ্যমন্ত্রী হলেন রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে মুখ্য যােগসূত্রকারক। রাজ্যপাল তার স্ববিবেচনা অনুযায়ী কাজ করার ক্ষেত্রগুলি ছাড়া, শাসনকার্য পরিচালনার অন্য সমস্ত ক্ষেত্রে রাজ্য মন্ত্রীসভার পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করে থাকেন। এই সমস্ত ক্ষেত্রে রাজ্য মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্তের কথা মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপাল কে জানান। এ ছাড়া শাসনকার্য পরিচালনার জন্য গৃহীত ক্যাবিনেটের সমস্ত নীতি ও সিদ্ধান্তের কথা মুখ্যমন্ত্রী মারফত রাজ্যপাল জেনে থাকেন।

মুখ্যমন্ত্রী হলেন রাজ্যপালের প্রধান পরামর্শদাতা। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী রাজ্য মন্ত্রীসভায় মন্ত্রীদের নিয়ােগ, অপসারণ, দপ্তর বণ্টন সংক্রান্ত কাজকর্ম, বিধানসভার অধিবেশন আহ্বান করা, স্থগিত রাখা বা কার্যকাল সমাপ্ত হয়ে থাকে। বলা যেতে পারে যে, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য মন্ত্রীসভার সংযােগসাধন করে থাকেন।

(২) রাজ্য মন্ত্রীসভার নেতা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী: মন্ত্রীসভার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘সমপর্যায়ভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অগ্রগণ্য (first among equals) বলা হয়ে থাকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হলেন রাজ্যের মন্ত্রীসভার নেতা (১৬৩ নং ধারা)। এই কারণে তার স্থান শীর্ষে। মন্ত্রীসভার অন্যান্য সদস্য মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাজ্যপাল কর্তৃক নিযুক্ত হন। বস্তুত রাজ্যের মন্ত্রীসভার আয়তন, নিয়ােগ ও দপ্তর বণ্টন প্রভৃতি ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই রাজ্যপালের মাধ্যমে কার্যকর হয়। মন্ত্রীদের মধ্যে তিনি দপ্তর রদবদল করতে পারেন, যার বিরাগভাজন মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলতে পারেন বা রাজ্যপালের মাধ্যমে তাঁকে অপসারণ করতে পারেন। আবার নিজে পদত্যাগ করে তিনি সমগ্র মন্ত্রীসভার পতন ঘটাতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী ক্যাবিনেটের বৈঠক আহ্বান করে সেই বৈঠকে সভাপতিত্ব করে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রী সরকারের নীতি নির্ধারণ, নীতি ও সিদ্ধান্তসমূহ কার্যকর করার মূল দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রীসভায় সংহতি ও ঐক্য বজায় রাখা, সরকারি নীতির সমন্বয়সাধনের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীকে যথেষ্ট যত্নবান হতে হয়। এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী এক বা একাধিক দপ্তরের দায়িত্ব নিলেও তাঁর মূল কাজ হল মন্ত্রীসভাকে নেতৃত্ব প্রদান করা এবং মন্ত্রীসভার মধ্যে সমন্বয়সাধন করা। সুতরাং মুখ্যমন্ত্রী হলেন ক্যাবিনেট তােরণের ভিত্তিপ্রস্তর (Keystone of the Cabinet arch)।

(৩) রাজ্য আইনসভার নেতা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী: রাজ্যের আইনসভার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। রাজ্য আইনসভায় তার ভূমিকা দ্বিবিধ। (A) সরকারের প্রধান হিসেবে এবং (B) সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে আইনসভায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আইনসভায় সরকারবিরােধী সমালােচনার জবাব দেওয়া, সরকারি নীতি ব্যাখ্যা করা এবং সরকারি নীতি কার্যকর করা সম্পর্কে সরকারি বক্তব্য আইনসভায় পেশ করার চূড়ান্ত দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীর উপর ন্যস্ত থাকে। মুখ্যমন্ত্রী সরকারের মুখপাত্র হওয়ার জন্যই তাঁকে বিরােধী দলগুলির সঙ্গে যােগাযােগ ও প্রীতিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হয়। তিনি সভা ও সভার সদস্যদের অধিকার ও মর্যাদারক্ষার চেষ্টা করেন এবং রাজ্যপালের মাধ্যমে রাজ্য আইনসভার অধিবেশন আহ্বান করতে ও স্থগিত রাখতে পারেন।

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button