কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে যন্তর মন্তরে কৃষক বিক্ষোভ, নিরাপত্তার চাদরে ঢাকল দিল্লি
কষক বিক্ষোভে আরও এক একবার উত্তাল হতে পারে রাজধানী। সংসদ ভবনের বাইরে বৃহস্পতিবার ২২ জুলাই থেকে অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে কৃষকরা। সংযুক্ত কৃষাণ মোর্চার তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লির যন্তর মন্তরের সামনেও অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে। তবে সংসদ ভবনের বাইরে আজই প্রায় দুশো জন কৃষক অবস্থান শুরু করবেন। শুধু আজ নয় সংসদে বাদল অধিবেশন চলাকালীন প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা অবধি আন্দোলনের কর্মসূচী রয়েছে কৃষকদের।
চলবে ৯ অগস্ট পর্যন্ত। নরেন্দ্র মোদী সরকারের তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে গত নভেম্বরের শেষ থেকে দিল্লির সীমানা ঘিরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কৃষকরা। দিল্লির গাজিয়াবাদ, সিংঘু, টিকরি সীমান্ত এক সময় কৃষক আন্দোলনে রণং দেহি চেহারা নিয়েছিল। সীমান্ত এলাকাগুলো এখন ফাঁকা। সেখানে কৃষকদের তাঁবুগুলো ফাঁকাই পড়ে আছে। সীমান্ত থেকে এখন সংসদ চত্বরে চলে এসেছেন কৃষকরা।
কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়াতে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, সরকারের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় বসতে তাঁরা রাজি। তবে খুব তাড়াতাড়ি সরকারকে কৃষকদের দাবিদাওয়া শুনতে হবে, তা না হলে সংসদের বাইরেই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করা হবে। গত ১৯ জুলাই থেকে সংসদে বাদল অধিবেশন শুরু হয়েছে।
আন্দোলনকারী কৃষকদের পরিকল্পনা অধিবেশন চলাকালীন প্রতিদিনই কৃষি আইন প্রত্যাহার ও নিজেদের দাবিদাওয়া জানিয়ে সংসদ ভবনের বাইরে অবস্থান কর্মসূচী চলবে। প্রসঙ্গত, মন্ত্রিসভার রদবদলের পরে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর কৃষকদের নতুন করে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাতে কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত বলেন, সরকার যদি পূর্ব নির্ধারিত শর্ত মেনে আলোচনায় বসতে রাজি থাকে তাহলেই তাঁরা প্রস্তাব গ্রহণ করবেন, না হলে আলোচনা থেকে সরে যাবেন।
প্রায় ৯ মাস ধরে আন্দোলন করে চলেছেন রাকেশ টিকায়েতরা। গত বছর নভেম্বরে দিল্লির সীমান্ত এলাকায় কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কৃষকরা। প্রথমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চললেও, একুশ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে কৃষক বিক্ষোভ হিংসাত্মক চেহারা নেয়। কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিল ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী।
কার্যত ধুন্ধুমার বেঁধে যায় লালকেল্লা চত্বরে। বহু জায়গায় পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙা হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। বিক্ষোভকারীদের একাংশ ঐতিহাসিক লালকেল্লায় ঢুকে পড়েন। ‘নিশান সাহিব’ নামে একটি ধর্মীয় পতাকা তাঁরা লালকেল্লায় উড়িয়ে দেন। লালকেল্লার অভ্যন্তরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে তাড়া করেন। সব মিলিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। লালকেল্লা চত্বরেই এক বিক্ষোভকারী কৃষকের মৃত্যুরও খবর আসে।
বস্তুত আর ক’মাসের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশ সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছে এই সময় কৃষক আন্দোলনের বড় প্রভাব পড়তে পারে আসন্ন নির্বাচনে। কৃষক সমাজের ভোট হারানোর ভয়ও রয়েছে। তাই সরকার এখন কী পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার।
সূত্র: দ্য ওয়াল