আবারও জমা জলে লুকনো বিপদের ফাঁদে পড়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কলকাতায় (Kolkata)। জোকার কাছে ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট (Electrocution) হয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃত বছর ছত্রিশের মানিক বাড়ুই হরিদেবপুরের গোপালনগরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার মাঝ রাতে তাঁকে রাস্তা থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে নিকটবর্তী বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকরা মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, জোকার (Joka) নবপল্লির কাছে বৃহস্পতিবার রাত প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ জমা জলের মধ্যে মোটরবাইক পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাসে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে ছিলেন আরোহী। প্রাথমিক অনুমান, প্রবল ঝড়বৃষ্টির মধ্যে এই এলাকায় জল জমেছিল এবং তার মধ্যে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছিল।
বাইক আরোহী মানিক বাড়ুই তা খেয়াল করেই সম্ভবত যাচ্ছিলেন। সেসময় বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে আসায় বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হন। আরও জানা গিয়েছে, হরিদেবপুরের গোপালনগরের বাসিন্দা মানিক পেশায় একজন চালক। প্রতিদিন রাতে তিনি নিজের বাইক নিয়ে বাড়ি ফেরেন। বৃহস্পতিবারও ফিরছিলেন। কিন্তু তাঁর ফেরার পথেই যে বিপদ ওঁত্ পেতে বসেছিল, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তিনি। হরিদেবপুর (Haridevpur)থানায় এ নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে।
এর আগে মে মাসের মাঝামাঝি সময় এমনই টানা বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন কলকাতায় তারে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃ্ত্যু হয় মুর্শিদাবাদের এক যুবকের। রাজভবনের সামনে জমা জলের মধ্যে বিদ্যুতের তার পড়ে ছিল। সেখান থেকে শক লেগে প্রাণ হারিয়েছিলেন মাত্র ২৪ বছরের যুবক ঋষভ মণ্ডল। প্রাথমিকভাবে পরিবারের অভিযোগ ছিল, সরকারের গাফিলতির জেরেই ছেলেকে অকালে হারাতে হল।
প্রশ্ন তুলেছিলেন, কীভাবে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে থাকে রাস্তায়? CESC’র বিরুদ্ধে এফআইআর করার কথাও জানিয়েছিলেন তাঁরা। পরে কলকাতা পুরসভার তরফেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারা অর্থাত্ অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়। তদন্ত চলছে।
তবে এই বছর শুরুতেই দাপট দেখাচ্ছে বর্ষা। টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন বহু এলাকা। কলকাতার খিদিরপুর, ঠনঠনিয়া, বেহালার বহু অংশ প্লাবিত। জেলাগুলিতেও একই অবস্থা প্রায়। দুর্গাপুরের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাদারোড এলাকায় জলবন্দি প্রায় শ খানেক পরিবার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় পাঁচিল ভেঙে পড়ে একজনের মৃ্ত্যুর খবর মিলেছে। বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরে নদীবাঁধ ভেঙে রাস্তায় হু হু করে ঢুকছে জল। এমনই জলযন্ত্রণা জর্জরিত বাংলা। তারই মধ্যে এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে আরও।
সুত্র : সংবাদ প্রতিদিন